Tranding

03:59 PM - 01 Dec 2025

Home / Other Districts / দেড়শ বছরের বাজারে ১৩০০ দোকান প্রায় পুরোটাই পুড়ে ছাই, দমকলের দেরী? আতঙ্কে এলাকা

দেড়শ বছরের বাজারে ১৩০০ দোকান প্রায় পুরোটাই পুড়ে ছাই, দমকলের দেরী? আতঙ্কে এলাকা

দেড়শ বছরের বাজারে ১৩০০ দোকান প্রায় পুরোটাই পুড়ে ছাই, দমকলের দেরী? আতঙ্কে এলাকা

দেড়শ বছরের বাজারে ১৩০০ দোকান প্রায় পুরোটাই পুড়ে ছাই, দমকলের দেরী? আতঙ্কে এলাকা


 17 Jun 2025


ভয়ংকর! ভোর রাতের বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছারখার খিদিরপুর বাজারের  প্রায় সাড়ে ৬০০ দোকান। বাজারের বাকি আরও প্রায় ৪০০ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত। কী থেকে এই ভয়ংকর আগুন (Khidirpur Fire), তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। ভোর ৪টে নাগাদ মেয়র এবং স্থানীয় বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম  স্পটে গিয়েছিলেন।

ব্রিটিশ আমলে, প্রায় দেড়শো বছর আগে সেন্ট থমাস চার্চের গায়ে এই বাজার তৈরি হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সেই বাজারের বহর। পুরনো বাজারকে ঘিরে ক্রমশ আয়তনে বেড়েছে হালের বাজারের চেহারা। তবে পরিকাঠামো সেই তুলনায় আধুনিক হয়নি। ফলে, ঘিঞ্জি অপরিসর গলি এবং তস্য গলিতে সর্পিল ভাবে বেড়ে উঠেছে খিদিরপুর বাজার। 

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ

আর এহেন ঘিঞ্জি বাজারে ঢুকে আগুন নেভাতে কালঘাম ছুটে যায় দমকলকর্মীদের। তা ছাড়া দমকলের বিরুদ্ধে দেরিতে আসার অভিযোগও উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে কম সংখ্যক ইঞ্জিন নিয়ে আসা এবং কম জল নিয়ে আসার মতো বিষয়েরও। এই সব বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। 

 দমকলের গাফিলতি?

যদিও দমকলের পালটা দাবি, বিভিন্ন ফায়ার স্টেশন থেকে একে একে গাড়ি এসেছে। এতে টেকনিক্যাল টাইম বেশি লেগেছে। এরপর অপরিসর গলির মধ্যে দমকলের গাড়ি বাজারের মূল আগুন লাগার জায়গাগুলিতে পৌঁছতে পারেনি। অবস্থা সামাল দিতে জলের হোস পাইপের লুপ তৈরি করে কাজ করে দমকল। ফলে আগুনের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

 খিদিরপুরে আতঙ্ক 

আগুনের জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। খিদিরপুর এলাকার আকাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কমে আসে দৃশ্যমানতা। গ্রাউন্ড জিরোয় ঢুকে দেখা যায় পরিস্থিতি ভয়াবহ। এক দোকানের দেয়াল অন্য দোকানের উপর ভেঙে পড়ে দাউ দাউ করে জ্বলছে। প্রায় ১০০ বছরের দোকান সব। 

মোট দোকান ১৩০০টি। ভস্মীভূত প্রায় ৬০০। বাইরের দিকে মুখ করে থাকা দোকান বাদ দিলে ভিতরের প্রায় গোটা বাজারটাই পুড়ে ছাই। সামনের দিকে দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্য। দূরে সেন্ট থমাস চার্চের চূড়া ছাড়া বাকি আর কিছুই দৃশ্যমান নয়।

বিপুল ক্ষতি

সর্বস্ব হারিয়ে আকুল কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দোকানদারেরা। ভোজ্যতেলের দোকানের এক মালিক বলেন, তাঁর প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মতো লোকসান হয়েছে। সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। আর এক ব্যবসায়ী জানান, তাঁর দোকানে পঞ্চাশ লক্ষ টাকার জিনিস ছিল, ৫ লক্ষ টাকা ক্যাশ ছিল। আগুনে পুড়ে সব কিছু হারিয়ে তিনি সর্বস্বান্ত! ঠিক সময়ে দমকল এলে এই ক্ষতি হত না বলে তাঁর অভিযোগ। পুলিসের বিরুদ্ধে তাঁর এবং ব্যবসায়ীদের সকলেরই তীব্র অভিযোগ। দমকলের গাফিলতির অভিযোগও করছেন তাঁরা। 

পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সোমবার ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেন তিনি। খিদিরপুরে যাঁদের দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে, আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ হাজার টাকা করে দেবে সরকার। দোকানদারদের জন্য নতুন মার্কেটও তৈরি করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিকে বিক্ষোভ হচ্ছে প্রচুর। স্থানীয়দের দাবি, দমকল এসেছে প্রায় ২ ঘণ্টা পর। এমনকী ফোনও তোলেনি ওয়াটগঞ্জ থানা। কেউ কেউ আবার বলছেন, 'প্ল্যানিং' করে আগুন লাগানো হয়েছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিপূরণ ঘোষণার পরও আশ্বস্ত হলেন না একাংশ ব্যবসায়ী। কেউ বললেন, 'টাকা দিচ্ছেন নাকি ভিক্ষা দিচ্ছেন?' আবার কেউ অস্থায়ী দোকান নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন। নতুন করে মার্কেট তৈরির জন্য আপাতত অন্যত্র বাজার সরানোর কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ব্যবসায়ীরা জায়গা ছাড়তে নারাজ। 

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে গত ৬ মাসে খাস কলকাতা শহরে মোট ১০টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটল!

Your Opinion

We hate spam as much as you do