গত আম্ফান ঝড়ে সমস্ত স্বরূপনগর বিধ্বস্ত হয়েছিল। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে সাহায্য ঘোষনা হয়েছে তা পান নি হাজার হাজার সর্বহারা পাননি। ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সমস্ত অঞ্চল। এটা সবাই জানে বামপন্থীদের নেতৃত্বেই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের নিয়ে বিক্ষোভ হয়
স্বরূপনগরে বাম প্রার্থী বিশ্বজিতের প্রতি আস্থা বাড়ছে। বিরুদ্ধে বীণা ও বৃন্দাবন
সীমান্তবর্তী স্বরূপনগর তফশিলি বিধানসভা । ইছামতির গা ঘেঁষে এই অঞ্চল মোট ১২টা গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে । এ বছর এই কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী আইনজীবী বিশ্বজিত মন্ডল। বিশ্বজিত তার সমর্থকদের নিয়ে ,৩৪১ টা বুথ চষে বেড়াচ্ছেন । প্রথমে হেঁটে দুবার , তারপর রোড শো হচ্ছে । প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন বিশ্বজিতের প্রতি সাড়া কিছু নতুন ইঙ্গিত দিচ্ছে । গত লোকসভা নির্বাচনে মানুষের মধ্যে বামপন্থী প্রার্থী সম্পর্কে যে উদাসীনতা লক্ষ করা গিয়েছিল তা এখন নেই। যথেষ্ট উৎসাহ লক্ষ করা যাচ্ছে । আসলে গত আম্ফান ঝড়ে সমস্ত স্বরূপনগর বিধ্বস্ত হয়েছিল। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে সাহায্য ঘোষনা হয়েছে তা পান নি হাজার হাজার সর্বহারা পাননি। ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সমস্ত অঞ্চল। এটা সবাই জানে বামপন্থীদের নেতৃত্বেই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের নিয়ে বিক্ষোভ হয়। বিডিও অফিস ঘেরাও করা হয়। জনতা মারমুখী হয়ে ওঠে। তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠে। এবং সাহায্যপ্রাপ্তদের গোপন তালিকা সবার কাছে প্রকাশ করা হয় । এই চুড়ান্ত অব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষকে সংঘবদ্ধ করে দাবী আদায়ের চেষ্টা হয়েছে। ওয়াকিবহামহলের ধারনা এর ফলে বামপন্থীদের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরেছে। মানুষ ভেবেছেন এরাই কিছূ ব্যবস্থা করতে পারে।
এখানে তৃণমূল প্রার্থী বিধায়ক ও উত্তর
২৪ পরগনা জেলাপরিষদের সভাধিপতি বীনা মন্ডল। বীণার ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের অভিযোগ আছে। তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ আছে।
গরু পাচারে শাসকদলের যোগের অভিযোগ ও প্রচুর বেআইনি অর্থ উপার্জনের অভিযোগ সর্বজনবিদিত । আবার এদের এক অংশ বিজেপিতে যুক্ত হয়েছে দেখা গেছে।
বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন বৃন্দাবন সরকার। বিজেপির যথেষ্ট সংগঠন না থাকার ফলে তারা সব বুথে এজেন্ট দিতে পারবে না বলে সকলের ধারনা। গত বছর দুয়েক আগে সাম্প্রদায়িক সমস্যায় পড়েছিল স্বরূপনগর বাদুরিয়ার মানুষ।বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা এই সমস্যাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। এমনকি সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ার ফলে ওপার বাংলা থেকে এসে অশান্তির অভিযোগ ছিল। যদিও এই চক্রান্তকে প্রতিহত করেছে সাধারণ মানুষ যারা বছরের পর বছর পাশাপাশি বসবাস করছেন ।
এলাকার বৃহত্তম সমস্যা ইছামতি নদীর বাঁশের ব্রীজের সংস্কার। এই সেতু দিয়ে ভারী কোনো সামগ্রী বা গাড়ি যেতে পারে না। একপারে ৮ অন্যপারে ৪টি পঞ্চায়েত । সবচেয়ে অসুবিধা ব্লক ও বিডিও অফিসে যেতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যায়। সেতু ছাড়া ঘুরে প্রায় ২০কিমি যেতে হয়।
২০১০ সালে ১০কোটি টাকা বরাদ্দের কথা হলেও তৃণমূল সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয় নি।
বিএসএফ এর সীমান্তে সাধারন মানুষের প্রতি হয়রানির অভিযোগ আছে। আলোচনার মাধ্যমে এর প্রতিকার সরকারি ভাবে করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে।
বারাসাত থেকে সীমান্তে বালতি পর্যন্ত বাস পরিবহন নবাবকাটি পর্যন্ত করার ফলে বালতি বাজারে স্টপেজ করায় বালতি থেকে নিত্যানন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষকে প্রায় ৪মাইল পথ এসে তবে বাস ধরতে হয় । যা অত্যন্ত কষ্টকর। অবিলম্বে বাস স্টপেজ আরো ৪মাইল বাড়তি নিয়ে যাওয়ার দাবী জোরালো হচ্ছে ।
মোটের ওপর এইসব দাবী বিশ্বজিতকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। সংযুক্ত মোর্চায় আইএসএফ এর অবস্থানে প্রান্তিক মানুষ ক্রমশ মোর্চাকে সমর্থন করছেন ।
অনেকেই আশা করছেন আম্ফান ঝড় বিধ্বস্ত বিপুল মানুষের পাশে দুঃসময়ে দাঁড়ানোর ফল পাবেন বামপন্থীরা। বিশ্বজিত তার ইঙ্গিত পাচ্ছেন।
সুত্র - সন্দীপ সরকার
We hate spam as much as you do