শনিবার দুপুরে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। শনিবার তাঁদের কর্মসূচিতে অবশ্য খুব বেশি মানুষের অংশগ্রহণ ছিল না। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে না-পারা সিবিআইয়ের ব্যর্থতা। পরে মিছিল থেকে আট জনের একটি প্রতিনিধিদল সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে গিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন।
CBI ব্যর্থ ! জবাব চেয়ে CGO পর্যন্ত মিছিল জুনিয়র ডাক্তারদের, পথে বাম -কংগ্রেসও
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। তাই আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় জামিন পেয়ে যান ওই হাসপাতালেরই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধে খুন এবং ধর্ষণের মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল। সন্দীপদের জামিন পাওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই ‘হতাশা’র কথা জানান নির্যাতিতার বাবা-মা। হতাশার কথা গোপন করেননি আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরাও। শুক্রবারই ফের রাস্তায় নেমে লড়াইয়ের ডাক দেয় চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন।
শনিবার দুপুরে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। শনিবার তাঁদের কর্মসূচিতে অবশ্য খুব বেশি মানুষের অংশগ্রহণ ছিল না। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে না-পারা সিবিআইয়ের ব্যর্থতা। পরে মিছিল থেকে আট জনের একটি প্রতিনিধিদল সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে গিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন। সিজিও থেকে বেরিয়ে প্রতিনিধি দলের এক সদস্য বলেন, “আমরা তদন্তকারী অফিসারকে বললাম, আর কত দিন লাগবে? উনি বললেন, ৯০ দিন যথেষ্ট নয়। আরও সময় লাগবে। আমরা এ-ও জিজ্ঞাসা করি কোনও আঁতাঁত হয়েছে কি না। স্বাভাবিক ভাবেই তদন্তকারী অফিসার বললেন, তেমন কিছু নয়। বরং সিবিআইয়ের উপর ভরসা রাখতে বললেন।”
মিছিলে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, “কালকের (শুক্রবার) ঘটনা প্রমাণ করে দিল, আমরা রাস্তায় না-থাকলে বিচার ব্যবস্থা আস্তে আস্তে প্রহসনে পরিণত হবে।” একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, “৯০ দিনেও সিবিআই চার্জশিট পেশ করতে পারল না? যদি না-ই পারবে, তবে গ্রেফতার করল কেন?”
চিকিৎসকদের মিছিল যখন সিজিও কমপ্লেক্সের দিকে এগোচ্ছে, সেই সময় অভয়া মঞ্চের ডাকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে গণজমায়েত শুরু হয়। প্রতিবাদীদের কয়েক জনের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। শনিবার সকালেই সন্দীপ এবং অভিজিতের জামিনের প্রতিবাদে নিজ়াম প্যালেসে সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময়েও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের একপ্রস্ত ধস্তাধস্তি হয়।
সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ‘সেটিং’ করে চলার অভিযোগ তুলে শনিবার পথে নামে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। দুপুরে কলেজ স্ট্রিটের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে স্লোগান ওঠে, “তিলোত্তমা ভেবো না, সেটিং হতে দেব না।” বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘রাজ্য-কেন্দ্র বোঝাপড়ায়’ সন্দীপ-অভিজিতের মতো ‘অপরাধীদের’ নিস্তার দেওয়া চলবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। সকালের দিকে সন্দীপদের জামিনের প্রতিবাদে করুণাময়ী চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসিআই-ও। প্রতিবাদ কর্মসূচি অবশ্য এখানেই শেষ হচ্ছে না। রবিবার পথে নামতে চলেছে চিকিৎসক সংগঠন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’।
শুক্রবার সিবিআই আদালতে ছিল আরজি করে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানি। এই মামলায় একটি চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। শুক্রবার সন্দীপ এবং অভিজিতের গ্রেফতারির ৯০ দিনের মাথায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। আদালতে সিবিআই জানায়, এই মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে ধৃত সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ। তারা চার্জশিট দিচ্ছে না। তাই আদালতকে আইন মেনে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে বলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। আদালত দু’হাজার টাকার বন্ডে দু’জনকে জামিন দেয়।
We hate spam as much as you do