Tranding

12:38 PM - 01 Dec 2025

Home / North 24 Parganas / চৌত্রিশ বছরে বার্ধক্য ভাতা? বাদুরিয়া পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতির অভিযোগ

চৌত্রিশ বছরে বার্ধক্য ভাতা? বাদুরিয়া পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতির অভিযোগ

লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে যাওয়া নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল বাদুড়িয়ায়।প্রশাসন সাফাই গাইতে গিয়ে অজুহাত হিসাবে খাড়া করেছিল যান্ত্রিক ত্রুটির তত্ত্ব।কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ২০২১সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী ৩৪ বছর বয়সে দিব্যি বার্ধক্যজনিত ভাতা(আই এফ এস সি কোড এস বি আই এন ০০০২০০৫,ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নং ৩১৯৮৩২৭৬১৩০) এ ঢুকিয়ে নিচ্ছেন

চৌত্রিশ বছরে বার্ধক্য ভাতা? বাদুরিয়া পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতির অভিযোগ

সবিতা পাল -- রামচন্দ্রপুর

 

চৌত্রিশ বছরে বার্ধক্য ভাতা? বাদুরিয়া পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতির অভিযোগ

 

নিজস্ব সংবাদদাতা:বসিরহাট, ১০জানুয়ারি-  শ 'য়ে  শ'য়ে ষাটোর্ধ্বরা বার্ধক্যভাতা থেকে যোজনখানিক মাইল দূরে।ক্ষমতার বলে চৌত্রিশের তরতাজা যুবক দিব্যি পেয়ে যাচ্ছে বার্ধক্যজনিত সরকারি ভাতা।
অভিযোগ এমনই বিস্ময়কর ছবি ভেসে উঠলো তিতুমীরের মাটি বাদুড়িয়ার ক্যানভাসে।যার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে সরকারিভাবে প্রকাশিত ওএপি'র তালিকা।

 

অভিযোগ, দুর্নীতি, স্বজন-পোষনের আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে বাদুড়িয়া ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি।কোথাও উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ের মতো লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে।আবার কোথাও সরকারি নিয়ম বহির্ভূতভাবে পঞ্চায়েত সদস্য মাসের পর মাস ঘরে তুলছেন বার্ধক্য ভাতার টাকা।প্রকৃত উপভোক্তারা এদোর ওদোর ঘুরেই ফিরে সার।

 

লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে যাওয়া নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল বাদুড়িয়ায়।প্রশাসন সাফাই গাইতে গিয়ে অজুহাত হিসাবে খাড়া করেছিল যান্ত্রিক ত্রুটির  তত্ত্ব।কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ২০২১সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী ৩৪ বছর বয়সে দিব্যি বার্ধক্যজনিত ভাতা(আই এফ এস সি কোড এস বি আই এন ০০০২০০৫,ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নং ৩১৯৮৩২৭৬১৩০) এ ঢুকিয়ে নিচ্ছেন স্বয়ং তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল সাদেক সরদার।বাদুড়িয়া ব্লকের ও এ পি'র তালিকা বলছে সেই কথা।অথচ ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বুথে বসবাসকারী দিনদরিদ্র ছায়েরা বিবি (৮৫) নূরনিহার বিবি (৭৭) , মর্জিনা বিবি (৭৭) , মঞ্জিলা বিবি (৭৭) ,মোমেনা বিবি (৬৭) ,ছামছুর রহমান মণ্ডল (৬৭),সামছুল মণ্ডল (৭১) ,সাহাজাত মণ্ডল(৬৮),মোর্তজা মণ্ডল (৮২) সহ শতাধিক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের নাম নেই তালিকায়।তারা বঞ্চিত বার্ধক্যজনিত ভাতা থেকে।যদিও পঞ্চায়েত সদস্যের বাবা আবদুল গফ্ফর সরদার ষাট পেড়িয়ে এসে দিব্যি ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন ছেলে পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার সুবাদে।ফোনে যোগাযোগ করা হলে

পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল সাদেক সরদার বলেন অসম্ভব। যদি আমার নাম তালিকাভুক্ত হয়ে থাকে তা ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে।আমার বয়স এখন ৩৪ বছর কয়েক মাস।আমি বার্ধক্যভাতা পাওয়ার যোগ্য নই।সাফাই গাইতে গিয়ে এও বলে ফেললেন, তেমনটা হয়ে থাকলে টাকা ফেরত দেবেন।বাদুড়িয়া ব্লকের চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৭ নং বুথের বাসিন্দা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল সাদেক সরদার। মেম্বার বার্ধক্যভাতা পাচ্ছে।এই খবর গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই প্রকৃত উপভোক্তারা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন।তারা এই অন্যায়ের বিচার চাইছেন।কে বিচার করবে?উঠছে প্রশ্ন।এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন  চন্ডিপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুশান্ত পাল। তিনি পঞ্চায়েত সদস্যদের এহেন বেআইনি কাজকে আড়াল করতে আসরে নেমে পড়েছেন উপপ্রধানে।

নানান অজুহাত খাড়া করে টেলিফোন করে তিনি সুপারভাইজারকে বলির পাঠা করতে উদ্যত হয়েছেন।তিনি বলেন গত একমাস আগে  বিষয়টি আমাদের নজরে আসে।৭-৮মাস অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে।যা আমরা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।কীভাবে এই অন্যায় কাজ হলো তা তদন্ত করে দেখবো।প্রশ্ন উঠছে একমাস আগে জানার পর এতদিনেও কেন টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করলেন না উপপ্রধান?পঞ্চায়েত সদস্য তিনিও বা কেন এতদিন চুপচাপ রয়েছেন?

সূত্র বলছে ৭-৮মাস নয়,পঞ্চায়েত সদস্য ১বছর ধরে বার্ধক্যভাতার টাকা পাচ্ছেন।কেন সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতি স্বজন-পোষনের খবর বারে বারে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে উঠছে ?প্রশ্নের উত্তর জানতে বিডিও সুপর্না বিশ্বাসকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোনটি ধরেন না।

অভিযোগ, বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতিও এখন দুর্নীতি, স্বজন পোষনের আখড়া। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে বিভিন্ন প্রকল্পের দরখাস্ত নেওয়া হয়। অথচ স্বাস্থ্যসাথী, বার্ধক্যভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, তপশীলি পেনশনের আবেদনকারীদের আবেদন ফর্ম খুঁজে পাওয়া যায় না। বঞ্চিত হয় দুঃস্থ তপশীলি জাতির কাহার,দাস, বাগদি, সংখ্যালঘুদের চৌদুলী সম্প্রদায়ের মানুষ।এই বিষয়ে বি ডি ও'র কাছাকাছি অভিযোগ করলেও তিনি নির্বিকার।প্রতি সংসদে ষাটোর্ধ বহু গরীব মানুষ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বঞ্চিত।সাধের মুখ্যমন্ত্রীর বহুল বিজ্ঞাপিত প্রকল্প তৃণমূলের কর্মীরাই পাচ্ছে। প্রকৃত উপভোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।হিউম পাইপের মধ্যে বাস করেও বার্ধক্য বা বিধবা ভাতা পান না সবিতা পাল।  যার জ্বলন্ত উদাহরণ এই বাদুড়িয়ার রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা সবিতা পাল।

স্থানীয় জনগনের মত এ শুধু হিমশৈলের চূড়া মাত্র। অজস্র ঘটনায় একটার পর একটা তথ্য বেরিয়ে  আসছে বাদুড়িয়ার গ্রামগুলির আনাচ কানাচ থেকে।

 

 

Your Opinion

We hate spam as much as you do