এসটিএফ গোপনে খবর পায় নিউটাউনের সাপুরজির আবাসনে লুকিয়ে রয়েছে পাঞ্জাব থেকে আসা দুষ্কৃতীরা। তারা বেআইনি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এসটিএফের সদস্যরা ওই আবাসনে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতীদের ধরতে গেলে গুলি চালাতে শুরু করে
শান্ত নিউটাউনে এনকাউন্টার । সংঘর্ষে নিহত দুই গ্যাংস্টার।
সাধারণত সিনেমায় এমন হয়। দিনের বেলা ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি।
ঘটনাস্থল নিউটাউনের এক শান্ত অভিজাত আবাসন। মেঘলা আকাশের নিচে লক ডাউনে ঘরবন্দি মানুষ তাকিয়ে থাকলেন।
বুধবার দুপুরে এমন ঘটনাই ঘটলো নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে। মৃত্যু হল পাঞ্জাবের ২ গ্যাংস্টার। আহত হয়েছেন পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকও।
সাধারণত উত্তর ভারতে এমন ব্যাপার দেখা যায় গুলির লড়াই ও এনকাউন্টারের ঘটনা , পশ্চিমবঙ্গের এমন অভিজ্ঞতা প্রায় নেই।
এসটিএফ গোপনে খবর পায় নিউটাউনের সাপুরজির আবাসনে লুকিয়ে রয়েছে পাঞ্জাব থেকে আসা দুষ্কৃতীরা। তারা বেআইনি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এসটিএফের সদস্যরা ওই আবাসনে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতীদের ধরতে গেলে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের জওয়ানদের এগোতে দেখেই আবাসনের ঘরের ভিতর থেকে গুলি চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। ৯ এমএম পিস্তল থেকে চলে গুলি। তা সত্ত্বেও এগিয়ে যায় পুলিশ। আর তখনই দুষ্কৃতীদের গুলিতে আহত হন এসটিএফের ওসি (এক্সপ্লোসিভ) কার্তিক ঘোষ। পুলিশ চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলায় পালানোর পথ পায়নি দুষ্কৃতীরা। মরিয়া হয়ে গুলি চালাতে থাকে তারা। পুলিশ বুঝে যায়, শুধু সাধারণ বন্দুক নয়, আরও অনেক অস্ত্র আছে তাদের কাছে। তখনই পুলিশ পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে। আর তাতেই মৃত্যু হয় দুই দুষ্কৃতীর।
গত ৬ ই জুন রাজ্য পুলিশের এসটিএফ আধিকারিকরা বীরভূমের সিউড়ি থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করে। তদন্তে নেমে জানা যায় বিহার থেকে বেআইনি ভাবে আনা হচ্ছিল ওই অস্ত্র। সেই সূত্র ধরেই পাঞ্জাবের গ্যাংস্টারদের খোঁজ পায় পুলিশ। নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে তারা লুকিয়ে আছে বলে খবর আসে। সেইমতো এদিন বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ সাপুরজি আবাসনের বি ১৫৪ নম্বর বিল্ডিং-এর নীচে হাজির হন ১০-১২ জন এসটিএফ আধিকারিক।
এসটিএফ আধিকারিকদের দেখেই গুলি ছুড়তে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতে দুই দুষ্কৃতীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এদের মধ্যে একজনের নাম জয়পাল ধুল্লা, আরেকজন জসপিত জস্সি। দুজনেই পঞ্জাবের বাসিন্দা। তারা এই আবাসনে কতদিন ধরে বসবাস করছেন তা খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ ।
ভরদুপুরে এভাবে গুলি চালানোর ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কিত সাপুরজির আবাসিকরা। আবাসনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। কারা আবাসনে থাকছেন সেই নিয়ে কোনও তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে নেই বলেও অভিযোগ তুলেছেন আবাসিকরা। এদিকে পুলিশের অভিযানের কথা দুই গ্যাংস্টার আগে থেকে জানত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে। কারণ পুলিশকে দেখেই গুলি চালাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। আবাসনে আর কোনও গ্যাংস্টার লুকিয়ে রয়েছে কিনা তা তল্লাশি করে দেখা হচ্ছে। এদিকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার। ছিলেন এডিজি এসটিএফ। আবাসন থেকে কিছু অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বিধাননগর কমিশনারেটের কমিশনার সুপ্রতিম সরকার। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘিরে রেখেছে ওই আবাসনকে। নামানো হয়েছে র্যাফ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্য়ায়।
We hate spam as much as you do