থানায় আটক করে রাখা একটি টাটা ৪০৭ গাড়ি যার নং ডব্লিউ বি ২৩ ই-৭৭২১।এই গাড়িতে সাদা প্লাস্টিকের বস্তা বোঝাই ত্রান সামগ্রী।বস্তার গায়ে বিশ্ব বাংলার লোগো দেওয়া।তার মধ্যে লেখা পশ্চিমবঙ্গ সরকার।নিচে লেখা বিপর্যয় ব্যবস্হাপন ও অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর।তারিখ উল্লেখ করা আছে ১১.১১.২০১৯।অর্থাৎ মনে হচ্ছে বুলবুল ঝড়ের ত্রাণ।এমনটাই অনুমান গ্রামবাসীদের
দুবছর আগের ত্রাণ পাচার বসিরহাটে ? গ্রামবাসীদের সন্দেহ
সরকারি ত্রাণ রাতের অন্ধকারে পাচার করার সময় ধরে ফেলে নৈশ প্রহরীরা।জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে।শেষে গাড়ির চালক সহ খালাসি এবং ত্রাণ বোঝাই পাঁচটি টাটা৪০৭গাড়ি তুলে দেওয়ার হয় পুলিশের হাতে।পুলিশ মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট পুলিশ জেলার অধীন মাটিয়া থানার মালতিপুর গ্রামে।
সরকারি এই ত্রাণ পাচারের ঘটনায় পুলিশ ও গ্রামবাসীদের বক্তব্যে উঠে বিস্তর অসঙ্গতি।
ঘটনার বিবরন জানতে ফোন করা হয় মাটিয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত আধিকারীকের কাছে। তিনি বলেন পাচার করার সময় একটি গাড়ি বোঝাই ত্রাণ মালতিপুর বাজারে কর্তব্যরত নাইট গার্ডরা ধরে ফেলে এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়
"আমরা কেস করে দিয়েছি।তদন্ত শুরু হয়েছে।কেউ গ্রেফতার হয় নি।গাড়ির চালক খালাসি পলাতক।"
পুলিশের এই বক্তব্য শুনে গ্রামবাসীরা জানায় পুলিশ ডাহা মিথ্যা কথা বলছে।সরকারি ত্রাণ বোঝাই পাঁচটি গাড়ি চালক খালাসি সহ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই।কোথায় গেল বাকি চারটি ত্রাণ বোঝাই চারটি গাড়ি?তাহলে কী এই পাচারের সাথে পুলিশ প্রশাসন জড়িত? এই সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকেই ।
থানায় আটক করে রাখা একটি টাটা ৪০৭ গাড়ি যার নং ডব্লিউ বি ২৩ ই-৭৭২১।এই গাড়িতে সাদা প্লাস্টিকের বস্তা বোঝাই ত্রান সামগ্রী।বস্তার গায়ে বিশ্ব বাংলার লোগো দেওয়া।তার মধ্যে লেখা পশ্চিমবঙ্গ সরকার।নিচে লেখা বিপর্যয় ব্যবস্হাপন ও অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর।তারিখ উল্লেখ করা আছে ১১.১১.২০১৯।অর্থাৎ মনে হচ্ছে বুলবুল ঝড়ের ত্রাণ।এমনটাই অনুমান গ্রামবাসীদের।তবে দুবছর আগের বিপুল পরিমানের এত সরকারি ত্রাণ ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত মানুষকে না দিয়ে কারা মজুত করে রেখেছিল?লকডাউনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে কারাই বা এগুলি রাতের অন্ধকারে পাচার করে দিচ্ছে?পুলিশ বা কেন পাঁচ গাড়ির পরিবর্তে এক গাড়ি দেখাচ্ছে?কী রহস্য?পুলিশ না। রহস্য উদঘাটনে
গ্রামবাসীরাই নেমে পড়ে।তারা জানতে পারে ঘোড়ারাস কুলিন গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সহ শাসক দলের স্থানীয় নেতারা এই কাজে জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা ।চৈতা পঞ্চায়েতের মালতিপুর ব্রিজের কাছে যে বাড়ি থেকে ত্রাণের বস্তাগুলি গাড়ি বোঝাই করা হচ্ছিল সেটি ওই বাহার আলি মণ্ডলের বাড়ি। যদিও সম্প্রতি বাড়িটি ওই উপপ্রধানের অধীনে বলে জানা যায় ।তিনি বাড়িটি কিনেও থাকতে পারেন। উপপ্রধান সাম্বিল থাকেন ঘোড়ারাস কুলিন গ্রামে।মালতিপুর স্টেশন সংলগ্ন মনিরুল ইসলামের বাড়ি থেকে বাকি চারটি গাড়িতে ত্রাণ বোঝাই করা হয়।এই মনিরুল ওরফে ছট্টু বসিরহাট-২নং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্তের কর্মাধ্যক্ষ সোমেন মন্ডল ও তৃণমূল নেতা রনদেব মল্লিকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী। প্রত্যক্ষদর্শীদের মত গোটা ঘটনায় শাসক দলের সদস্যদের যে যোগ স্পষ্ট তা পরিস্কার হয়েছে গ্রামবাসীদের কাছে।
উল্লেখ্য গত২০১৯সালে ঝড়ের পরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বুলবুল বিধ্বস্ত বসিরহাট মহকুমা ঘুরে দেখেন এবং ওই দিন বসিরহাট-১নং ব্লকের মেরুদন্ডী স্লুইস গেটের কাছে কর্মতীর্থে প্রশাসনিক সভা করেন।ঝড় বিধ্বস্ত মানুষকে এই বস্তা বোঝাই কিটের কথা বলেন।যাতে থাকবে অ্যালুমিনিয়মের হাড়ি,থালা,গ্লাস সহ বিভিন্ন বাসনপত্র, হ্যারিকেন, জারে কেরোসিন তেল ইত্যাদি। এদিন গ্রামবাসীদের ধরে ফেলা বস্তা বন্দি ত্রাণ এবং সাল তারিখ দেখে দেখে মিলে গেল মুখ্যমন্ত্রীর গত দুবছর আগের কথার সাথে। এগুলি বুলবুল ঝড় পরবর্তীতে মানুষকে দেওয়ার সরকারি ত্রাণ হওয়ারই সম্ভাবনা । যা সেই সময় না দিয়ে মজুত করা হয়েছিল বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে। আর এই কাজে পুলিশের প্রচ্ছন্ন মদত থাকার বিষয় গ্রামবাসীদের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় ।
গ্রামবাসীরা সঠিক তদন্তের দাবী জানায় ।
We hate spam as much as you do