তথ্য বলছে, বসিরহাট মহকুমায় মোট পরিযায়ী শ্রমিক এসেছিল ২৯ হাজার ৩৮৬ জন। তার মধ্যে ১০টি ব্লকে গড়ে কাজ পেয়েছেন ৭৫ থেকে ১০০ জন। এত কথা উন্নয়নের। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের রাজনীতির বিতর্কের মধ্যে বসিরহাটের কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। ভোটের আগে এত সব কথা , কিন্তু রোজগার হারানো মানুষের কি হবে
ভোটের ডামাডোলে চাপা পড়ে দারিদ্র ।
ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের আজও রোজগার নেই।।
২০২০ সালে করোনা মহামারির জেরে ত্রস্ত হয়ে উঠেছিল সারা বিশ্ব। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউনে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতির। রুজিরোজগার হারিয়ে ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ফিরে এসেছেন বহু শ্রমিক। তাঁদের সবার কর্মসংস্থান করতে একশো দিনের কাজের মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বিশেষ জোর দেওয়ার কথা শোনা গিয়েছে । বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কপর্দকশূন্য হয়ে বাড়ি ফেরা বসিরহাটের বহু পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ। কাজের অভাবে দু’বেলা পেট ভরে খাবার পাওয়া তো দূর অস্ত, কচুপাতা, শাকপাতা সেদ্ধ খেয়ে কোনওভাবে দিন কাটছে এলাকার বহু শ্রমিক পরিবারে এমন খবর পাওয়া গেছে।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার বসিরহাট দক্ষিণ, বসিরহাট উত্তর, হিঙ্গলগঞ্জ সহ বহু বিধানসভা এলাকা থেকে বহু মানুষ কাজের খোঁজে পা বাড়িয়েছিল ভিন রাজ্যে। কিন্তু করোনা মহামারীতে সারা দেশে লকডাউন জারির প্রেক্ষিতে বহু বেসরকারি ক্ষেত্র বন্ধ হয়ে যায়। আচমকা কাজ হারিয়ে বহু পরিযায়ী শ্রমিক কষ্ট-যন্ত্রণা অতিক্রম করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তারপর থেকে শুরু হয় আরেক জীবন-যুদ্ধ। সঞ্চিত অর্থে দিন গুজরান করতে করতে একসময়ে সেটাও শেষ হয়ে যায়।
এদিকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত কোন কাজ না পাওয়ায় বসিরহাটের এই শ্রমিকরা যখন দিল্লি, মুম্বই ইত্যাদি শহরে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন সেখানেও বাধ সেধেছে দারিদ্র। ভিন রাজ্যে ফিরতে গেলেও যে টাকা লাগবে সেটাও তাঁদের হাতে নেই। এদিকে সুদ দিয়ে মহাজনদের কাছে টাকা ধার করতে গেলেও
টাকা পাচ্ছেন না। কারন শোধ দেবার নিশ্চয়তা নেই । তাদের সামনে কোনো ব্যাঙ্ক নেই , জনধন একাউন্ট্ নেই , তাই তাদের কেউ ধার দেয় না।
কিন্তু প্রশ্ন এসবের মধ্যে এখন রেশন থেকে পাওয়া সামান্য চাল-গম আর বন-বাদাড় থেকে তোলা কচুপাতা ও শাকপাতা সিদ্ধ করে পেট ভরাচ্ছেন এই শ্রমিক পরিবারগুলি।
এদিকে তথ্য বলছে, বসিরহাট মহকুমায় মোট পরিযায়ী শ্রমিক এসেছিল ২৯ হাজার ৩৮৬ জন। তার মধ্যে ১০টি ব্লকে গড়ে কাজ পেয়েছেন ৭৫ থেকে ১০০ জন। এত কথা উন্নয়নের। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের রাজনীতির বিতর্কের মধ্যে বসিরহাটের কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। ভোটের আগে এত সব কথা , কিন্তু রোজগার হারানো মানুষের কি হবে ?
এদিকে ইস্তাহার প্রকাশকালে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন রাজ্যের সব পরিযায়ী কাজ হারানো শ্রমিকদের খাদ্য , অর্থের ব্যবস্থা রাজ্য সরকার করেছে। কিন্তু বাস্তবতার সাথে এর মিল লক্ষ করা যাচ্ছে না বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা।
ছবি- আনন্দবাজার পত্রিকা
We hate spam as much as you do