মিছিলের মূল স্লোগান ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরুপাচার, কয়লাপাচার কেলেঙ্কারির তদন্তে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত করার দাবিতে পথে নেমেছেন বাম সমর্থকরা। পাশাপাশি যাঁরা-যাঁরা এখনও অধরা তাঁদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করার দাবিও তুলেছেন।
রাজপথ লালঝান্ডার দখলে, পুলিশি অনুমতি ছাড়াই দুর্নীতির প্রতিবাদে CGO অভিযান বামেদের
Sep 09, 2022
রাজপথে বামফ্রন্ট। বেশ কিছুদিন ধরে শুধু দূর্নীতি নয় আনিস খানের হত্যার অভিযোগ থেকে বীরভূমে বগটুই এ আগুনে পুড়িয়ে গনহত্যার ঘটনা, সরকারি কর্মচারীদের ডিএ এবং এই সময়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এস এস সি, টেট এ চাকরীর নিয়োগের চুড়ান্ত অনিয়ম দূর্নীতিতে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সরব বামপন্থীরাই। শেষমেষ এল পার্থ - অনুব্রতর বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ। এই সব দাবী নিয়েই ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’ স্লোগান তুলে শুক্রবার পথে নেমেছে বামফ্রন্ট। সিজিও কম্পপ্লেক্স অভিযানের জেরে রাস্তায় নেমেছে তাঁরা। চলেছে মিছিল। যদিও এই বিক্ষোভের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। আর ভিড় উপচে পড়েছে।
মিছিলের মূল স্লোগান ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরুপাচার, কয়লাপাচার কেলেঙ্কারির তদন্তে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত করার দাবিতে পথে নেমেছেন বাম সমর্থকরা। পাশাপাশি যাঁরা-যাঁরা এখনও অধরা তাঁদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করার দাবিও তুলেছেন।
আজ শুক্রবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (যেখানে ইডির দফতর) অভিযানের মঞ্চ থেকেই তৃণমূল সরকারকে রুখে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন বিমান-সূর্যরা।
নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে এই মঞ্চ থেকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের উপর হামলা চালানো হচ্ছে সরকারি কায়দায়। যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। আমাদের শপথ নিতে হবে, গণতন্ত্রকে হত্যা করতে দেব না।’’ বিমানের কথায়, ‘‘সভা বানচাল করতে পুলিশের লোকেরা দৌরাত্ম্য করেছে।’’
তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্রও। দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তরা জেলে যাবেন। তৃণমূলের যাঁদের ধরা হয়েছে, তাঁদের ছেড়ে দিতে কত ক্ষণ লাগবে জানি না। চোর ধরো, জেল ভরো করে শুধু হবে না। লুটের টাকা ফেরত দিতে হবে।’’ তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই বলেও বিঁধেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কে কখন তৃণমূলে, কে কখন বিজেপিতে, পার্থক্য করা যাবে না। সবাইকে একজোট হয়ে লড়তে হবে।’’ বিজেপিকে বিচ্ছিন্ন করারও ডাক দিয়েছেন সূর্যকান্ত। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘকে (আরএসএস) মুখ্যমন্ত্রীর ‘এত খারাপ নয়’ মন্তব্য নিয়েও শুক্রবার সরব হন সূর্য। তিনি বলেন, ‘‘আরএসএস ওঁকে মা দুর্গা বলেছিল, আর উনি সার্টিফিকেট দিচ্ছেন।’’
গরু পাচার-কাণ্ডে ধৃত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ‘বীরের সম্মান দিয়ে’ ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ টেনে অনুব্রতকে বিঁধে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘চোরের মতো এসেছেন, চোরের মতো গিয়েছেন। গত কাল মমতা যা বলেছেন, তাতে তৃণমূলের সম্বর্ধনা দেওয়া উচিত ছিল।’’ বস্তুত, মঙ্গলকোটের এক মামলায় শুক্রবার সকালে আসানসোল সংশোধনাগার থেকে বিধাননগরের ওই আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে। পরে এই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন কেষ্ট।
দুর্নীতির অভিযোগকে খাড়া করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে ভাবে বামেরা প্রতিবাদ কর্মসূচি করছে, তা রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। ক’দিন আগে শহরে এসএফআই-এর কর্মসূচিতে জন সমাবেশ এই পর্বে বাড়তি নজর কেড়েছে। বামেদের একাংশের মতে, বিজেপিকে রুখে বিরোধী মঞ্চে ধীরে ধীরে গুরুত্ব বাড়ছে তাঁদের দলের। তবে এতে ‘আত্মতুষ্ট’ না হয়ে লড়াই চালানোর যে প্রয়োজন রয়েছে, সেই বার্তাই বার বার দেওয়ার চেষ্টা করছেন বিমান-সূর্যরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘সবাইকে একজোট হয়ে লড়তে হবে।’’
We hate spam as much as you do