দোষীরা ছাড়া পেলে আর কত মায়ের কোল খালি হবে আর কত স্ত্রীর মাথা থেকে সিঁদুর মুছে যাবে কেউ জানে না।বললেন বৈশাখী সর্দার। আজ থেকে ৭-৮বছর আগে ভাদ্র মাসে আমার স্বামী দিলীপ সর্দারকে গুলি খুন করেছিল এই ভাস্কর দাস এবং তার দলবল।
সন্ন্যাসী, লক্ষীবালার খুনের পিছনে কি আদিবাসীদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ফল! নিহতর দাদার অভিযোগ
newscopes.in 22nd july
"সন্ন্যাসী সর্দার, ভবসিন্ধু মণ্ডলকে খুন করা হবে, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি যজ্ঞেশ্বর প্রামানিক জানতেন।সে কথা বিধায়ক উষারানী মণ্ডলকে জানিয়েছিলেন।গ্রামে গন্ডগোল হতে পারে।মার্ডারও হতে পারে।বিধায়ক বৃহস্পতিবার নিজে গ্রামে এসে আমাদের বললেন যজ্ঞেশ্বরের খুনের পরিকল্পনার কথা।কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা নেন নি।গ্রামে দুজন সিভিক পাঠিয়ে দায় সেরেছেন। এই খুন পরিকল্পিত খুন।বঞ্চিত আদিবাসীরা প্রতিবাদী হয়ে উঠছে।তাই তাদের নিকেশ করতেই এই খুন।তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি যজ্ঞেশ্বর প্রামানিক এবং ১২৮নং বুথের সভাপতি ভাস্কর দাসদের লুটেপুটে খাওয়ার প্রতিবাদ করতো বলেই আদিবাসীদের চুপ করাতেই সন্ন্যাসী,লক্ষ্মীবালাকে খুন হতে হলো।ভবসিন্ধু মণ্ডল আদিবাসীদের হয়ে বঞ্চনার প্রতিবাদ করতো বলে তাকেও লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল।তিনি এ যাত্রায় বেঁচে গেলেও তার কাকিমা প্রতিবাদী লক্ষ্মীবালা মণ্ডলকেও মারতে দ্বিধা করলো না ভাস্কর এবং তার দলবল।দাঁড় করিয়ে করিয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে সন্ন্যাসী সর্দার, লক্ষ্মীবালা মণ্ডলের দেহ"
বৃহস্পতিবার এমনই গুরুতর অভিযোগ করলেন মৃত সন্ন্যাসী সর্দারের দাদা গুলি বিদ্ধ গোপাল সর্দার এবং মৃত লক্ষ্মীবালা মণ্ডলের স্বামী হরেন মণ্ডল।
তাদের একটাই দাবি,খুনের বদলে খুন নয়। দোষীদের ফাঁসি চাই।গ্রামে শান্তি ফিরে আসুক।
দোষীরা ছাড়া পেলে আর কত মায়ের কোল খালি হবে আর কত স্ত্রীর মাথা থেকে সিঁদুর মুছে যাবে কেউ জানে না।বললেন বৈশাখী সর্দার। আজ থেকে ৭-৮বছর আগে ভাদ্র মাসে আমার স্বামী দিলীপ সর্দারকে গুলি খুন করেছিল এই ভাস্কর দাস এবং তার দলবল।আমার স্বামী কোন পার্টি করতো না।জমি দখলের প্রতিবাদ করেছিল।তখন ধান রোয়ার সময়।ধানের চারা মাথায় নিয়ে অন্যের জমিতে কাজে যাওয়ার পথে স্বামীটা আমার সারা শরীর গুলিতে ঝাঝরা করে দিয়েছিল ওই ভাস্কর। ঘটনার নেপথ্যে যিনি সেই মূল অভিযুক্ত যোজ্ঞেশ্বর প্রামানিক ফেরার।
যদিও ঘটনার পর ভাস্করের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বোমা বন্দুক, মদ ,গাজার বিপুল সম্ভার। মোট২১ জন গ্রেফতার হয়।অভিযুক্তদের বৃহস্পতিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়।বিচারক ভাস্কর দাস,তরুণ বারুই,ঋষিকেশ সিং,শিবচরন সর্দার, অজর বরকে ৫দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠায়।বাকি ১৬জন কে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেয়।
শ্রাবণের মেঘলা সকাল।থমথমে মিনাখাঁ বিধানসভার বাছড়া মোহনপুর।পথের বাঁকে বাঁকে মানুষের ফিসফিসানি।ট্যাংরামারি গ্রামে তৃণমূলের ছোট বড় নেতা বিধায়কদের আনাগোনা।বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের যাতায়াত।ছড়ানো ছিটানো পুলিশ, সিভিক ডলান্টিয়ারের কর্মীরা।গুলিতে নিহতদের পরিবারে থেকে থেকে কান্নার রোল।বসিরহাট জেলা হাসপাতালে সন্ন্যাসী সর্দার(৩৮),লক্ষ্মীবালা মণ্ডলের মৃতদেহ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পর তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।সেই অপেক্ষায় ট্যাংরামারি মেদে
বাঁশতলা, খোলাপাড়া।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর খোলা আকাশের নিচে মাথায়, হাতে, পায়ে,কানে, পিঠে,কোমরে অসংখ্য বন্দুকের গুলি নিয়ে অপেক্ষায় যুবক তপন সর্দার, গোপাল সর্দার,বৃদ্ধা কমলা সর্দার,গৃহবধূ শ্যামলী সর্দাররা।ওদিকে তখন অধীর আগ্রহে অনুন্নয়নের স্পষ্ট ছাপ বিছানো খোলা পাড়ার সুধীর সর্দার, রবীন সর্দার, রাহুল সর্দার, শান্তা সর্দাররা।ঘরে অসুস্থ সত্তোরোর্দ্ধ চাঁদমণি সর্দার।এখনো জানেন না তার দামাল ছেলে সন্ন্যাসী বেচেঁ নেই।জানানো হয় নি।সহ্য করতে পারবে না।অরন্ধন ঘরে ঘরে।
বছর হলো লিজের টাকা কেউ পাই না।সব লুটেপুটে খাচ্ছে ওই যজ্ঞেশ্বর, ভাস্কররা।সন্ন্যাসীরা, আমার স্ত্রী সবাই প্রতিবাদ করেছিল।গুলি করে খুন করে দিল।তৃণমূল করার মাশুল দিতে হলো।
আমরা যোজ্ঞেশ্বর ,ভাস্কর, তরুণ, অজয়,ঋষিকেশ, শিবচরনদের ফাঁসি চাই।
কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি মিঠুন সর্দার ও তার স্ত্রী গীতা সর্দার, নেপাল সর্দার, বাবলু সর্দার, কলকাতা সর্দার, মধু সর্দার।আশঙ্কায় প্রহর গুনছে ট্যাংরামারি মেদিয়াপাড়া।
আদিবাসীরা প্রকৃতই বঞ্চিত এই রাজ্যে।এদিন এমনই অভিযোগ তুললেন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চের উত্তর ২৪পরগনা জেলা সম্পাদক নিরাপদ সর্দার।তিনি ট্যাংরামারি মেদিয়াপাড়ায় তৃণমূলীদের হাতে নিহতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন।পাশাপাশি তিনি বলেন বাছড়া মোহনপুরের মেছোঘেরির শত শত বিঘা পাট্টা জমি আছে।যা বাম আমলে পেয়েছিলো আদিবাসীরা।লিজের টাকা নেয় তৃণমূলের গুণ্ডারা। আদিবাসীরা লিজের টাকা চাইতে গিয়ে ভয়, ভীতি,সন্ত্রাস ও আক্রমনের মুখে পড়ে।সন্ন্যাসী সর্দাররা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোট বাঁধার চেষ্টা করছিল।তাকে দিবালোকে খুন করা হলো। ওখানে এস সি,এস টি, মানুষের বাস।এরা একসঙ্গে জোট বেঁধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো। তৃণমূলের গুণ্ডাদের কাছে এটাই ছিল বড়ো বাধা। সেজন্য এস সি,এস টি দের মধ্যে বিভাজন করে রাখা হয়। আদিবাসীদের তাড়িয়ে দিতে পারলে পুরো লিজের টাকা তৃণমূলের গুণ্ডারাই আত্মসাৎ করবে।
এই বিভাজনের রাজনীতি করছে দিল্লির বিজেপি সরকার। ১০০দিনে কাজ(এম জি এন আর ই জি এ) এই আইন চালু করতে চাইছে।এস সি দের জন্য আলাদা বরাদ্দ, আদিবাসীদের জন্য আলাদা বরাদ্দ। আলাদা আলাদা পেমেন্ট। আইনে এই রকম কোন নিয়ম নেই। আইনে বলা আছে চাহিদা অনুযায়ী কাজ দিতে হবে।
জাতপাত করছে মানে,কোটা নির্ধারণ করবে।কোটা নির্ধারণ হলে কাজ কম পাবে।
ঠিক যেমন এই রাজ্যে বার্ধক্য ভাতা,এস সি,এস টি মহিলা পেনশন সব কোটা করে বিভাজনের রাজনীতি করছে তৃণমূলের সরকার। আদিবাসীদের উপর অত্যাচার, জুলুম,হামলা ও দুই গরীব অংশের মানুষকে বিভাজন করার রাজনীতির তীব্র বিরোধিতা করে প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সরদার বলেন ওই এলাকার মানুষ আমাদের উপর ভরসা রাখতে পারে নি। তৃণমূলকে জিতিয়েছে।এই সব মর্মান্তিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার আমাদের কাছে ফিরে আসবে। তৃণমূল, বিজেপি কখনো আদিবাসী, তফশীলদের বন্ধু হতে পারে না।
We hate spam as much as you do