জ্বালানি গ্যাসের দাম আকাশ ছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিনমজুর খেটে খাওয়া গ্রামীণ শ্রমজীবি পরিবারের গৃহবধূরা।১০০০ টাকার উপরে গ্যাসের দাম। আর সেই গ্যাস কিনে রান্না করার সামর্থ্য নেই এই গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষদের। তাই প্রতিদিন সকালবেলা সংসারের কাজ ফেলে বাড়ির গৃহবধূরা বেড়িয়ে পড়ছেন জঙ্গলের শুকনো কাঠ কুড়াতে।এ গ্রামে কাঠ না পেলে, পাশের গ্রাম।সেখানে মিললো তো ভালো।নয়তো অন্য কোন গ্রামে।মাইলের পর মাইল হেঁটে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত গৃহবধূরা এভাবেই সামলাচ্ছেন রোজকার হেঁশেল।
গ্যাসের দাম আকাশছোঁয়া! নদীর পাড়ের জঙ্গল কতদিন শুকনো কাঠের জোগান দেবে?
বসিরহাট ,২৩ জুন- গ্যাসের দাম ১০৬০টাকা।কোথায় পাবো এত টাকা?স্বামীটা বোটে কাজ করে।কতই বা পায় যে, মাসে মাসে গ্যাস কিনে চালাবো।চম্পা পাড়ুইয়ের উত্তর।আরো একধাপ এগিয়ে ফুলেশ্বরী পাড়ুইয়ের উত্তর ফ্রি গ্যাস নিয়ে মরণ হয়েছে।আগে একরকম ছিল। অভ্যাস পাল্টে মরণ হওয়ার জোগাড়।সেই কথায় বলে না "খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে,শেষে মরণ হলো এঁড়ে গরু কিনে'।আমাদের এখন সেই অবস্হা।কি করবো বাধ্য হয়ে মাঠে,আগানে-বাগানে কাঠ কুড়িয়ে চালাচ্ছি।ক'দিন চলে একদিন কাঠ কুঁড়িয়ে?বড়জোর দুদিন।বর্ষা এসে পড়েছে।চুলো আর জ্বলবে না।জানি না কী হবে?কেন্দ্রীয় সরকারের উজ্জ্বলা প্রকল্পে ফ্রি গ্যাস নিয়ে গ্রামে গ্রামে এমনই ঘটনার টুকরো ছবি ভেসে উঠলো উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা ব্লকের দেগঙ্গা -২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের তেলিয়া গ্রামের ক্যানভাসে।
জ্বালানি গ্যাসের দাম আকাশ ছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিনমজুর খেটে খাওয়া গ্রামীণ শ্রমজীবি পরিবারের গৃহবধূরা।১০০০ টাকার উপরে গ্যাসের দাম। আর সেই গ্যাস কিনে রান্না করার সামর্থ্য নেই এই গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষদের। তাই প্রতিদিন সকালবেলা সংসারের কাজ ফেলে বাড়ির গৃহবধূরা বেড়িয়ে পড়ছেন জঙ্গলের শুকনো কাঠ কুড়াতে।এ গ্রামে কাঠ না পেলে, পাশের গ্রাম।সেখানে মিললো তো ভালো।নয়তো অন্য কোন গ্রামে।মাইলের পর মাইল হেঁটে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত গৃহবধূরা এভাবেই সামলাচ্ছেন রোজকার হেঁশেল।
তারপরেও যে পেট ভরে পুষ্টিকর খাবার খেয়ে শরীরে শক্তি সঞ্চয় করবেন তারও উপায় নেই।জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া।নুন আনতে পান্তা ফুড়ানোর অবস্থা।রেশনে ফ্রি চাল গমে সারা মাস চলে না।সেই তো মোটা চাল ৪০টাকা কিলো কিনে উদর ভরাতে হয়।মাছ, মাংস,ডিম একটু দুধ কেনার ক্ষমতা নেই।কথা বলতে বলতে কাঠের বোঝা বাঁধা রেডি।ভাই আসি বলে, মাথায় করে শুকনো কাঠের বোঝা নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলেন চম্পা পাড়ুই, ফুলেশ্বরী পাড়ুইরা।তেলিয়া গ্রামের শেষ প্রান্ত কয়েক ক্রোশ দূরে বিদ্যাধরী নদীর পাড়ের জঙ্গলে তখন ভরদুপুর।শুকনো কাঠ দিয়ে একমুঠো ভাত ফুটিয়ে পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন তুলে দেবেন এই আশায় দু একদিন অন্তর গ্রামের গৃহবধূরা এভাবেই এঁকে চলেছেন জীবন যণ্ত্রনার নিদারুণ ছবি।ভরে উঠছে ক্যানভাস।কে খবর রাখে?শুকনো কাঠ কুড়াতে আসা গৃহবধূদের সাথে কথা বলে জানা গেল তাদের হেঁশেল সামলানোর এমনই ইতিবৃত্ত।কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারের কাছে তাদের দাবি জিনিসের দাম কমানোর সাথে সাথে গ্যাসের দাম কমানো হোক। যদি জ্বালানি গ্যাসের দাম কমে তাহলে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শুকনো কাঠ না কুড়িয়ে রান্নার কাজে একটু স্বস্তি মিলবে।পাশাপাশি বঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এই অসহায় গৃহবধূরা। টানা বর্ষায় কবে যে চুলোয় ফের আগুন জ্বলবে সেই আশঙ্কায় গ্রাম থেকে গ্রামান্তর।
কিন্তু নদীর পাড়ের জঙ্গল কতদিনই বা শুকনো কাঠের জোগান দেবে? পেটের দায় বড় দায়।এক সময় হাত পড়বে নদীর পাড়ের বাদাবনে।ক্ষতির মুখে পড়বে নদীবাঁধ।ধ্বংস হবে পরিবেশ।উঠছে এমনই গুরুতর কয়েকটি প্রশ্ন।প্রশ্ন তুলছেন বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা।তাহলে উপায় কী?গ্যাসের দাম কমানোই একমাত্র উপায়।
We hate spam as much as you do