Tranding

07:21 PM - 01 Dec 2025

Home / North 24 Parganas / শহীদ দিবসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন তৃণমূলের দুই কর্মী।

শহীদ দিবসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন তৃণমূলের দুই কর্মী।

বুধবার বিকাল ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাড়োয়া থানার অধীন মিনাখাঁ ব্লকের বাছড়া মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাংরামারি মেদিয়াপাড়ায়।অভিযোগ মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানী মণ্ডলের স্বামী তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের অনুগামী মোহনপুর অঞ্চল সভাপতি যোজ্ঞেশ্বর প্রামানিক গোষ্ঠী এবং হাড়োয়া বিধানসভার বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলামের অনুগামী তপন রায় গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।

শহীদ দিবসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন তৃণমূলের দুই কর্মী।

ছবি -তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে মৃত লক্ষ্মীবালা মন্ডল ও সন্ন্যাসী সর্দার।

শহীদ দিবসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন তৃণমূলের দুই কর্মী।
newscopes.in    
নিজস্বসংবাদদাতা:বসিরহাট,২১জুলাই-

সবেমাত্র মমতার ভার্চুয়াল সভা শেষ হওয়ার পর তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।বেপরোয়া বোমা গুলির শব্দে মূহুর্তে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।একে অপরকে লক্ষ্য করে ছুঁড়তে থাকে বোমা গুলি।ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় দুজনের।যাদের মধ্যে একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা।এছাড়াও বোমা গুলির আঘাতে অন্ততপক্ষে ১২জন আহত হয়েছে।আহতদের আনা হয় হাড়োয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় স্হানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। এমনই জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।উত্তেজনায় ফুটছে গ্রাম।
বুধবার বিকাল ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাড়োয়া থানার অধীন মিনাখাঁ ব্লকের বাছড়া মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাংরামারি মেদিয়াপাড়ায়।অভিযোগ মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানী মণ্ডলের স্বামী তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের অনুগামী মোহনপুর অঞ্চল সভাপতি যোজ্ঞেশ্বর প্রামানিক গোষ্ঠী এবং হাড়োয়া বিধানসভার বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলামের অনুগামী তপন রায় গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাড়োয়া থানার বাছড়া মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যারামারি মেদিয়াপাড়ায় এদিন শহীদ দিবস পালনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়ালি সভা দেখার জন্য একটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। সেই প্যান্ডেলে ভার্চুয়ালি শহীদ দিবসের সভা দেখার পর তৃণমূলের স্বাভাবিক সংস্কৃতি অনুযায়ী বসে মদ গাজার আসর।সেই সাথে অঢেল খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়।উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেয় বাছড়া মোহনপুরের তৃণমূলের কর্মীরা।নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উষারানী জয়ী হওয়ার পর  মিনাখাঁ ব্লকের অধিকাংশ গ্রামে শুরু হয় তৃণমূলের সন্ত্রাস।বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ভিটেমাটি ছেড়ে প্রান বাঁচাতে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়।সেই সাথে বিজেপির কর্মীরাও বাধ্য হয় গ্রাম ছাড়তে।।  রাজ্যজুড়ে নির্বাচন পরবর্তী তৃণমূলের সীমাহীন সন্ত্রাসে তোলপাড় পড়ে যায়।কলকাতা হাইকোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়।হাইকোর্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দায়িত্ব দেয় তদন্তের।তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়তেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ঘরে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হয়।মিনাখাঁয় সংযুক্ত মোর্চার বহু কর্মী এখনো ঘরছাড়া থাকলেও মোহনপুরের বিজেপি কর্মীরা ফিরে আসে এবং যোগ দেয় তৃণমূলে।যা কিনা যোজ্ঞেশ্বরের গোষ্ঠী মেনে নিতে পারে না।এ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চলছিলই।ছাই চাপা আগুন এদিন বেড়িয়ে আসে এবং জলজ্যান্ত দুটি নিরীহ প্রান চলে যায়।যার সূত্রপাত মদের আসর।
চারদিক মেছোঘেরি।মাঝখানে ট্যাংরামারি মেদিয়াপাড়া।এখানেই মদের আসরে উভয় গোষ্ঠী।মদের নেশায় একে অপরকে লক্ষ্য করে শুরু হয় কটূক্তি।বিজেপিতে চলে যাওয়া ফেলে তৃণমূলে ফিরে আসা সন্ন্যাসী সর্দাররা(৩৮)অপর গোষ্ঠীর তৃণমূলের কর্মীদের বলতে থাকে তাদের উপর তাদের পরিবার ঘরবাড়িতে যে অত্যাচার করা হয়েছে তা ঠিক হয় নি।আগুনে ঘি পড়লো।এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক।মূহুর্তে অগ্নিগর্ভ  হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।এমনিতেই বোমা বারুদের স্তুপের উপর মোহনপুর।শুরু হয় একে অপরকে লক্ষ্য করে বোমা গুলি ছোঁড়া।গ্রামেরই তৃণমূল নেতা ভবসিন্ধু মণ্ডলের কাকিমা ষাটোর্ধ্ব লক্ষ্মীবালা মণ্ডল ছুটে যান ঠেকাতে।তৃণমূলীদের ছোড়া গুলি এসে লাগে তার পেটে।ওদিক ততক্ষণে গুলিবিদ্ধ হয় তৃণমূল কর্মী সন্ন্যাসী সর্দার।দুজনেই লুটিয়ে পড়ে মাটিতে।ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়।নেপাল মণ্ডল সহ আহত হয় আরও অনেকে।আতঙ্কে গ্রামের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে।গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আশ্রআশ্রয় নেয় অন্যত্র।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাড়োয়া থানার  বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।পুলিশ সন্ন্যাসী সর্দার ও লক্ষীবালা মন্ডলের মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। আহত তৃণমূল কর্মীদের উদ্ধার করে হাড়োয়া হাসপাতালে পাঠায় চিকিৎসার জন্য। ঘটনার পর শুরু হয় দোষারোপের পালা।ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে দোষ চাপানো শুরু হয় একে অপরের ঘাড়ে। তবে স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায় মোহনপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি যোজ্ঞেশ্বর প্রামাণিক ও মোহনপুর অঞ্চলের অঞ্চল কমিটির এক সদস্য তপন রায়ের মধ্যে মাঝেমধ্যেই গন্ডগোল লেগেই থাকত। গত কয়েকদিন ধরে মেছোঘেরির দখলকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই বোমা-গুলি বিনিময় নিত্যদিন চলতো। যা নিয়ে অতিষ্ট স্থানীয় মানুষ। সেই ঘটনার জের যুক্ত হয়ে এদিন ঘটনা ঘটানো হয়েছে।যোজ্ঞেশ্বর গোষ্ঠীর লক্ষ্য ছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারার।হলোও তাই। তবে এই নিয়ে এলাকার ওই তৃণমূল নেতা তপন রায় বলেন,'যোজ্ঞেশ্বর প্রামাণিক বেশকিছু সমাজ বিরোধীদের নিয়ে এলাকায় তোলাবাজি শুরু করেছিল। তাতে আমরা প্রতিবাদ করতে গেলেই আমাদের মারধর করতো।আমাদের খুন করার হুমকি দিত।আজকে এই ঘটনা যোজ্ঞেশ্বর প্রামাণিকের নেতৃত্বে হয়েছে'। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে মোহনপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির যোজ্ঞেশ্বর প্রামাণিক  যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন,তপন রায়ের উপর। বেশকিছু বিজেপি থেকে আসা তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে।এই নিয়ে আমি উপর মহলকে বহুবার জানিয়েছিলাম।
ঘটনার পর গোটা থমথমে এলাকা।শুরু ব্যাপক হয়েছে ধরপাকড়।আতঙ্কে সিঁটিয়ে ট্যাংরামারি মেদিয়াপাড়া সহ গোটা বাছড়া মোহনপুর।

Your Opinion

We hate spam as much as you do