Tranding

12:29 PM - 01 Dec 2025

Home / North 24 Parganas / রাজ্য ও কেন্দ্রের শ্রম নীতিতে নির্মান শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার আক্রান্ত

রাজ্য ও কেন্দ্রের শ্রম নীতিতে নির্মান শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার আক্রান্ত

এই রাজ্যে নগরয়ায়োন বলতে কিছু নেই।ফলে অধিকাংশ নির্মান শ্রমিক আর্থিক অনটনের মধ্যে।

রাজ্য ও কেন্দ্রের শ্রম নীতিতে নির্মান  শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার আক্রান্ত

কৃষির উৎপাদন খরচ বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁচেছে যে চাষ করার পর ফসলের সঠিক বাজারে দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এরফলে ছোট কৃষকরা চাষ থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে। আরো খারাপ অবস্থা খেতমজুরদের। একটা সময় ছিল যখন ধান কাটার সময় অন্য জেলা থেকে দিনমজুর নিয়ে আসা হতো। এখন ধানের দামও তলানিতে। কৃষক মান্ডিগুলো ধুঁকছে। ফড়েদের রমরমা। কৃষক বাধ্য হচ্ছে অর্ধেক দামে ধান বিক্রি করতে। ফলে খেতমজুররা বিকল্প কাজের খোঁজে দলে দলে নির্মান শ্রমিক হিসাবে আত্নপ্রকাশ করছে। এই প্রবনতা বনগাঁ এবং বসিরহাট মহাকুমায় বাড়ছে।

সব মিলিয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় নির্মান শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ।এই রাজ্যে নগরয়ায়োন বলতে কিছু নেই।ফলে অধিকাংশ নির্মান শ্রমিক আর্থিক অনটনের মধ্যে।সরকারী সহায্য কিছুই নেই বললেই চলে।পরন্তু রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নীতিতে তাদের অর্জিত অধিকার আক্রান্ত।  বামফ্রন্ট আমলে ‘হিডকো’ তত্বাবধানে রাজ্যে বিশাল কর্মযোজ্ঞ চলেছিল। সেই সময় অস্তমিত।সাথে সাথে অস্তমিত নির্মান শ্রমিকদের ভবিষ্যত। তাদের নির্মান কাজ এখন এলাকার মধ্যেই সীমিত।  আমফান কিংবা পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাদের আর্থিক দুর্দশা আরো বেড়েছে। এমন কথা বারাসতের নির্মান কর্মী নুর মহম্মদ থেকে বনগাঁর আবু তাহেরের। তাদের উভয়ের বক্তব্য আমরা এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। এ বিষয়ে নির্মান কর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক প্রনব মজুমদার জানালেন, এঁদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই বামফ্রন্ট সরকার সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেছিল। সেই সামাজিক সুরক্ষার সুফল  বর্তমান সরকারের আমলে নির্মান শ্রমিকদের ঘরে পৌঁচচ্ছে না।

এ বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ৮ দফা দাবিতে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বিবাহ, মাতৃত্ব, পেনশনের সব সুবিধা থাকা সত্বেও তারা কিছুই পাচ্ছে না। বকেয়া বেনিফিটের তথ্য সহ তালিকা রাজ্যের শ্রম দপ্তরে জমা দেওয়ার পরও বেনিফিসিয়ারীরা বকেয়া বেনিফিট পায় নি। বামফ্রন্টের সময় আবাসন প্রকল্পে ১০ লক্ষ টাকার ওপর কাজ হলে স্থানীয় পৌরসভা, পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদে ১% সেস দিতে হতো।শুধুমাত্র নির্মান কল্যান পর্ষদের সেস তহবিল থেকে ২৭০০ কোটি টাকা থেকে ১৬২০ কোটি টাকা সরিয়েছে এই সরকার। এছাড়াও আছে পরিবহন কল্যান প্রকল্প সহ অনান্য সুরক্ষা প্রকল্প। সেইসব তহবিল থেকে কত টাকা সরিয়েছে এই সরকার, সেই তথ্য এখনও সামনে আসেনি। ইতোমধ্যে কেন্দ্রের সরকার শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার চালু আইন তুলে দিয়ে নতুন ‘শ্রম কোড আইন’চাপিয়ে দিয়েছে। ‘মিশন কোড প্রজেক্ট’ নামে শ্রমিকদের প্রাপ্য সহায়তা, অনুদান কেড়ে নিতে নির্মান কল্যান পর্ষদ ভেঙে দিতে মরিয়া কেন্দ্রের শ্রম দপ্তর। ফলে এটা স্পষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রের শ্রম দপ্তর দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপের ফলে লক্ষ লক্ষ নির্মান শ্রর্মিকদের সামাজিক সুরক্ষার অর্জিত অধিকার আক্রান্ত।

দীর্ঘ লকডাউনে সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, সামাজিক সুরক্ষার সমস্ত বকেয়া , অনুদান শ্রমিক মেলায় দেওয়া হোক। কল্যান পর্ষদে নথিভুক্ত লকডাউনে কাজ হারানো নির্মান শ্রমিকদের অন্তত ৬মাস ৩ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার। কিন্তু সরকার বা শ্রম দপ্তর তা গ্রাহ্য করে নি। ফলে অসহায় কাজ হারানো বা কাজ না থাকা নির্মান শ্রমিকদের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে লকডাউনের সময়ে রাজ্যে কোটি, কোটি টাকার চাল ও অনান্য খাদ্য সামগ্রি বন্টন করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহাকুমায় নির্মান শ্রমিকদের জন্য প্রায় ১৬ লক্ষ টাকার ত্রান সামগ্রি তুলে দেওয়া হয়েছে।   কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনে থালা বাজাবার পরমর্শ দিয়েছিলো আর ক্ষমতায় না থাকা এই রাজ্যের বামপন্থীরা সেই থালায় ভাত তুলে দিয়েছেন কমিউনিটি কিচেনের মধ্য দিয়ে।

Your Opinion

We hate spam as much as you do