Tranding

12:16 PM - 01 Dec 2025

Home / North 24 Parganas / কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক-বসিরহাটের রাস্তায়

কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক-বসিরহাটের রাস্তায়

বাড়ির সবাই কোভিটে আক্রান্ত।ঘরে এতটুকুও দানাপানি নেই।আবার কারোর ওষুধের জন্য জন্য হাহুতাশ।মূহুর্তে ওরা পৌঁছে যাচ্ছে করোনায় আক্রান্তদের পাশে।কখনও অক্সিজেন সিলিন্ডার সাইকেলে চাপিয়ে।কখনও বা জল,খাবার,ওষুধ নিয়ে পৌঁছাচ্ছে আক্রান্তদের ঘরের দাওয়ায়,উঠানের কোণে।

কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক-বসিরহাটের রাস্তায়

কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক-বসিরহাটের রাস্তায়

ভিন্ন ভিন্ন আকুতি।কেউ বলছে ভাই এখুনি অক্সিজেন না পেলে বাবাকে বাঁচাতে পারবো না।কেউ বলছে বাড়ির সবাই কোভিটে আক্রান্ত।ঘরে এতটুকুও দানাপানি নেই।আবার কারোর ওষুধের জন্য জন্য হাহুতাশ।মূহুর্তে ওরা পৌঁছে যাচ্ছে করোনায় আক্রান্তদের পাশে।কখনও অক্সিজেন সিলিন্ডার সাইকেলে চাপিয়ে।কখনও বা জল,খাবার,ওষুধ নিয়ে পৌঁছাচ্ছে আক্রান্তদের ঘরের দাওয়ায়,উঠানের কোণে।জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিনকে, অরিন্দম,,পুষ্পিতা, সান্টু,বক্কাররা সত্যি আজ অনেকটাই বেপরোয়া।যা কীনা সকাল থেকে সাঁঝ ভেসে উঠছে ইছামতীর পাড়ে টাকীর ক্যানভাসে।প্রতিটি জনপদ যার উজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করে চলেছে করোনার প্রথম ঢেউ,আমফান পর্ব থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এ এসে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রয়াত সি পি আই(এম)নেতা  শ্রীদীপ রায়চৌধুরী অবশ্যই এদের প্রেরণা অন্যান্যদের মতোই।এরা টাকীর কোভিট কেয়ার নেটওয়ার্কের কর্মী।এদের আরও একটি পরিচয় এরা কেউ এস এফ আই,ডি ওয়াই এফ আই,আবার কেউ বিজ্ঞান কর্মী অথবা টাকী স্কাউট অ্যান্ড গাইউস এবং রেডক্রস সহ অন্যান্য।
টাকি হাসনাবাদের প্রত্যন্ত এলাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ভরসা জাগাচ্ছে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক।

গত বছর ১২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী ও বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য সহ-সম্পাদক সৌরভ চক্রবর্তীর সহযোগিতায় বিজ্ঞান কর্মী ছাড়াও এলাকার সহৃদয় ব্যক্তিদের নিয়ে গড়ে ওঠে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক-টাকি হাসনাবাদ ইউনিট। ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক প্রদীপ্ত সরকারকে আহ্বায়ক করে পার্থ মুখার্জি,মনীষা মুখার্জি,দীপক বসু,প্রয়াত কমরেড শ্রীদীপ রায়চৌধুরী ও ডাঃ সাহিন হাসানকে অভিভাবক রেখে তিরিশ জনের কমিটি নিয়ে শুরু হয় পথচলা। 
। করোনা যত মহামারী রূপ নিয়েছে দিনের পর দিন একাধিক সংগঠন ও ক্লাব যুক্ত হয়েছে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কে। টাকি স্কাউট অ্যান্ড গাইডস,রেডক্রস,টাকি পৌর নাগরিক সমিতি,অগ্রদূত ক্লাব,টেনজেনারেটার,আরোহন ইত্যাদি অসংখ্য সংগঠন তাদের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তিরিশ থেকে বেড়ে বর্তমানে প্রায় একশো জন কর্মী নিয়ে করোনা সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যায় ছুটছে এরা। প্রতিদিন নিয়ম করে করোনা আক্রান্তদের বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়া,শাকসব্জী মুদিখানা বাজার এমনকি দুধ ফল পৌঁছে দেওয়া,রুগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানো,অক্সিমিটার নিয়ে ছুটে যাওয়া থেকে বিপদ সংকুল করোনা আক্রান্তদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে ছুটতে ব্যস্ত গৌতম মণ্ডল, পিনকে দাস, সুনীল সরদার,স্বপন সরদার,মলয় চৌধুরী অরিন্দম মজুমদার,সান্টু সরদার,পুষ্পিতা ব্যানার্জী,বক্কার গাজী,প্রীতম ঘোষ প্রমুখেরা। সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে মিনি অ্যাম্বুলেন্সও। ডাক আসলেই করোনা আক্রান্তের বাড়তে গিয়ে স্যানিটাইজ করছেন কর্মীরা। শিমুলিয়া সেফহোমে নিয়ম করে রুগীদের দিয়ে আসা হয় ফল। অক্সিজেন সিলিন্ডার -অক্সিমিটার-বাড়িতে খাবার-অ্যাম্বুলেন্স-মানসিক ও স্বাস্থ্য ইত্যাদির গ্রুপ করে নাম ফোন নম্বর দিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মানুষের সুবিধার জন্য। ডাক্তারী পরামর্শের জন্য টেলি মেডিসিন করে দেওয়া হয়েছে ডাক্তারের নাম ও ফোন নম্বর।  সাহায্য চেয়ে টাকি হাসনাবাদের বাইরে থেকেও অসংখ্য ফোন আসছে কর্মীদের কাছে। কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের টাকি-হাসনাবাদ শাখার পক্ষ থেকে পার্থ মুখার্জি, দীপক বসু,প্রদীপ্ত সরকার বলেন-এই কঠিন অবস্থায় মানুষের পাশে থাকতেই হবে আমাদের এই প্রয়াস। কিন্তু সমস্যা হলো বর্তমানে বসিরহাট জেলা হাসপাতালের বারোজন ডাক্তার সহ নার্স ও অন্যান্য কর্মীরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন যার ফলে চিকিৎসায় ব্যাহত হচ্ছে। 

xবিভিন্ন জায়গা থেকে রুগী পাঠাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। ভেঙে পড়া চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি করতে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছেন তারা। করোনা মহামারীতে টাকি ও হাসনাবাদে কর্মরত  ডাঃ আবির দত্ত, ডাঃ লুসি দাস বিশ্বাস, ডাঃ মিহির ব্যানার্জিরা যেভাবে অতন্দ্র প্রহরীর মতো জেগে আছেন তা সত্যিই ভোলার নয়। তারা আরও জানান করোনা পেশেন্টের কথা ভেবে খুব শীঘ্রই আমরা টাকিতে একটা সেফহোম করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। রাজ্যের অন্যান্য জেলার সাথে পাল্লা দিয়ে এখানেও পজিটিভ রিপোর্টের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। এই ছোট্ট জায়গায় প্রায় ৬৩০ জনের করোনা পজিটিভ'র খবর এসেছে।সামনে তৃতীয় ঢেউয়ের অপেক্ষা।আমরা জাগ্রত জনতার দ্বারে।

Your Opinion

We hate spam as much as you do