Tranding

11:24 AM - 01 Dec 2025

Home / North 24 Parganas / মৃত মেয়ের গননির্যাতনের অভিযোগ করাতে হুমকি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন দরিদ্র শ্রমিক পরিবার

মৃত মেয়ের গননির্যাতনের অভিযোগ করাতে হুমকি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন দরিদ্র শ্রমিক পরিবার

ঘটনার পর থেকে তাকে ও বাকি অভিযুক্তদের কেউ গ্রামে দেখে নি। প্রশ্ন উঠছে কেন তারা গ্রাম ছেড়ে পালালো?তখনও তো কেউ তাদের নামে কোন অভিযোগ করে নি।২০সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ২৫সেপ্টেম্বর অভিযোগ হয়।ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তদন্তকারী অফিসার বারবার বলছিলেন এটা আত্মহত্যা নয়।একে মেরে ফেলা হয়েছে।

মৃত মেয়ের গননির্যাতনের অভিযোগ করাতে হুমকি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন দরিদ্র শ্রমিক পরিবার

 মৃত মেয়ের গননির্যাতনের অভিযোগ করাতে হুমকি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন দরিদ্র শ্রমিক পরিবার

নিরাপত্তা নেই গ্রামে।অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছি।এরপর যদি আমার এই একরত্তি ছেলে আসানূরকে(রোহিত) ওরা মেরে ফেলে, তখন কী নিয়ে বাঁচবো?অসহায় সদ্য কন্যা হারানো বাবা মায়ের নিদারুণ উক্তি।১৮দিনের মাথায় বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই জানালেন মৃত অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারহানা খাতুনের বাবা সি পি এমের ঘনিষ্ঠ সমর্থক মহম্মদ আলি গাজি মা রেহানা সুলতানা।

আদালতের নির্দেশে  ফের পোষ্ট মর্টেমের জন্য এদিন কবর থেকে ফারহানার মৃতদেহ তোলার কথা ছিল।কোন এক অজ্ঞাত কারণে তা সম্ভবপর হলো না।পুলিশের বক্তব্য পরবর্তী নির্দেশ এলে তা কার্যকর হবে।মামলাকারী আইনজীবি অর্পণ হালদারের বক্তব্য পুলিশ পদ্ধতি জানে না।বিচারক এবং মেডিকো লিগ্যাল এক্সপার্টের উপস্হিতিতে উক্ত কার্য সম্পন্ন হবে।পুলিশ তার ব্যবস্থা না করার জন্য বৃথা সময় নষ্ট হচ্ছে।

বিষয়টি মহকুমা শাসককে জানানো হয়েছে।দু একদিনের মধ্যে মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।
সম্ভবত বসিরহাট মহকুমা আদালতে এই প্রথম কোন মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্তের আদেশ দিল মহামান্য বিচারক।স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র শোরগোল পড়ে যায়।এই খবর বসিরহাট পুলিশ জেলার মাটিয়া থানার দক্ষিণ রঘুনাথপুর গ্রামে পৌঁছালে সেখানেও তৈরি হয় চাঞ্চল্য।


বুধবার ঘটনার মর্ম্মবস্তু জানতে গ্রামে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ২১বছর বাস করেও সপরিবারে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন দীনমজুর মহম্মদ আলি গাজি।যাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষন করে খুনের অভিযোগ তারা বেপাত্তা।
 অভিযোগ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের কর্মী সমর্থক হওয়ার কারনে স্থানীয় খোলাপোতা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অপরেশ মুখার্জি এবং স্থানীয়১৩০নং বুথের৭নং সংসদের পঞ্চায়েত সদস্যা মমতাজ বিবি অভিযুক্তদের বাঁচানোর তাগিদে উঠে পড়ে লেগেছেন।


এমনকি মহম্মদ আলিকে হুমকি দেওয়া হয়েছে থানা, হাসপাতাল আমাদের হাতের মুঠোয়। কোন নেতা মণ্ত্রী কিছু করতে পারবে না।গ্রামে বাস করতে হলে মেনে নিতে হবে।আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে প্রধান বলেন একবস্তা চাল দিচ্ছি খেয়ে ঘরে শুয়ে থাক।বেশি মাথা ঘামাস না।ওরা খুনিদের হয়ে কাজ করছে।এদিন এমনও অভিযোগ শোনা গেল মহম্মদের স্ত্রী রেহানার কাছ থেকে। অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত সদস্যা মমতাজ জানান আমরাও চাই সত্য প্রকাশ হোক।দোষীরা শাস্তি পাক।যদিও মহম্মদ গ্রাম ছেড়ে প‍রিবার নিয়ে কেন চলে যাচ্ছে বা সে গ্রামে থাকলে তার নিরাপত্তার কোন অভাব হবে না এ ব্যাপারে প্রশাসন বা পঞ্চায়েত সদস্যাকে উদ্যোগ নিতে দেখা গেল না।দক্ষিণ রঘুনাথপুর গ্রাম ছেড়ে পৈত্রিক ভিটা উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামে চোখের জল ফেলতে ফেলতে চলে গেল মহম্মদ ও স্ত্রী রেহানা, একরত্তি আসানূর।যাওয়ার সময় জানিয়ে গেলেন ফারহানার মর্মান্তিক মৃত্যুর রহস্যময় কাহিনী।


বারাকপুরে চিংড়ি মাছের হেড লেসের কাজ করে মহম্মদ ও রেহানা।সম্প্রতি করোনার কারনে স্কুল ছুটি থাকার কারণে আসানূর বাবা মায়ের কাছে চলে যায়।ফরহানা ৫-৭বছর বয়স থেকে থাকে প্রতিবেশী অভিযুক্ত বাকু মণ্ডলের বাড়িতে।সবসময় ফারহানার সাথে ফোনে কথা হয় বাবা মায়ের।গত ১৮সেপ্টেম্বর শেষ কথা হয়।১৯সেপ্টেম্বর মেয়ে অসুস্থ খবর পেয়ে গ্রামে আসে মহম্মদ ও তার স্ত্রী পুত্র।বাড়িতে এসে দেখে বাড়িতে পুলিশ ও গ্রামের লোকের ভীড়।জানতে পারে ফারহানা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

যদি বেঁচে যায় এই ভেবে আগাম ফারহানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় অভিযুক্ত বাকুর ভাই অপর অভিযুক্ত মিজানুরের স্ত্রী মীরাতুন নাহার।সে সেদিন জানিয়েছিল ফারহানা বাড়িতে স্নান করতে এসে ফিরছে না দেখে ডাকতে এসে দেখে ফারহানা গলায় কাপড় জড়িয়ে ঝুলছে।সে নামিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে।চেঁচামেচি শুনে পাশের বাড়ির শামিনূর এসে মুখে গামছা নিঙড়ে জল দিলে ফারহানা নিস্তেজ হয়ে পড়ে।অর্থাৎ ফারহানা গলায় দড়ি দিয়ে মারা যেতে পারে না।ঘটনার সময় ঘরের খাটে আধ সেলাই অবস্থায় নাইটি পড়ে ও বারান্দায় সাবান, শ্যাম্পু কলগেট পড়ে।পাশেই বেআইনি হাইব্রিড মাগুর মাছের চাষ মূল অভিযুক্ত রাজেন মণ্ডল।


ঘটনার পর থেকে তাকে ও বাকি অভিযুক্তদের কেউ গ্রামে দেখে নি। প্রশ্ন উঠছে কেন তারা গ্রাম ছেড়ে পালালো?তখনও তো কেউ তাদের নামে কোন অভিযোগ করে নি।২০সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ২৫সেপ্টেম্বর অভিযোগ হয়।ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তদন্তকারী অফিসার বারবার বলছিলেন এটা আত্মহত্যা নয়।একে মেরে ফেলা হয়েছে।

অভিযোগ করলেন প্রত্যক্ষদর্শী কবিনূর গাজি।গত১অক্টোবর আদালতে পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়।এদিকে ততক্ষণে সন্দেহ দানাবেঁধে মহম্মদ ও তার প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন দাবি করে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।যার মূল অভিযুক্ত রাজেন।যার লাগানো সি সি টি ভি'র ফুটেজে দেখা গেছে সাবান শ্যাম্পু, কলগেট কিনে বাড়িতে দুপুর ১২টা৩মিনিট নাগাদ ফারহানা স্নান করতে বাড়িতে আসছে।যদিও সি সি টিভির পরবর্তী ফুটেজে দেখা গেছে ফারহানাকে ধরাধরি করে যারা নিয়ে যাচ্ছে তাদের কারোরই মুখ দেখা যাচ্ছে না।

সম্ভব?প্রশ্ন তুললেন ফারহানার কাকা কবিনূর।ঘটনার পরাম্পরা দেখে বুঝে শুনে অভিযোগকারীদের হয়ে মামলাকারী আইনজীবি বিচারক এ ডি জের কাছে লিড পিটিশন করে সঠিক তদন্তের দাবি জানায়।সেখানে তিনি অভিযোগকারীদের হয়ে দাবি করেন প্রথমতঃ  অভিযুক্ত রাজেন মণ্ডলের বাড়ির লাডোয় সিসিটিভির ফুটেজ এবং রেকডিং সংগ্রহ করা হোক।যার উল্লেখ সিজার লিস্টে নেই।দ্বিতীয়ত পোষ্ট মর্টেম করেছেন যে চিকিৎসক তিনি মেডিকো এক্সপার্ট নন।তিনি এম বিবিএস, এমডি
(সাইকিয়াট্রিস্ট)। সঠিক তদন্তের স্বার্থে পুনরায় মৃতদেহ কবর থেকে তুলে মেডিকো লিগ্যাল এক্সপার্ট চিকিৎসককে দিয়ে ফের ময়নাতদন্ত করা হোক।না হলে সঠিক বিচার মিলবে না  অভিযোগকারী অসহায় বাবা মায়ের।ফারহানা নাবালিকা।


একজন নাবালিকার ময়নাতদন্তে যা যা প্রয়োজন তার কোন কিছুই মানা হয় নি এ ক্ষেত্রে। বসিরহাট জেলা হাসপাতালের মর্গে সম্প্রতি ডোমেরা পি এম করে।১০ফুট দূরত্বে মুখে রুমাল দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।এই ব্যবস্থা পাল্টানো দরকার।তাই আদালতের কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছি অটোপসি সার্জেনকে দিয়ে যেন বসিরহাট মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়।আদালত আবেদন মঞ্চে করে নির্দেশ দিয়েছেন  কবর থেকে মৃতদেহ তুলে মেডিকো লিগ্যাল এক্সপার্টকে দিয়ে ফের ময়নাতদন্ত করা সহ বাকি অন্যান্য সমর্থনে পুলিশকে নির্দিষ্ট দিয়েছেন।


আমরা মনে করি আইন আইনের পথে চললে প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পাবে।অভিযোগকারী অসহায় বাবা মা তাদের মেয়েকে ফিরে না পেলেও সঠিক বিচার পাবেন।যদিও১৮দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তরা আজও অধরা।শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে কী অভিযুক্তরা গ্রেফতার হচ্ছে না?প্রশ্ন দক্ষিণ রঘুনাথপুর থেকে শুরু উত্তর রঘুনাথপুর গ্রাম সহ গোটা খোলাপোতার।


যদিও এদিন পুলিশ জানায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।অভিযুক্তদের বাড়ি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
তদন্তের অগ্রগতিতে থানার অফিসার ইনচার্জকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বসিরহাট বিশেষ পসকো আদালত। সেদিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সহ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।দ্রুত তদন্ত করে ২৩নভেম্বর আদালতে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।আদালত এও নির্দেশ দিয়েছে মৃতার চুল,নখ,দাঁত,রক্ত,সোয়াপ সহ সংগৃহীত ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে নির্দিষ্ট দিনে।

Your Opinion

We hate spam as much as you do