অভিযোগ গত কয়েক বছর ধরে পারিবারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে সোনামনির সাথে শারিরীক এবং মানসিক অত্যাচার করত তার স্বামী এবং শাশুড়ী। বাপের বাড়ি থেকে টাকা পয়সা আনার জন্যও চাপ দেওয়া হত। সোনামনির বাবা শংকর ঘোষ পেশায় ভ্যানচালক।ফলে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দাবি মতো টাকা দিতে পারতেন না।
গৃহবধূ ও তার দুই সন্তানের মৃতদেহ
মা ও দুই শিশু সন্তানের রহস্য মৃত্যুতে দেগঙ্গা থানার নূরনগরে ব্যাপক চাঞ্চল্য
নিজস্ব সংবাদদাতা:বসিরহাট,৩০ জুলাই--
২ বছরের মেয়ে ৫ বছরের ছেলে সহ মায়ের মৃতদেহ পুকুর থেকে উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় উত্তর২৪পরগনার দেগঙ্গায়। পারিবারিক অশান্তির জেরে ২ বছরের মেয়ে এবং ৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে পুকুরে ঝাপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন এক গৃহবধূ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার নূরনগর পঞ্চায়েতের গাম্ভিরগাছির ঘোষপাড়ায়। শুক্রবার সকালের দিকে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে মা সহ দুই ছেলে মেয়ের দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রাই।পুলিশ তিন জনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।পুলিশ জানিয়েছে মৃত গৃহবধূর নাম সোনামনি ঘোষ(২৪), ২ বছরের মেয়ে বৃষ্টি ঘোষ এবং ৫ বছরের ছেলে বুবাই ঘোষ। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন অবশ্য আত্মঘাতীর বিষয়টি মানতে নারাজ।তাদের দাবি সাংসারিক অশান্তির কারনেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের খুন করেছে। মৃতার বাবা শংকর ঘোষ মেয়ের স্বামী এবং শাশুড়ীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন দেগঙ্গা থানায়। পুলিশ জানিয়েছে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃত গৃহবধূর স্বামী এবং শাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।ধৃতরা হল বাবুলাল ঘোষ এবং সুমিত্রা ঘোষ।
পরিবার এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বছর সাত আগে নুরনগর পঞ্চায়েতের গাম্ভিরগাছির ঘোষপাড়ার বাবুলাল ঘোষের সাথে বিয়ে হয়েছিল সোনামনির।তার বাপের বাড়ি চাকলা পঞ্চায়েতের সিরাজপুর ঘোষপাড়ায়। তাদের ২ বছরের মেয়ে এবং ৫ বছরের ছেলেও আছে।
অভিযোগ গত কয়েক বছর ধরে পারিবারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে সোনামনির সাথে শারিরীক এবং মানসিক অত্যাচার করত তার স্বামী এবং শাশুড়ী। বাপের বাড়ি থেকে টাকা পয়সা আনার জন্যও চাপ দেওয়া হত। সোনামনির বাবা শংকর ঘোষ পেশায় ভ্যানচালক।ফলে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দাবি মতো টাকা দিতে পারতেন না।অভিযোগ, এর ফলে বাপের বাড়ি নিয়ে সোনামনিকে শ্বশুরবাড়ির গঞ্জনা সহ্য করতে হত।
প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে সোনামনি ৫ বছরের ছেলে বুবাইকে নিয়ে এক প্রতিবেশী প্রাইভেট টিউটরের বাড়িতে গিয়েছিলেন।তিনি ২ বছরের মেয়ে বৃষ্টিকেও সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন।সাধারনত সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে সে বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ছেলেমেয়েকে নিয়ে না ফেরায় খোঁজখবর শুরু করেন পরিবারের লোকজন। বিষয়টি জানার পর প্রতিবেশীরাও নিম্নচাপের বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তল্লাশি চালান গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়।কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ওই গৃহবধূ এবং তার দুই সন্তানের হদিশ না পেয়ে বিষয়টি জানান দেগঙ্গা থানার পুলিশের কাছে।কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত তাদের কারোরই খোঁজ পাওয়া যায় নি।
শুক্রবার সকালে স্থানীয় এক ব্যাক্তির পুকুরের ধার থেকে এক জোড়া জুতো এবং একটি ব্যাগ পরে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এরপর পুকুরের জলে কাপড়ের কিছু অংশ দেখতে পান স্থানীয়রা।খবর দেওয়া হয় পুলিশে।পুলিশের উপস্থিতিতেই স্থানীয়রাই পুকুরের জলে নেমে তল্লাশি চালিয়ে সোনামনির দেহ উদ্ধার করে। এর কিছু পরেই ঐ পুকুর থেকেই সোনামনির ২ বছরের মেয়ে বৃষ্টি এবং ৫ বছরের ছেলে বুবাইয়ের দেহ উদ্ধার করে। তিন জনের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে হতবাক হয়ে পড়েছেন এলাকার প্রতিবেশীরা। তারাও এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।পুলিশ তিন জনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
মৃতার ভাই দিপংকর ঘোষ বলেন বোনের সাথে বাপের বাড়ি থেকে টাকাপয়সা আনার জন্য চাপ দিত।এছাড়াও পারিবারিক বিষয় নিয়ে বোনের সাথে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চালাত তার স্বামী এবং শাশুড়ী। আমাদের বিশ্বাস পারিবারিক অশান্তির জেরেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন সোনামনিকে খুন করে পুকুরের জলে ভাসিয়ে দিয়েছে।শুক্রবার সকালে দেহ উদ্ধারের পরেই মৃতার বাবা শংকর ঘোষ খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মেয়ের স্বামী এবং শাশুড়ীর বিরুদ্ধে।
দেগঙ্গা থানার পুলিশ জানিয়েছে মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী বাবুলাল ঘোষ এবং সুমিত্রা ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
We hate spam as much as you do