গড়বেতার গোয়ালতোড়ে বিপুল অস্ত্রের হদিশ, মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হল প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র
পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের জঙ্গলে মিলল বিপুল অস্ত্র। মাটির নিচ থেকে উদ্ধার হল প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র৷
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এল পুলিশ৷ যে এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে একসময় মাওবাদী ও সিপিএমের মধ্যে শুরু হয়েছিল টানাপোড়েন৷ স্বাভাবিকভাবেই মাটির তলা থেকে উদ্ধার হওয়া এই বিপুল অস্ত্র ভান্ডারের মালিক কে তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা৷
ইতিমধ্যে অস্ত্রগুলি উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ৷ শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘নলবনা গ্রামে মাটি খোঁড়ার সময় কিছু পুরনো আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজের খোঁজ পান স্থানীয়রা৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৩৬টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৪০০-৪৫০ কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷’’
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড় থানা এলাকার বড্ডা গ্রামে। সেখানে সরকারি রাস্তার কাজে জেসিবি দিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় প্যাকেটিং করা পুরোনো বন্দুক ও প্রচুর কার্তুজ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় গোয়ালতোড় থানায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় আগ্নেয়াস্ত্র। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এদিকে অস্ত্র উদ্ধারের পরই এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। , মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হওয়া ওই বিপুল অস্ত্র ভান্ডারের আসল মালিক কে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র চাপানউতোর।
বুধবার দুপুর একটা নাগাদ বড়ডাঙা গ্রামের মানুষ জমি সমতল করার জন্য মাটি কাটছিলেন। সেই সময় হঠাৎ এক জনের কোদালের সঙ্গে মাটিতে পোঁতা অবস্থায় থাকা কিছুর সংঘর্ষ ঘটে। ধাতব শব্দ শুনে অনেকেরই সন্দেহ জন্মায়। এর পর মাটির তলা ৫০-৬০টি দোনলা বন্দুক বস্তাবন্দি অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ছাড়াও প্রায় হাজার খানেক কার্তুজও উদ্ধার হয়। ওই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দেখে চক্ষু চড়কগাছ স্থানীয় বাসিন্দাদের। অস্ত্রভান্ডার দেখে তাঁরা খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে ওই এলাকা ঘিরে ফেলে। অস্ত্র উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নলবনা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজয় সাউ বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষ মাটি কাটতে গিয়ে বন্দুক দেখতে পান। বিষয়টি তাঁরা আমাকে জানান। এর পর আমি গোয়ালতোড় থানায় খবর দিই। পুলিশ বন্দুক এবং গুলি উদ্ধার করেছে।’’
জঙ্গলমহলে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি সামনে আসতেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। স্থানীয় বিজেপি নেতা গৌতম কৌড়ির অভিযোগ, ‘‘এখানে মাটির তলা থেকে বন্দুক এবং কার্তুজ দুইই উদ্ধার হয়েছে। এক সময় এখানে মাওবাদী এবং সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী দুইই সক্রিয় ছিল। এই অস্ত্র কাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এই অস্ত্র দেশবিরোধী কোনও শক্তির কি না তা জানা নেই। তাই আমরা এনআইএ তদন্ত চাই।’’
সিপিএমের পক্ষ থেকে বলা হয় গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরকে কারা মুক্তাঞ্চল বানিয়েছিল তা সবাই জানে। এই অস্ত্র মাওবাদীদের ফেলে যাওয়া বলে জানানো হয়। অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের পালাবদলের পর মাওবাদীরা তাদের সক্রিয়তা বন্ধ করে। মুলত তারা তৃণমূলের পক্ষে কাজ করে। এমনকি বহু মাওবাদী কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে তাদের পূর্বতন ব্যবহৃত অস্ত্র তারা কোথায় রেখে যায় তাই নিয়েও প্রশ্ন আছে।
We hate spam as much as you do