তখন তো আমার চোখেও জল চলে এলো। তাসত্ত্বেও আমি ব্যাপারটা অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য ব্যাকরণ শিং কে জিজ্ঞাসা করলাম "আচ্ছা, আমার একটা বিষয় জানার ছিল, একটু বলবেন? " দেখলাম কাজ হয়েছে, ব্যাকরণ শিং চোখ মুছে বললো " বলো। "
কবিতা এবং কাল দেখা একটা স্বপ্ন
ব্রততী চক্রবর্তী
সৌম্য ঘোষাল
নষ্ট প্রহরে
ব্রততী চক্রবর্তী
নষ্টসময় স্পষ্ট কথা চায়না।
প্রতিবাদী প্রতিটি পাখির পালক ঝরে,
সমাজ কিংবা কারার অন্ধকারে।
অন্নের আহ্বান শেষে
অন্নপূর্ণারা ভাত নয়
জলকামান খায়।
প্রাত্যহিকের রোজনামচায়
বেড়ে ওঠে শূন্যতা!
মানিব্যাগ হাল্কা হলেও
আধভরা বাজারের থলে
আচ্ছে দিনের গান গায়।
নষ্টপ্রহরের বিষ বাতাস
নতমস্তক মানুষ চায়।
হ্যাঁ তে হ্যাঁ বলাটা খুব জরুরী।
কালরাতে একটা লম্বা স্বপ্ন দেখলাম
সৌম্য ঘোষাল
ব্যাকরণ শিং বলছে-
"হে বালকবৃন্দ এবং স্নেহের হিজবিজবিজ্,আমার গলায় ঝুলানো সার্টিফিকেট দেখেই তোমরা বুঝতে পারছ যে আমার নাম শ্রী ব্যাকরণ শিং, বি.এ, খাদ্যবিশারদ।আমি খুব চমৎকার ব্যা করতে পারি তাই আমার নাম ব্যাকরণ আর শিং তো দেখতেই পাচ্ছ। ইংরিজিতে লেখার সময় লিখি B. A অর্থাৎ ব্যা।কোন্ - কোন্ জিনিস খাওয়া যায় আর কোনটা- কোনটা খাওয়া যায় না ,তা আমি সব নিজে পরীক্ষা করে দেখেছি, তাই আমার উপাধি হচ্ছে খাদ্যবিশারদ। তোমরা যে বল - পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায় - এটা অত্যন্ত অন্যায় । এই তো একটু আগে ওই হতভাগাটা বলছিল যে রামছাগল টিকটিকি খায়।এটা এক্বেবারে সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। আমি অনেক রকম টিকটিকি চেটে দেখেছি, ওতে খাবার মত কিছু নেই। অবশ্যি আমরা মাঝে মাঝে এমন অনেক জিনিস খাই, যা তোমরা খাও না , যেমন - খাবারের ঠোঙা কিম্বা নারকেলের ছোবড়া,কিম্বা খবরের কাগজ কিম্বা সন্দেশের মতো ভালো ভালো মাসিক পত্রিকা। তাবলে মজবুত বাঁধানো কোনো বই আমরা কক্ষনো খাই না। আমরা কচ্চিৎ কখনো লেপ কম্বল কিম্বা তোশক বালিশ এসব একটু আধটু খাই বটে , কিন্তু যারা বলে আমরা খাট পালং কিম্বা টেবিল চেয়ার খাই, তারা ভয়ানক মিথ্যাবাদী।যখন আমাদের মনে খুব তেজ আসে, তখন শখ করে অনেক রকম জিনিস আমরা চিবিয়ে কিংবা চেখে দেখি, - যেমন পেনসিল রবার কিম্বা বোতলের ছিপি কিংবা শুকনো জুতো কিম্বা ক্যামবিসের ব্যাগ। শুনেছি আমার ঠাকুরদাদা একবার স্ফূর্তির চোটে এক সাহেবের আধখানা তাঁবু প্রায় খেয়ে শেষ করেছিলেন। কিন্তু তা বলে ছুরি কাঁচি কিম্বা শিশি বোতল, এসব আমরা কোনদিন খাই না । কেউ কেউ সাবান খেতে ভালোবাসে, কিন্তু সেসব নেহাৎ ছোটখাট বাজে সাবান ।আমার ছোট ভাই একবার একটা বার - সোপ খেয়ে ফেলেছিল --- "
বলেই ব্যাকরন শিং আকাশের দিকে চোখ তুলে ব্যা ব্যা করে ভয়ানক কাঁদতে লাগলো তাতে বুঝতে পারলাম যে সাবান খেয়ে ভাইটির অকালমৃত্যু হয়েছে। "
তখন তো আমার চোখেও জল চলে এলো। তাসত্ত্বেও আমি ব্যাপারটা অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য ব্যাকরণ শিং কে জিজ্ঞাসা করলাম
"আচ্ছা, আমার একটা বিষয় জানার ছিল, একটু বলবেন? "
দেখলাম কাজ হয়েছে,
ব্যাকরণ শিং চোখ মুছে বললো
" বলো। "
আমি তো কি বলবো কিছুতেই মাথায় আসছে না, তারপর অনেক ভেবে বল্লুম -" আচ্ছা, 'ঘোষ বৌদি বলিয়াছিলেন দীঘা কে গোয়া বানাবেন।' - এইটা বর্তমানে কালে কি হবে?"
ব্যাকরণ শিং হাঃ হাঃ করে হেসে বললো "কদ্দুর লেখাপড়া করেছো, এতো খুব সহজ - এটা হবে- 'গোয়ালিনী বলিলেন গোয়া কে দীঘা বানাবেন।' বলেই আরও জোরে হাঃ হাঃ করে হাসতেই থাকলো।"
হাসির আওয়াজে আমার ঘুমটা গেল ভেঙে, মোবাইলটা খুলে দেখি তারিখ ৩০শে অক্টোবর, ২০২১ সুকুমার রায়ের জন্মদিন।
We hate spam as much as you do