জানা যাচ্ছে, শনিবার রাত ১১ টা ৪৭ নাগাদ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পূর্ব আফগানিস্তান। ইউ এস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, কম্পনের কেন্দ্রস্থল ছিল নানগরহার প্রদেশের জালালাবাদ শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠের মাত্র ৮ কিলোমিটার নীচে উৎস থাকায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেড়েছে। ন’টি জোরালো আফটার শক আরও বাড়িয়েছে ক্ষতির পরিমাণ। জালালাবাদের খুব কাছেই পাকিস্তান। কম্পন অনুভূত হয়েছে সেখানেও।
আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প, মৃত অন্তত ৮০০
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫
বন্যা পরিস্থিতি ছিলই। দোসর হল শক্তিশালী ভূমিকম্প! মাঝরাতে ৬.৩ মাত্রার কম্পন ও আফটার শকে ধুলোয় মিশল পূর্ব আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সকাল হতে না হতেই কুনার ও নানগরহার প্রদেশে চারিদিকে শুধু ধ্বংসের ছবি আর স্বজন হারানোর কান্না। হড়পা বানের কারণে উদ্ধারকাজ দ্রুত শুরু করা যায়নি। তাই ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই নেমে পড়েন স্থানীয়রাই। কোথাও খালি হাতে চলল মাটি-পাথরের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পরিজনদের বের করার মরিয়া চেষ্টা। কোথাও বা যন্ত্রণায় কঁকিয়ে ওঠা আহত ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে তুলে দৌড় হেলিকপ্টারের দিকে। সোমবার শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভয়াবহ বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন আট শতাধিক মানুষ। আহত আরও আড়াই হাজার। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন। ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর পড়শি দেশকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে নয়াদিল্লি।
জানা যাচ্ছে, শনিবার রাত ১১ টা ৪৭ নাগাদ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পূর্ব আফগানিস্তান। ইউ এস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, কম্পনের কেন্দ্রস্থল ছিল নানগরহার প্রদেশের জালালাবাদ শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠের মাত্র ৮ কিলোমিটার নীচে উৎস থাকায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেড়েছে। ন’টি জোরালো আফটার শক আরও বাড়িয়েছে ক্ষতির পরিমাণ। জালালাবাদের খুব কাছেই পাকিস্তান। কম্পন অনুভূত হয়েছে সেখানেও।
কেঁপে ওঠা দুই প্রদেশের বেশিরভাগই দুর্গম পার্বত্য এলাকা। এখানকার বেশিরভাগ বাড়িই কাঁচা ইট, কাঠ ও পাথরে তৈরি। ফলে ভূমিকম্পের অভিঘাতে তার বেশিরভাগই ভেঙে পড়েছে। একাধিক ভিডিও ফুটেজে খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পরিজন ও বন্ধুদের উদ্ধার করতে দেখা গিয়েছে আফগান নাগরিকদের। সাদিকুল্লাহ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, রাতে ভয়াবহ শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। মনে হচ্ছিল গোটা পাহাড় কাঁপছে। তিনি বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের নীচে অর্ধেক চাপা পড়ে গিয়েছিলাম। একা বের হওয়ার ক্ষমতা ছিল না। স্ত্রী ও ২ সন্তানকে বাঁচাতে পারিনি। বাবা এখন আমার সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি। প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকার পর আমাদের উদ্ধার করা হয়।’
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, বিপর্যয়ে ৮১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কুনার প্রদেশে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চলছে। নামানো হয়েছে হেলিকপ্টারও। আহতদের ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। তবে দুর্গম পার্বত্য এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি চলায় বাধা পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের।
বিপর্যস্ত আফগানদের পাশে দাঁড়িয়ে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে নয়াদিল্লি। আফগানিস্তানকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে ইরান, তুরস্ক, আজারবাইজান, চীনও। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে ইউনিসেফের দলও।
We hate spam as much as you do