আয়লা হোক বা আমফান, প্রবীণ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ছুটে গিয়েছেন সুন্দরবনে। করোনার সময়ও ভাইরাসের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল 'কান্তিবুড়োর বাহিনী'। বাম জমানাতে তিনি সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন। এরপর পালাবদল হয়েছে। বাংলার লাল দাপট ‘বেশ ফিকে’, দাবি রাজনৈতিক মহলের। কান্তি এখন আর বিধায়ক বা মন্ত্রী নন। কিন্তু, খুচখাচ সমস্যাতেও দৌড়ে যান সুন্দরবনে।
ফাইল চিত্র
ঝড়ের আগেই 'কমরেড' কান্তি এলেন, সুন্দরবনের মানুষের পাশে দাঁড়ালেন
26 May 2024
রবিবার ঘড়ির কাঁটায় তখন ১২টা ৩৫ মিনিট। প্রবল বৃষ্টিতে চারিদিক সাদা। দোসর আবার ঝোড়ো হাওয়া। দূরপানে দৃষ্টি যাচ্ছে না খুব একটা। সাইক্লোন 'রিমেল' আছড়ে পড়ার আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে বললেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। বাদাবনের মানুষগুলোর কাছে তিনি আজও পরম আত্মীয়।
লোকে বলে, 'ঝড়ের আগে কান্তি আসে'। রবিবারও নিজেকে বাড়িতে আটকে রাখতে পারেননি প্রবীন এই 'নবীন' নেতা। ছুটে দিয়েছেন কাছের মানুষগুলোর কাছে। সঙ্গে আবেদন, 'এই সময়টা দলাদলি বাদ দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান।'
আয়লা হোক বা আমফান, প্রবীণ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ছুটে গিয়েছেন সুন্দরবনে। করোনার সময়ও ভাইরাসের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল 'কান্তিবুড়োর বাহিনী'। বাম জমানাতে তিনি সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন। এরপর পালাবদল হয়েছে। বাংলার লাল দাপট ‘বেশ ফিকে’, দাবি রাজনৈতিক মহলের। কান্তি এখন আর বিধায়ক বা মন্ত্রী নন। কিন্তু, খুচখাচ সমস্যাতেও দৌড়ে যান সুন্দরবনে।
রবিবারেই প্রবল গতিতে সাগর দ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার কাছে আছড়ে পড়তে চলেছে সাইক্লোন ‘রিমেল’। তার আগে রায়দিঘির কুমড়োপাড়া গ্রামের মানুষদের সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের। রবিবার সকাল থেকেই মণি নদীর তীরে ঠায় দাঁড়িয়ে তিনি।
অঝোরে বৃষ্টি সকাল থেকেই। কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'শুনছি রাত ১১টা ১২টার সময় রিমেল আছড়ে পড়বে। সেই সময় জোয়ারও থাকবে। তখন এই পরিস্থিতি থাকলে নদী বাঁধ ভাঙতে পারে। রায়দিঘিতে আমি যেখানে রয়েছি সেখানে মানুষজনকে সরিয়ে একটা স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্যত্র সব জায়গায় খবর নিতে পাচ্ছি না। কারণ অনেক জায়গায় ফোন লাগছে না। এখন এই অবস্থা হলে রাতে কী হবে!'
ঝড়-বৃষ্টিতে অন্য কোনও জায়গাতে যাওয়ার জো নেই বলেও জানান তিনি। বাংলায় এখনও এক দফায় ভোট বাকি। কিন্তু, নির্বাচনী অঙ্ক না কষে সকলের একজোট হয়ে এখন সুন্দরবন মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত, বার্তা কান্তির।
আজ একটি ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে সাদা পাঞ্জাবি, চোখে কালো চশমা। বৃষ্টি ভিজেই সুন্দরবনবাসীকে বারবার বলছেন নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলছেন। সঙ্গে এও বলেছেন, “আমি তো সরকারে নেই তাই আশপাশের মানুষের সাহায্য নিয়ে যতটা সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি।” জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যে ত্রিপল, ত্রাণের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন তিনি। সকালবেলাই পৌঁছে গিয়েছেন সুন্দরবনে। অবস্থা খতিয়ে দেখছেন।
একই সঙ্গে কান্তি বলছেন, “গত তিরিশ বছর ধরে সুন্দরবনের ঝড়-ঝঞ্ঝার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। ২০০৯ সালের ২৬ মে আয়লা আছড়ে পড়েছিল সুন্দরবনের বুকে। আজও সেই ২৬ মে। আমি তো নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে। বৃষ্টি হচ্ছে। হাওয়াও বইছে। রাজ্য সরকার সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে বলছে। কিন্তু আমি তা লক্ষ্য করছি না। আমার মনে হয় প্রশাসনের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।” এর পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এই মুহূর্তে বলতে বাধ্য হচ্ছি কেন্দ্রীয় সরকার আয়লার সময় ৫ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করেছিল। সেই টাকা খরচ করতে না পারার ফলে ২০১৪ সালে সেই টাকা ফেরত চলে যায়।”
সুন্দরবনবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, ‘এই জলটা ধরে রাখুন যাতে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বাঁধ যদি ভাঙে সেক্ষেত্রে নোনা জল ঢুকে যায়। পানীয় জলের একটা সংকট তৈরি হতে পারে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
’
We hate spam as much as you do