Tranding

01:18 PM - 01 Dec 2025

Home / Article / দেশপ্রেম জাতীয়তাবাদ ও আজকের ভারতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ

দেশপ্রেম জাতীয়তাবাদ ও আজকের ভারতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ

তার জীবনে ফ্যাসিবাদের উত্থান একটা বড় ঘটনা। প্রথম অবস্থায় ফ্যাসিবাদ কে প্রগতিবাদের মোড়কে উপস্থাপিত করা হলে রবীন্দ্রনাথের মতন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইন্টেলেকচুয়াল বিভ্রান্ত হন। পরে রোমা রোলা তাকে ইটালিতে মুসোলিনির চরিত্র বুঝিয়ে দেন। রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধি করেন এবং বার বার তিনি উগ্র জাতীয়তাবাদের নামে ফ্যাসিবাদ কে ঘৃণা করেছেন। সেজন্যই তার তাসের দেশের তাসেরা মানুষ হয়ে ওঠে, অচলায়তন ভেঙে পড়ে, মুক্তধারা বইতে থাকে এবং রক্তকরবীর সেই ভীষণ রাজারও পতন ঘটে। রবীন্দ্রনাথের ‘সভ্যতার সংকট’-এ ইংরেজ রাজত্বের অবসানের অবশ্যম্ভাবিতার যে বিশ্বাস ফুটে উঠেছে, তার সেই একই বিশ্বাস সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রেও। তার পাহাড় মেঘ হয়, নদী থাকে সতত প্রবহমান, আর মানুষ এগিয়ে চলে মুক্তির লক্ষ্যে- সব বন্ধন ছিন্ন করে। তার মতে, মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ। মানুষের শক্তির ওপর আস্থা তার অবিচল।

দেশপ্রেম জাতীয়তাবাদ ও আজকের ভারতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ

দেশপ্রেম জাতীয়তাবাদ ও আজকের ভারতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ

 

রবীন্দ্রনাথের ১৬২ তম জন্মবার্ষিকীতে বলা যায়, কোন স্মরণ অনুষ্ঠানই তার নির্দিষ্ট সময় কাল বাদ দিয়ে বিশ্লেষণ হতে পারে না। এই সময় ভারতবর্ষ, পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ মানুষ কেমন আছেন? শ্রমজীবী মানুষ কেমন আছেন? এসবই বিশ্লেষণ করতে হবে, তবেই রবীন্দ্রনাথকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়,  আজও তার প্রাসঙ্গিকতা কতখানি তা বোঝা যাবে। এটা ঠিক ভারতবর্ষে গত ৭০ বছর ধরে গণতান্ত্রিক শক্তিকে যত গুরুত্বের সাথে অর্থনৈতিক ও সামাজিক লড়াই লড়তে হয়েছিল, সাংস্কৃতিক লড়াই থাকলেও তার মাত্রা অন্যরকম ছিল। সোজা কথায় এখন অর্থনৈতিক সামাজিক লড়াইয়ের সাথে সাংস্কৃতিক লড়াই এর তীব্রতা না বাড়ালে বাকি লড়াই গুরুত্ব হারাবে।  স্বাধীনতার ৬৭ বছর  ভারতবর্ষের সংবিধান কখনো এত চ্যালেঞ্জের মুখে আসেনি।  পরেই ধর্মনিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়নি। দলিত সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার এইরকম ভাবে একশ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে সামাজিক মান্যতা পায়নি। তা হলেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়েছে। এখন দলিতদের উপর অত্যাচার বেড়েছে এবং সমাজের একটা অংশ একে সামাজিক মান্যতা দিচ্ছে।  সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। এইরকম একটি অবক্ষয় সময়ে রবীন্দ্রনাথকে বিবেচনা করতে হবে। জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ আজকাল সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের মত কি ছিল?  অবশ্যই আজকের দিনে বিচার্য।  অত্যন্ত সচেতন ভাবে তার বিভিন্ন গল্প-উপন্যাসে নাটকে তিনি তার মত প্রকাশ করেছেন।

 


প্রথমত রবীন্দ্রনাথ বাংলার নবজাগরণের সময়কালের মানুষ। ফলে  ইউরোপীয় রেনেসাঁ থেকে মানুষের মুক্তি, সমতা, স্বাধীনতা- এমন অনেক ধারণা গ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এজন্য ইউরোপীয় সভ্যতার প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভক্তির সীমা ছিল না। সেই ইউরোপীয় রেনেসাঁ এবং ভারতীয় ঐতিহ্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের চিন্তাধারা।
রবীন্দ্রনাথ নিজের জাতীয়তাবাদ নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি, তিনি তাঁর জাতীয়তাবাদী ভাবনায় সমগ্র ভারতবাসীকে উজ্জীবিত করেছেন এবং আজও করছেন। তবে রবীন্দ্রনাথ জাতীয়তাবাদী যেমন সত্য, একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিকতাবাদীও, যাকে বলে বিশ্বমানব। তবে তিনি উগ্র জাতীয়তাবাদকে প্রশ্রয় দেননি। কারণ, এর ভয়াবহতা তিনি জানতেন। 

 

হিটলার, মুসোলিনি ছিলেন উগ্র জাতীয়তাবাদী। তাদের উগ্র জাতীয়তাবাদের পরিণতি কী, রবীন্দ্রনাথ তা প্রত্যক্ষ করেছেন। আমরাও সেটা কমবেশী জানি। রবীন্দ্রনাথ এক জাতিসত্তার সঙ্গে আরেক জাতিসত্তার অস্তিত্বের বহুমাত্রিক রূপ পরিগ্রহ করেছেন, একটি সহজ যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। প্রত্যক্ষ করেছেন সর্বব্যাপী দৃষ্টি দিয়ে।

 


তিনি একক নেশন বা জাতির ওপর আস্থা রাখেননি। সমাজে নানা রকম বিভক্তি বিদ্যমান থাকায় নেশন নির্মাণ সম্ভব নয়- এটাই ছিল তার অনাস্থার মূল কারণ। ন্যাশনালিজমের নাম দিয়েছেন তিনি ‘জিওগ্রাফিক্যাল ডেমন’। প্রথমদিকে তার ধারণা ছিল, ‘নেশন একটি মানস পদার্থ।’ কিন্তু পরে নেশনকে একটি অস্বাভাবিক অবস্থা হিসেবে দেখেছেন, যা জনগণকে ‘যান্ত্রিক প্রয়োজনে’ সংঘবদ্ধ করে। 

তার ব্যাখ্যা, ভারতবর্ষে ন্যাশনালিজম খাটবে না। কারণ, ইউরোপে শাসক-শোষিতের যে ভেদ ঘটেছিল, সেটা জাতিগত বিভেদ নয়; শ্রেণীগত ভেদ। কিন্তু ভারতবর্ষে ভেদ ধর্ম ও জাতির নামে। তার মতে, দুর্বল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে জাতি গঠনের চেষ্টা এসব ভেদবুদ্ধিকে আরো বাড়িয়ে দেবে। 

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় যখন তার বিখ্যাত গান লিখছেন "ধনধান্য পুষ্প ভরা,আমাদের এই বসুন্ধরা তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা"
সেই সময়ই রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন আরেক বিখ্যাত গান "ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা,  তোমাতে বিশ্বময়ীর বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা"

রবীন্দ্রনাথ তার গানে আমার দেশকে সকল দেশের সেরা বলেননি এই আবেগে তিনি ভেসে যাননি বরং সত্যের কাছে দাঁড়িয়ে বলতে পেরেছেন দেশকালের গন্ডিতে নিয়ে আন্তর্জাতিকতার কথা তাই তার কাছে দেশ মানে তাতে বিশ্বময়ী এবং বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা আছে। 

 

রবীন্দ্রনাথ স্বদেশপ্রেমকে মূল্যবান মনে করেছেন, কিন্তু জাতীয়তাবাদী চেতনাকে খারিজ করে দিয়েছেন। সাধারণ মতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতের জাতীয় কবি যিনি ভারতের জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতাও তিনি। যদিও মুসলিম ধর্মীয় উগ্রবাদীরা অসংখ্যবার এই সংগীত বদলে ফেলার দাবি করেছে যা মূলত সাম্প্রদায়িক ও উগ্র জাতীয়তাবাদী বিদ্বেষপ্রসূত একটি ভাবনা। কিন্তু এমন দৃষ্টান্ত একটি নয়। পাকিস্তানের জাতীয় কবি ইকবালের ‘সারে জাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তা হামারা...’ ভারতীয় সেনাবাহিনীর রণসংগীত। এই গান গেয়ে তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। ফলে ভূ-খণ্ডের ধারণা ও জাতীয় সংস্কৃতিচেতনার মধ্যে অদ্ভুত কিছু বৈপরীত্য রয়েছে। ঔপনিবেশিক ভারতে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে সর্বদা তাঁর অবস্থান ছিল। তাঁর এই নমনীয় অবস্থানকে ভারতীয়রা কখনো ভালো চোখে দেখেননি। ‘গোরা’ ‘ঘরে বাইরে’ ও ‘চার অধ্যায়’- এই তিনটি উপন্যাসেই তিনি উগ্র জাতীয়তাবাদী চেতনাকে আক্রমণ করেছেন। এই অনুভূতিকে তিনি দেশপ্রেম হিসেবে স্বীকার করেননি। যদিও তার স্বদেশ প্রেমের গান সেই সময় বহু সংগ্রামে প্রেরণাদায়ী সংগীত হিসেবে গীত হতো। এমনকি জেলখানাতেও অনেক বিপ্লবী তাঁর গান গেয়ে তাঁদের চেতনা উদ্দীপ্ত রাখতেন।


কেউ কেউ রবীন্দ্রনাথের ভাবনাকে ‘উত্তর-আধুনিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কারো কারো মতে, রবীন্দ্রনাথের নেশন ধারনা বিরোধী সমালোচনায় স্টেটবিরোধী মতাদর্শ থাকলেও সেখানে স্বদেশপ্রেমের জায়গা আছে, কিন্তু ন্যাশনালিজমের নেই। রবীন্দ্রনাথ কড়া ভাষায় নেশনের সমালোচনা করেছেন, কিন্তু ততটা কড়াভাবে নো-নেশনের ছবি আঁকেননি। তিনি ঐক্যের প্রয়োজনে ভারতবর্ষে এক-রাষ্ট্রীয় শাসনের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি নো-নেশন সমাজে জনগণের উদ্ভাবনী শক্তির ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, চীন, জাপান, ইরান, তুরস্ক প্রভৃতি এ ধরনের রাষ্ট্র। 

 

রবীন্দ্র ভাবনায় বিপ্লবোত্তর রাশিয়ায় ‘যৌথতার নতুন নির্মাণের’ উচ্ছাস ছিল। মানুষের অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা স্বাস্থের নিশ্চয়তা তাকে সমাজতন্ত্রের প্রতি মুগ্ধ করেছিল।  তবে কোনো নিয়ম  মানব চরিত্রের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার রীতিও তিনি মানতে চাননি। ভারতবর্ষের ইতিহাসে সমাজই প্রধান; রাষ্ট্র নয়। এ কথা তিনি বার বার বলেছেন, খুব জোর দিয়েই। তার জীবনে ফ্যাসিবাদের উত্থান একটা বড় ঘটনা। প্রথম অবস্থায় ফ্যাসিবাদ কে প্রগতিবাদের মোড়কে উপস্থাপিত করা হলে রবীন্দ্রনাথের মতন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইন্টেলেকচুয়াল বিভ্রান্ত হন। পরে রোমা রোলা তাকে ইটালিতে মুসোলিনির চরিত্র বুঝিয়ে দেন। রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধি করেন এবং বার বার তিনি উগ্র জাতীয়তাবাদের নামে ফ্যাসিবাদ কে ঘৃণা করেছেন।  সেজন্যই তার তাসের দেশের তাসেরা মানুষ হয়ে ওঠে, অচলায়তন ভেঙে পড়ে, মুক্তধারা বইতে থাকে এবং রক্তকরবীর সেই ভীষণ রাজারও পতন ঘটে। রবীন্দ্রনাথের ‘সভ্যতার সংকট’-এ ইংরেজ রাজত্বের অবসানের অবশ্যম্ভাবিতার যে বিশ্বাস ফুটে উঠেছে, তার সেই একই বিশ্বাস সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রেও। তার পাহাড় মেঘ হয়, নদী থাকে সতত প্রবহমান, আর মানুষ এগিয়ে চলে মুক্তির লক্ষ্যে- সব বন্ধন ছিন্ন করে। তার মতে, মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ। মানুষের শক্তির ওপর আস্থা তার অবিচল।

তাই তিনি মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করেননি। জাতি, ধর্ম, বর্ণ কিংবা বিশেষ কোনো সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেননি। 

 

প্রশাসনিক সুবিধার্থে বলে ব্রিটিশ সরকার যখন বৃহত্তর বঙ্গকে দুই ভাগ করে পূর্ব বাংলা ও আসামকে একটি প্রদেশের মর্যাদা দিয়ে ঢাকাকে রাজধানী করে তখন তিনি বঙ্গভঙ্গ রদ করার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন সমাবেশ করেন। বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখালিখি শুরু করেন। তিনি পথে নেমে হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে রাখি বন্ধন করেন ও রচনা করেন বাংলার মাটি বাংলার জল।

 

১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ কৃষি-অর্থনীতিবিদ লিওনার্দ কে এলমহাস্টের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের নিকটবর্তী সুরুল গ্রামে ‘পল্লী পুনর্নির্মাণ সংস্থা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। রবীন্দ্রনাথ পরে এর নাম পরিবর্তন করে রেখেছিলেন ‘শ্রীনিকেতন’। এই শ্রীনিকেতনের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মহাত্মা গান্ধী পরিচালিত স্বরাজ আন্দোলনের একটি বিকল্প ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের বিদ্বান ও পন্ডিতদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে সেখানে গ্রামের মানুষদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের বন্দোবস্ত করেন এবং তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ জ্ঞান বিকাশের প্রয়াস নেন। 

 


ত্রিশের দশকে তিনি ভারতবর্ষের অস্বাভাবিক বর্ণবিভেদ এবং বর্ণে বর্ণে ধরাছোঁয়ার নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত মতামত প্রচার শুরু করেন। তিনি এই বর্ণবিভেদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা, কবিতা রচনা, বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে নাটক রচনা এবং কেরালার একটি মন্দিরে এই প্রথা ত্যাগের আহ্বান জানানোর মাধ্যমে তার আন্দোলন পরিচালনা করেন। মূলত দলিতদের সাধারণ সমাজে অবাধ প্রবেশাধিকারের সুযোগ করে দেওয়াই ছিল তার লক্ষ্য।

 

জীবনের শেষ দশকের পুরোটা রবীন্দ্রনাথ জনসমক্ষে ছিলেন। তার জনপ্রিয়তা এই সময়ে ছিল তুঙ্গে। ১৯৩৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ভারতের বিহার রাজ্যে সংঘটিত প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সম্পর্কে মহাত্মা গান্ধী মন্তব্য করেছিলেন, এটা দলিতদের বশীভূত করার জন্য ঈশ্বরের একটি প্রতিশোধ। রবীন্দ্রনাথ এই মন্তব্যের জন্য গান্ধীকে জনসমক্ষে তিরস্কার করেন। এছাড়া বঙ্গের আর্থ-সামাজিক অবস্থার অবনতি এবং কলকাতায় দারিদ্র্যের প্রভাবের কারণে তিনি বিশেষ দুঃখ প্রকাশ করেন। 

 

রবীন্দ্রনাথ জীবনের শেষ প্রান্তে ভারত রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। বিশেষ করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মতো সাধারণ সমস্যার ভারে ভারতকে জর্জরিত হতে দেখে এবং হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-সংঘর্ষ, তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর বাড়াবাড়ি রকমের ইন্ধন ও উস্কানি দিতে দেখেও তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছেন। 

Your Opinion

We hate spam as much as you do