বলিনি কখনো? আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে। এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে সেই এক বলা কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো
সদা জাগ্রত "শঙ্খ "থেমে গেলেন
বলিনি কখনো?
আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে।
এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে
সেই এক বলা
কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো
কোনো ভাষা নেই
কেননা শরীর তার দেহহীন উত্থানে জেগে
যতদূর মুছে নিতে জানে
দীর্ঘ চরাচর
তার চেয়ে আর কোনো দীর্ঘতর যবনিকা নেই।
কেননা পড়ন্ত ফুল, চিতার রুপালি ছাই, ধাবমান শেষ ট্রাম
সকলেই চেয়েছে আশ্রয়
সেকথা বলিনি? তবে কী ভাবে তাকাল এতদিন
জলের কিনারে নিচু জবা?
শুন্যতাই জানো শুধু? শুন্যের ভিতরে এত ঢেউ আছে
সেকথা জানো না?
বাংলা সাহিত্যেনক্ষত্রপতন ঘটল। বাঙালির সাহিত্যকে চির শূন্যতার ভরিয়ে মারণ ভাইরাসের কাছে হেরে গেলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। বুধবার সকালে উল্টোডাঙ্গার বাড়িতেই থেমে গেলেন সদাজাগ্রত শঙ্খ।
যতদিন জীবিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত সমাজের প্রতিটি ধ্বংস আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রাচীর হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ।
এপার বাংলা নয়, ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চাঁদপুরে জন্ম শঙ্খ ঘোষের। অনেকেরই অজানা, শঙ্খ ঘোষের 'সরকারি' নাম ছিল চিত্তপ্রিয় ঘোষ।
শৈশবের কিছু পরেই চলে আসেন এপার বাংলায়। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক হন তিনি। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর।
প্রথমে বঙ্গবাসী কলেজ, এরপর সিটি কলেজ, তারপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেছেন তিনি।
তাঁর শিক্ষকতার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়িয়েছিল দিকেদিকে। ডাক এসেছিল বিশ্বভারতী ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও। ১৯৬৭-তে আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক লেখক কর্মশালাতেও যোগ দেন তিনি।
সাহিত্য জীবনে তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজের শেষ নেই। বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’, ‘মূর্খ বড় সামাজিক নয়’-এর মতো একের পর এক কাব্যগ্রন্থে তিনি বুঁদ করে রেখেছিলেন বাঙালিকে। পেয়েছেন জ্ঞানপীঠ, সাহিত্য অ্যাকাডেমি, রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী পুরস্কার, নরসিংহ দাস পুরস্কারের মতো হাজার-হাজার সম্মান। ২০১৬ সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পান তিনি। তার আগে ২০১১ সালে ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন শঙ্খবাবু।
We hate spam as much as you do