২০২৪ সালের গ্লোবাল রিপোর্ট অনুযায়ী,২০২৩ সালের শেষ নাগাদ অন্তত ৬.৬ মিলিয়ন মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।এই সংখ্যাটি মূলত বন্যা, ঝড়, খরা, এবং অগ্নিকাণ্ডের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এতে অন্তত ২০.৩ মিলিয়ন মানুষ স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরও ১.১ মিলিয়ন মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে,যদিও সেগুলো সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়,যেমন ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুতিতে চরম উদ্বেগ! আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে মূল বিষয়
২২ নভেম্বর ২০২৪
প্রতি বছরের মত গত ১১ ই নভেম্বর থেকে ২২ শে নভেম্বর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবেলার জন্য অনুষ্ঠিত হল COP (Conference of the Parties) সম্মেলন।এবারের কপ-২৯ (COP-29)-এ আবারও জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলেছে।এ সময়ে,জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলির ফলে বিশ্বব্যাপী গৃহহীনদের(বাস্তুচ্যুতি)নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়ে গেছে।২০০৮ সাল থেকে বিশ্বে মোট ৩৫৯ মিলিয়ন মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
২০২৪ সালের গ্লোবাল রিপোর্ট অনুযায়ী,২০২৩ সালের শেষ নাগাদ অন্তত ৬.৬ মিলিয়ন মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।এই সংখ্যাটি মূলত বন্যা, ঝড়, খরা, এবং অগ্নিকাণ্ডের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এতে অন্তত ২০.৩ মিলিয়ন মানুষ স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরও ১.১ মিলিয়ন মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে,যদিও সেগুলো সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়,যেমন ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ।
বিশ্বের মধ্যে বিশেষত এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে।২০২৩ সালে চীনে ৪.৬ মিলিয়ন এবং ফিলিপাইনে ২.১ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।এদিকে, সোমালিয়া আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে।বন্যা এবং ঝড় বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুতির প্রধান কারণ ছিল,যার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৯.৮ মিলিয়ন এবং ৯.৫ মিলিয়ন।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এই বাস্তুচ্যুতির ঘটনা গত ১৬ বছরে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।বিশেষ করে বন্যা ও ঝড়ের সংখ্যা, যা ২০১৫ সাল থেকে ক্রমশ বাড়ছে।২০১৫ সালে বন্যার ঘটনা ছিল ২৭২টি, যা ২০২৩ সালে এসে ১,৭১০টি ছাড়িয়েছে। ঝড়ের ঘটনা, যেমন টাইফুন ও হ্যারিকেন, ২০১৫ সালে ছিল ১৬৩টি, যা ২০২৩ সালে এসে ১,১৮৬টি হয়েছে।
এছাড়া, দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং চীন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।দক্ষিণ এশিয়ার অবস্থা আরও খারাপ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ৭৫০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বিশ্ব ব্যাংকের মতে,এই অঞ্চলে আগামী ২০ বছরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ ১৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
COP29-এ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও,বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলি যথেষ্ট নয়।তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ এবং এর পরিণতিতে বাস্তুচ্যুতি ও ক্ষতির দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুশকেয়ার খারেচা বলেন, "যতক্ষণ না বৈশ্বিক গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণের উপর কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়, ততদিন এই বিপর্যয়গুলো চলতেই থাকবে।"
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুতি এবং এর ভয়াবহ প্রভাবকে মোকাবেলা করতে হলে বিশ্বকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলো,যেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার।
We hate spam as much as you do