পুলিশ সূত্রে খবর, খনি অঞ্চলে অবৈধ কয়লার কারবারে এই রাজুর নাম ছিল প্রথম সারিতে। অণ্ডাল থেকে ডানকুনির আগে পর্যন্ত ছিল রাজুর কয়লা ‘কারনামা’। এই রাজুর উত্থান রানিগঞ্জ থেকে। জীবনের শুরু দিকে ছিলেন কয়লার ট্রাকের খালাসি। ২০০৩-২০০৪ সাল থেকে অবৈধ কয়লার কারবারে হাত পাকাতে শুরু করেছিল রাজু। পথচলা শুরু অর্গানাইজডভাবে কয়লা ট্রান্সপোর্টের মধ্যে দিয়ে।
দুর্গাপুর কয়লা মাফিয়া বিজেপির রাজু ঝা গুলিতে খুন শক্তিগড়ের জাতীয় সড়কে
২এপ্রিল ২০২৩
দুর্গাপুর আসানসোল শিল্পাঞ্চলের পরিচিত নাম রাজু ঝা আজ পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড় সংলগ্ন এলাকায় গুলির আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গেছে, আজ বৈকাল দিকে তিনি তার সিটি সেন্টার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বিলাসবহুল হোটেল থেকে সহযোগী ব্রতিন মুখার্জিকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন । সূত্র মারফত জানা গেছে, জাতীয় সড়ক ধরে শক্তি গড় সংলগ্ন এলাকায় ল্যাংচা হাবের কাছে পেছন থেকে নীল রঙের একটি এসইউবি গাড়ি হঠাৎ করে রাজু ঝায়ের গাড়ির পাশাপাশি এসে গুলি শুরু করে । এই ঘটনায় সামনের সিটে বসে থাকা রাজু ঝা লুটিয়ে পড়েন ও ব্রতিন মুখার্জির হাতে ও অন্যান্য জায়গায় গুরুতর চোট লাগার কারণে তাকে বর্ধমান বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখা হয়েছে ।
উল্লেখ্য এই রাজু ঝায়ের আসল নাম রাজেশ ঝা । গত কয়েক দশক ধরে আসানসোল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া হিসেবেই তার নাম শুনে এসেছেন । এই রাজেশ যা ওরফে রাজু ঝাঁই গত বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন এবং শিল্পাঞ্চল জুড়ে ব্যাপক প্রচার অভিযান চালান । সিটি সেন্টারে অবস্থিত তার বিলাসবহুল হোটেলে ভারত বর্ষ তথা বিশ্বের বহু নামিদামি ব্যক্তিরা এসে থেকেছেন ও থাকছেন। তবে শিল্পাঞ্চল জুড়ে ওই বিলাসবহুল হোটেলটি BJP ভারতীয় জনতা পার্টির একাধিক বড় মাপের নেতাদের বৈঠক স্থল হয়ে উঠেছিল । কয়েক সপ্তাহ আগেই রাজু ঝায়ের আরেক সহযোগী লোকেশ সিংহের, সিটি সেন্টারে অবস্থিত বেঙ্গল অম্বুজার বাড়ির লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চলার অভিযোগ রয়েছে। সেই গুলি চালানোর ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশ তেমন কোনো সাফল্য পাইনি । এরই মধ্যে কাল সন্ধ্যা ৮ঃ১০ নাগাদ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা । এই হত্যাকাণ্ডের খবর আগুনের মতন ছড়িয়ে গেছে গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে । আসানসোল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বুকে কয়লা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যাওয়া শুরু করেছেন বলে জানা গেছে । পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, খনি অঞ্চলে অবৈধ কয়লার কারবারে এই রাজুর নাম ছিল প্রথম সারিতে। অণ্ডাল থেকে ডানকুনির আগে পর্যন্ত ছিল রাজুর কয়লা ‘কারনামা’। এই রাজুর উত্থান রানিগঞ্জ থেকে। জীবনের শুরু দিকে ছিলেন কয়লার ট্রাকের খালাসি। ২০০৩-২০০৪ সাল থেকে অবৈধ কয়লার কারবারে হাত পাকাতে শুরু করেছিল রাজু। পথচলা শুরু অর্গানাইজডভাবে কয়লা ট্রান্সপোর্টের মধ্যে দিয়ে। বেআইনি কয়লাকে অর্গানাইজডভাবে ট্রান্সপোর্ট করতে শুরু করেছিল এই রাজু। এদিকে কয়লাকাণ্ডে তাঁর বয়ান রেকর্ড করার জন্য সোমবার ডেকে পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। তার ঠিক একদিন আগে এ ঘটনা ঘটে যাওয়ায় তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।
কিন্তু, কেন তিনি এনামূল, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আব্দুল লতিফের গাড়িতে যাচ্ছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাহলে কী কয়লা পাচারের সঙ্গে গরু পাচারকাণ্ডের কোথাও একটা যোগসূত্র রয়েছে? তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করছেন ঘটনার সময় গাড়িতে চারজন ছিলেন। অনেকেই মনে করছেন ঘটনার সময় গাড়িতে আব্দুল লতিফও ছিলেন। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের দাবি চালক সহ গাড়িতে তিনজন ছিলেন। রাজু ছাড়াও ছিলেন তাঁর সঙ্গী বোতিন মুখোপাধ্যায়। তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
We hate spam as much as you do