শয্যা থেকে অক্সিজেন, ওষুধ থেকে কোভিড সুরক্ষার খরচ, সবেতেই রমরমা ব্যবসা। কোটি কোটির মুনাফা তুলছেন এক শ্রেণির নামকরা সংস্থার ব্যবসায়ীরা।
করোনা নিয়ে রমরমা লাভজনক ব্যবসা । গরীব মধ্যবিত্তের মাথায় হাত।
গরীব পিছিয়ে পড়া মানুষের দেশে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কি ? মানুষের শ্রেফ বেঁচে থাকার নিরাপত্তার দ্রব্যসামগ্রী বেচা।
মানুষ একটা জিনিসের দর নিয়ে টানাটানি করেনা । তা হল জীবনদায়ী ওষুধ এবং এই বিষয়ক বিভিন্ন সামগ্রী । যা দাম তাই দিতে হবে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারত। শয্যা সঙ্কট, অক্সিজেন সঙ্কটে জেরবার গোটা দেশ। রাজ্যের ছবিটাও একই। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন দৈনিক সংক্রমণ কমছে। তখনই হাসপাতাল-নার্সিংহোমের খরচ ক্রমশ বাড়ছে। শয্যা থেকে অক্সিজেন, ওষুধ থেকে কোভিড সুরক্ষার খরচ, সবেতেই রমরমা ব্যবসা। কোটি কোটির মুনাফা তুলছেন এক শ্রেণির নামকরা সংস্থার
ব্যবসায়ীরা।
পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ হলেই যে যা পারছে দর হাঁকছে। বজবজ, বেহালা, মহেশতলা, পদ্মপুকুর, সব জায়গার পরিস্থিতি একই।
গত বছরের একটা বড় সময় জুড়ে দেখা গিয়েছিল এই চিত্র। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ বার যা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে অভিযোগ। ভুক্তভোগীদের দাবি, পরীক্ষার নামে রোগীর পরিবারের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মধ্যে দিয়েই এই মুহূর্তে চলছে রমরমা ‘করোনা ব্যবসা’! পুলিশ-প্রশাসন তো বটেই, স্বাস্থ্য দফতরেরও এ নিয়ে হুঁশ নেই বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের বড় অংশের।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সমীক্ষা বলছে
বজবজের সাধারণ নার্সিংহোমে ভর্তি হতে গেলে ডিপোজিট দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ টাকা। সাধারণ শয্যার দৈনিক ভাড়া ৭ হাজার। চিকিৎসকের প্রতিটি ভিজিটের খরচ ২ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এক দিনে কোভিড রোগীর জন্য খরচ ৩৫-৪০ হাজার টাকা। মহেশতলার স্পেশাল হাসপাতালে আইসিইউ-এর জন্য ডিপোজিট দেড় লক্ষ টাকা। সাধারণ শয্যায় ১ লক্ষ। একদিনে রোগীকে দিতে হচ্ছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
সাধারণ পরিকাঠামোর নার্সিংহোম, কিন্তু দরদামে কোনও ছাড় নেই। আইসিইউর দৈনিক খরচ সাড়ে ৯ হাজার টাকা। প্রতি ভিজিটে চিকিৎসক নেবেন ২ হাজার টাকা করে। অর্থাৎ ভর্তির দিনেই খরচ হতে পারে ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ কার্যত খোলাবাজের কালোবাজারি। যা প্রাপ্য তার থেকে কয়েকগুণ বেশি টাকা। সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে এভাবেই রমরমিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছেন একাংশ। করোন ঠেকাতে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
জনৈক ব্যক্তি প্রতারিত হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ যে অনলাইনে হাজারো ভুয়ো ফোন নম্বর ঘুরছে। বাড়িতে বয়স্কদের জ্বরের কারনে কোভিড পরীক্ষার জন্য অনলাইনে খোঁজ করেন। অনলাইন লেনদেনের মধ্যে বিপুল দুর্নীতি , দু’জনের নাম নথিভুক্ত করার জন্য দু’হাজার টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়। কিন্তু জালিয়াতি করে ব্যাঙ্ক থেকে ২২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়।
এছাড়া চলছে মাস্ক , স্যানেটাইজার , পালস অক্সিমিটারের রমরমা ব্যবসা। সবচেয়ে বেড়েছে মাস্কের চাহিদা। লাঠিতে ঝুলিয়ে অথবা পলিথিনের ব্যাগে করে রাস্তায় ঘুরে ঘুরেও বিক্রি করা হচ্ছে মাস্ক ও গ্লাভস। দেশেই তৈরি হচ্ছে পিপিই। এসব সামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সংক্রমণ বাড়তে থাকার পর কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় দরকারি সামগ্রী যেমন অক্সি-মিটার, পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যান, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, ফেস-শিল্ড এমনকি অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিক্রিও ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। কোভিড-১৯ না হলেও অনেকে অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার কিনে বাড়িতে রেখে দিচ্ছেন।
এখন সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বেডের ব্যবস্থা বাড়ানো চেষ্টা চললেও বেসরকারি ক্ষেত্রে এই লাগামহীন ব্যবসার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
এরপর ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারির অভিযোগ আসছে। যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।
We hate spam as much as you do