Tranding

02:20 PM - 01 Dec 2025

Home / Article / ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষাই ভারতের চ্যালেঞ্জ

১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষাই ভারতের চ্যালেঞ্জ

জনমুখী উন্নয়নের প্রাথমিক শর্ত হলো শান্তি, সম্প্রীতি ও সব অংশের জনগণের ঐক্য ও তাদের অংশগ্রহণ। সেই ভিত্তিটাই আজ নড়বড়ে। এই পটুভূমিতেই এই দিনটি বর্তমানে আমাদের দেশে পালনের কথা ভাবতে হবে। শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকতা অনুপ্রবেশের চক্রান্ত চলছে। গত দুই দশকে দেশে সংখ্যালঘু, আদিবাসী, নৃ-গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন বেড়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় দেশত্যাগ করায় তাদের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এ ঘটনা ঐক্যের সংস্কৃতি গঠন ও সমৃদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে হুমকির কারণ।

১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষাই ভারতের চ্যালেঞ্জ

১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষাই ভারতের চ্যালেঞ্জ 


১৯৯২ সাল থেকে জাতি সংঘের উদ্যোগে ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবস পালিত হচ্ছে, ঠিক যার মাত্র বারো দিন আগে ৬ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল।
 জাতিসংঘ ১৯৯২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঘোষণা করে যে, প্রতি বছর এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এখানে সংখ্যালঘু বলতে জাতিসংঘ বলেছে, ধর্মীয়, ভাষাগত, জাতিগত ও সংস্কৃতিগত সংখ্যালঘুদের বুঝিয়েছে।
জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশ নিজের ভূখণ্ডের সীমার মধ্যে ধর্মীয়, ভাষাগত, জনগোষ্ঠীগত, সংস্কৃতিগত সংখ্যালঘুদের স্বার্থকে রক্ষা করবে এবং তাদের পরিচিতির প্রকাশ ও উন্নয়ন ঘটাতে উৎসাহ দান করবে। বহু আগেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদে সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা বলা হয়। জাতিসংঘ তার মানবাধিকার সনদের ৩০ নম্বর ধারায় এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চুক্তির ২৭ নম্বর ধারায় ধর্মীয়, ভাষাগত, জাতিগোষ্ঠীগত ও সাংস্কৃতিক সংখ্যালঘু জনগণের অধিকারের বিষয়টিকে নিশ্চিত করার কথা বলেছে।
বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য হলো আমাদের দেশের মর্মবাণী।  মুসলিম ছাড়াও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী, পাহাড়ি ও অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীরাও রয়েছে আমাদের দেশে। নৃ-গোষ্ঠীগুলোর নিজস্ব ভাষা রয়েছে।
গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের দেশের সংবিধানের অন্যতম ভিত্তি। এই ভিত্তিটাই আজ আক্রান্ত। সংবিধানে নির্দিষ্ট একটি ধর্মকে স্থান দিয়ে সব জাতিগোষ্ঠীর সমন্বিত অধিকারকে অস্বীকার করা হয়েছে। এতে অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও নৃ-গোষ্ঠীর রাষ্ট্রীয় অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ধর্মীয় মৌলবাদের প্রসারে উৎসাহ জুগিয়েছে। 


ফলে সমগ্র দেশে সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি, সহাবস্থান ও সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশ হুমকির মুখোমুখি। 


জনমুখী উন্নয়নের প্রাথমিক শর্ত হলো শান্তি, সম্প্রীতি ও সব অংশের জনগণের ঐক্য ও তাদের অংশগ্রহণ। সেই ভিত্তিটাই আজ নড়বড়ে। এই পটুভূমিতেই এই দিনটি বর্তমানে আমাদের দেশে পালনের কথা ভাবতে হবে। শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকতা অনুপ্রবেশের চক্রান্ত চলছে। গত দুই দশকে দেশে সংখ্যালঘু, আদিবাসী, নৃ-গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন বেড়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় দেশত্যাগ করায় তাদের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এ ঘটনা ঐক্যের সংস্কৃতি গঠন ও সমৃদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে হুমকির কারণ। শাসকদলের সঙ্গে মৌলবাদের  যোগ থাকায় সাম্প্রদায়িক শক্তি বাড়তি রসদ পাচ্ছে। ফলে সাম্প্রদায়িক শক্তির ক্রমবর্ধমান উসকানির মুখে সংখ্যালঘু অধিকার খর্বিত হচ্ছে।


তাই আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবসের ভাবনার সঙ্গে ধর্মীয় সন্ত্রাসের বিপদটিকেও অনুধাবন করতে হবে। কোনো ধর্মেই সন্ত্রাসবাদে মান্যতা নেই। আসলে সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম নেই। তাদের স্বার্থ ধর্ম নয়, ধর্মাতিরিক্ত। তাই আজকের দিনের ভাবনা হোক সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের ঐক্যকে শক্তিশালী করা। ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলন তখনই মজবুত হবে, যখন রাষ্ট্র কোনো ধর্মকে বাড়তি পৃষ্ঠপোষকতা করবে না।
 
জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশ নিজের ভূখণ্ডের সীমার মধ্যে ধর্মীয়, ভাষাগত, জনগোষ্ঠীগত, সংস্কৃতিগত সংখ্যালঘুদের স্বার্থকে রক্ষা করবে এবং তাদের পরিচিতির প্রকাশ ও উন্নয়ন ঘটাতে উৎসাহ দান করবে। বহু আগেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদে সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা বলা হয়।


জাতিসংঘ তার মানবাধিকার সনদের ৩০ নম্বর ধারায় এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চুক্তির ২৭ নম্বর ধারায় ধর্মীয়, ভাষাগত, জাতিগোষ্ঠীগত ও সাংস্কৃতিক সংখ্যালঘু জনগণের অধিকারের বিষয়টিকে নিশ্চিত করার কথা বলেছে।


বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য হলো আমাদের দেশের মর্মবাণী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর আরএসএস মদতপুষ্ট উগ্র হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি কর্তৃক বাবরি মসজিদ ধ্বংস গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলেছিল এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের সম্মানকে ম্লান করেছিল। জাতিসংঘের বিষয়টি নিন্দিত হয়েছিল। জাতিসংঘের এই ঘোষণার পিছনে সেটিও একটি কারণ হিসাবে কাজ করেছে। 


পাশাপাশি এটাও উল্লেখ্য, বহু পূর্বেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদেই সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। জাতিসংঘ তার মানবাধিকারের সনদের ৩০নং ধারায় এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চুক্তির ২৭নং ধারায় ধর্মীয়, ভাষাগত, জাতিগোষ্ঠীগত ও সাংস্কৃতিক সংখ্যালঘু জনগণের অধিকারের বিষয়টিতে সুনিশ্চিত করার কথা বলেছে।


ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী প্রবণতাগুলি মোদি সরকারের অবস্থানে প্রকট হয়েছে। উগ্র ফ্যাসিস্ত হিন্দু মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালনে দেশ ভয়ঙ্কর বিপদের সামনে। সাম্রাজ্যবাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পুষ্ট এই শক্তি নয়া উদারবাদী আর্থিক নীতিরও ধারক-বাহক। 


ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের উত্থানের স্বার্থে বিজ্ঞান নির্ভর গোটা ইতিহাসকে যথেচ্ছভাবে বিকৃত করা হচ্ছে। বিষিয়ে তোলা হচ্ছে গোটা সমাজ। অথচ জনমুখী উন্নয়নের প্রাথমিক শর্ত হলো শান্তি, সম্প্রীতি ও সব অংশের জনগণের ঐক্য ও তাদের অংশগ্রহণ। সেই ভিত্তিটাকেই বিনষ্ট করা হচ্ছে। এই পটভূমিতেই এই দিনটিকে বর্তমানে আমাদের দেশে পালন করার কথা ভাবতে হবে।

Your Opinion

We hate spam as much as you do