প্রায় ১১ বছর আগে চুরি শুরু করে ইরফান। সে এবং তার পরিবারের সদস্যরা দিনমজুর ছিলেন। সে তার বোনের বিয়ের টাকা যোগাড় করতে পারনি বলে তার বোনের বিয়েই হয়নি।
সীতামারির 'রবিন হুড'- জাগুয়ার চোর এর স্ত্রী পঞ্চায়েতের ভোটে জিতে গেল
বিচিত্র দেশে কত কি ঘটে?
উত্তরপ্রদেশের মহম্মদ ইরফানকে চেনেন? দেশের আইনে যার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা। স্রেফ চুরি ডাকাতির।
যে সারা দেশে ডাকাতি করে সম্পদ সংগ্রহ করেছে এবং সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল, বিহারের সীতামারি জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই ইরফানের স্ত্রী ভোটে জয়ী হয়েছে। বিহারের পাপরি ব্লকের ৩৪নং ওয়ার্ড থেকে সে জিতেছে।
অদ্ভুত এই ইরফানের কাহিনী। বহু দিন আগের সেই বিখ্যাত উপন্যাস রবিন হুডের কাহিনী। হ্যাঁ! ইরফান সেই চুরির টাকা নিয়ে কি করেন? টাকা নাকি ঢেলে দেন তার গ্রামের উন্নয়নের কাজে।
চোর হলেও সামাজিক কাজেও যুক্ত ইরফান। তিনি এক কোটি টাকা ব্যয় করে সীতামারি জেলায় তাঁর স্থানীয় জোগিয়া পঞ্চায়েতের সাতটি গ্রামে রাস্তা এবং সরু গলি তৈরি করেছেন।
ইরফানের স্ত্রীর নাম গুলসন। ভালবেসে বিয়ে করার সময় ওরা ছিল হত দরিদ্র। এবার সেই স্ত্রী গুলশান পারভীন জেলা পঞ্চায়েত সদস্য পদে মনোনয়ন জমা দেয় এবং গননার শেষে দেখা যায় সে নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়ে গেছে ।
প্রায় ১১ বছর আগে চুরি শুরু করে ইরফান। সে এবং তার পরিবারের সদস্যরা দিনমজুর ছিলেন। সে তার বোনের বিয়ের টাকা যোগাড় করতে পারনি বলে তার বোনের বিয়েই হয়নি।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ইরফান অন্য রাজ্যে চলে যায় এবং মেট্রো শহর জুড়ে বড় বড় বাংলোতে চুরি করতে শুরু করে। অপরাধ করার আগে সে কখনো ঘরের রেকি করেনি।
পুলিশ জানিয়েছে যে সে দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, গোয়া, পুনে, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম, চেন্নাই সহ অন্যান্য শহরগুলির মতো সমস্ত মেট্রো শহরে চুরি করেছে।
ইরফান মোস্ট ওয়ান্টেড চোর যার বিরুদ্ধে এই শহরগুলিতে ৪০টি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন যে ইরফান উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের কবিনগর এলাকায় একটি চুরির সাথে জড়িত ছিল এবং ১.৫ কোটি টাকার নগদ ও গহনা নিয়ে গেছে।
“আমরা সেপ্টেম্বরে সীতামারহিতে তার জন্মস্থানে অভিযান চালিয়েছিলাম, কিন্তু তাকে ধরতে পারিনি। আমরা সম্প্রতি সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আবারও অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করি। তার গ্রেফতারের পর, স্থানীয় লোকেরা অন্যান্য রাজ্যে তার চুরি সম্পর্কে জানতে পেরেছিল,” পুলিশ কর্মকর্তা যোগ করেছেন।
ইরফানের এখন বিলাসবহুল জীবনযাপন করে এবং জাগুয়ার গাড়িতে চড়ে মেট্রো শহরের অনেক যায়গায় ফ্ল্যাটের মালিক। আবার দরাজ হাতে সমাজসেবাও চলে।
We hate spam as much as you do