গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে জোড়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল মায়ানমার। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম কম্পনটি হয় ভারতীয় সময় সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৭। এর ১২ মিনিট বাদে ফের আঘাত হানে দ্বিতীয় ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৬.৪। প্রথমটির উৎসকেন্দ্র মায়ানমারের ১২ কিলোমিটার উত্তরে। আর দ্বিতীয়টির উৎসকেন্দ্র মায়ানমারের লকসকের ১৫১ কিলোমিটার পশ্চিমে। দু’টি কম্পনের ক্ষেত্রেই উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার নীচে।
মৃত্যুপুরী মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১,৬৪৪, আহত ৩,৪০০-র বেশি
29 March 2025
নিজস্ব প্রতিনিধি: চোখের পললককেও হার মানিয়ে বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। লাশের পাহাড় জমছে ক্রমাগত। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকালে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ১৬৪৪ জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩৪০০ জনের বেশি। নিখোষজ আরও শতাধিক। এখনও বিস্তীর্ণ অংশে ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে সাহায্যের আর্তি জানিয়েছে জুন্টা সরকার। সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে ভারত। এদিন সকালেই ওই ত্রাণ নিয়ে মায়ানমারে পৌঁছেছে বিশেষ বিমান। এমনকি ভারতীয় সেনার তরফ থেকে আহতদের চিকিৎসার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী হাসপাতাল।
গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে জোড়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল মায়ানমার। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম কম্পনটি হয় ভারতীয় সময় সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৭। এর ১২ মিনিট বাদে ফের আঘাত হানে দ্বিতীয় ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৬.৪। প্রথমটির উৎসকেন্দ্র মায়ানমারের ১২ কিলোমিটার উত্তরে। আর দ্বিতীয়টির উৎসকেন্দ্র মায়ানমারের লকসকের ১৫১ কিলোমিটার পশ্চিমে। দু’টি কম্পনের ক্ষেত্রেই উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার নীচে। ওই কম্পন অনুভূত হয় প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ–পশ্চিম চিনে। ভূমিকম্প এতটাই শক্তিশালী ছিল যে ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ব্যাঙ্ককের নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। জোড়া আঘাতে তছনছ হয়ে গিয়েছে মায়ানমারের বহু এলাকা। শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে মান্দালয়ের ঐতিহাসিক আভা সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঐতিহাসিক মান্দালয় প্রাসাদ। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সাগাইং, মান্দালয়, ম্যাগওয়ে এবং উত্তর-পূর্ব শান রাজ্য, নেপিদো কাউন্সিল এবং বাগোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিদোতে অবস্থিত ১,০০০ শয্যার হাসপাতালে শ’য়ে-শ’য়ে রোগী ভিড় করছেন। কেউ কেউ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, কারও শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। জখমদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে অনেকেই হাসপাতাল চত্বরেই মৃত্যুর কলে ঢলে পড়ছেন। মায়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং হাসপাতালে গিয়ে আহতদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন।
রাজধানী নেপিদোতে শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য কর্মীরা কাজ করছেন। যদিও শহরের বেশিরভাগ অংশে বিদ্যুৎ, ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে ধসে পড়া ভবনগুলোর মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসস্থলও ছিল। শহরের বড় একটি হাসপাতালও মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
অন্যদিকে, শুক্রবার মায়ানমারে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কক। ৩০ তলা উঁচু একটি নির্মাণাধীন ভবন সহ বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছিল। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে পড়া শ্রমিক ও বাসিন্দাদের উদ্ধারের কাজ চলছে। ব্যাঙ্কক শহর কর্তৃপক্ষ শনিবার দুপুরে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ছয় জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এছাড়া ২৬ জন আহত এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিহত ও নিখোঁজদের বেশিরভাগই রাজধানীর চাতুচাক বাজারের কাছে ধসে পড়া ভবনের শ্রমিক।
We hate spam as much as you do