শুক্রবার শতকা ইনস্টিটিউশনে ৭৫ বছর বয়সি রুশদির উপর হামলা চালানো হয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গোটা প্রেক্ষাগৃহ খালি করে দেওয়া হয়। নিউ ইয়র্কের পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার করা হয়েছে হামলাকারীকে। পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন
নিউ ইয়র্কে ছুরিবিদ্ধ সলমন রুশদি, হামলাকারীকে আটক করল পুলিশ
নিউ ইয়র্কের মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে ছুরিকাহত হলেন সলমন রুশদি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বুকারজয়ী লেখককে।
১২ অগস্ট ২০২২
মঞ্চে বক্তৃতা করতে উঠেছিলেন। এমন সময় আচমকা ছুরি দিয়ে আক্রমণ। নিউ ইয়র্কে দুষ্কৃতী-হামলায় গুরুতর আহত হলেন বুকারজয়ী লেখক সলমন রুশদি। ঘটনার পরই লেখককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শুক্রবার শতকা ইনস্টিটিউশনে ৭৫ বছর বয়সি রুশদির উপর হামলা চালানো হয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গোটা প্রেক্ষাগৃহ খালি করে দেওয়া হয়। নিউ ইয়র্কের পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার করা হয়েছে হামলাকারীকে। পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন ধৃত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঞ্চে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করানো হচ্ছিল রুশদিকে। সেই সময় তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন দুষ্কৃতী। সূত্রের খবর, রুশদিকে অন্তত ১০-১৫ বার কোপানো হয়েছে। ক্রমাগত তাঁর ঘাড়ে আঘাত করা হয়েছে। লেখককে এয়ারলিফ্ট করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তবে বর্তমানে তিনি কেমন আছেন, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি হাসপাতালের তরফে।
রুশদির কলম থেকেই বেরিয়েছিল ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’। যে বইয়ের কারণে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনি। অপরাধ— ‘ধর্মদ্রোহ’। খোমেইনি মারা গিয়েছেন, কিন্তু ‘ফতোয়া’ জারি থেকেছে বছরের পর বছর। সলমনের মাথার দাম রাখা হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার।
ওই বইয়ের কারণেই নব্বইয়ের দশকে ইটালির মিলানে রুশদির উপর হামলা চালানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জাপানি অনুবাদক হিতোসি ইগারাসিকেও ছুরি মেরে খুন করা হয় টোকিয়োর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
‒‒:‒‒/‒‒:‒‒
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে রুশদি এক বার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘‘সে সময়ে ইসলাম তেমন কোনও বিষয় ছিল না। কেউ অত ভাবতও না। এখন যেটা হয়েছে, পশ্চিমের মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল। বইটা সম্পর্কে সত্যিই ভুল বোঝা হয়েছিল। সত্যি, লন্ডনের দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের নিয়ে লেখা।’’
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক ১৩ বছর বেনামে কাটিয়েছেন। প্রতিনিয়ত পুলিশি পাহারায় কার্যত ‘বন্দি’ থেকেছেন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে ‘ছদ্মনামে’র জীবন থেকে বেরিয়ে আসেন রুশদি। তার বছর তিনেক আগেই তেহরান ঘোষণা করেছিল, লেখকের বিরুদ্ধে জারি হওয়া পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। গত বিশ বছর ধরে নিউ ইয়র্কেরই বাসিন্দা রুশদি।
১৯৮১-তে বুকার পেয়েছিল রুশদির সাড়াজাগানো উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’। এর পর ২০০০ সালে তাঁর ‘মুরস লাস্ট সাই’ বইটিও বুকারের মনোনয়ন তালিকায় উঠেছিল। তার ১৯ বছর পর ২০১৯ সালে বুকার পুরস্কারের সম্ভাব্য প্রাপকের তালিকায় ঠাঁই পায় রুশদির ‘কিশোট’ উপন্যাস।
We hate spam as much as you do