দীপঙ্করের কথায়, “বাবা-মায়ের খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতেই এতদূর আসা। সেটা করবই।” তিনি আরও বলেন, “আমার বাবা ছিলেন সিপিআইএম পার্টির সক্রিয় সদস্য। যে রাতে বাবা-মাকে ওরা পুড়িয়ে মেরেছিল, তার পরের দিন সকালে ছিল পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন। ওরা আমার বাবা-মাকে খুন করে সারা এলাকায় ভয় ধরাতে চেয়েছিল। আজ পর্যন্ত দোষীরা শাস্তি পায়নি। সেটা আমিই এবার করব।”
খুন হওয়া সিপিআইএম কর্মী দম্পতির ছেলে দীপঙ্কর আইনে স্নাতক হল। বাবা মায়ের খুনের বিচার চায়
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
২০১৮ পঞ্চায়েত ভোট শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই এক দম্পত্তিকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল দলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি কাকদ্বীপের নামখানা ব্লকের বুধাখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছাড়ি বাড়ি গ্রামের ২১৩ নং বুথে। সিপিআইএম কর্মী দেবু দাস ও তাঁর স্ত্রী ঊষা দাসকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ এসেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে।
রাত ১২ টা নাগাদ দেবু দাসের ঘরের ভিতরে জানলার ফাঁক দিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা আগুন লাগিয়ে দেয় বলে জানা যায়। ঘরে তখন ঘুমোচ্ছিলেন দেবু দাস এবং তাঁর স্ত্রী ঊষা দাস। পরিবারের বাকি সদস্যরা অন্য ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনে ঝলসে যায় দেবু দাস ও তাঁর স্ত্রী ঊষা দাস। রাত দেড়টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে ঘর থেকে দেবু দাস ও ঊষা দাসের অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রাত ২ টো নাগাদ সুন্দরবন পুলিস জেলার পুলিস সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন সিপিএম-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক শমীক লাহিড়ি। তার করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন যে, রবিবার সকাল থেকেই দেবু দাসকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল প্রার্থী অমিত মণ্ডল এবং তাঁর সঙ্গীদের প্রতি অভিযোগ আসে।
সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ির অভিযোগ, অমিত মণ্ডল এবং তাঁর কয়েক জন সঙ্গী- শিবপ্রসাদ মণ্ডল, চন্দন গিরি, এসকে মণিরুল, গোকুল জানারা সমানে দেবুকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এরসঙ্গে স্থানীয় কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী রয়েছে বলে অভিযোগ শমীক লাহিড়ির। এরা দেবুকে হুমকি দিত বলে তিনি পুলিস সুপারের কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু এখনও সর্ট সার্কিটের কথা বলা হচ্ছে। আজ চার বছর পর অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানা।
ওদের ছেলে দীপঙ্কর বাড়িতে ছিল না। তারপর থেকে এই শহীদ পরিবারের সন্তান দীপঙ্কর দাসের জীবন রক্ষা ও পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব তুলে নেয় সিপিআই(এম) পার্টি। অভিভাবক হয়ে ওঠেন সিনিয়র উকিলরা। অনেক মানুষের ভালোবাসা, আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতায় মুলত বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য ও সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়দের সহযোগিতায় দীপঙ্কর আইনের স্নাতক হ'লো। মোট ৮১% নম্বর পেয়ে। ওর শপথ- শহীদ বাবা-মায়ের সুবিচার ও
হত্যাকারীদের সাজার মামলায় নিজেই আদালতে সওয়াল করবে দীপঙ্কর।
দীপঙ্করের কথায়, “বাবা-মায়ের খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতেই এতদূর আসা। সেটা করবই।” তিনি আরও বলেন, “আমার বাবা ছিলেন সিপিআইএম পার্টির সক্রিয় সদস্য। যে রাতে বাবা-মাকে ওরা পুড়িয়ে মেরেছিল, তার পরের দিন সকালে ছিল পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন। ওরা আমার বাবা-মাকে খুন করে সারা এলাকায় ভয় ধরাতে চেয়েছিল। আজ পর্যন্ত দোষীরা শাস্তি পায়নি। সেটা আমিই এবার করব।”
We hate spam as much as you do