স্তালিনের মতে, ‘সাম্যতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সামাজিক ন্যায়ে যাঁরা বিশ্বাস করেন, কেবলমাত্র তাঁরা জোটবদ্ধ হলেই রুখে দিতে পারবেন ধর্মান্ধতা এবং সাম্প্রদায়িক আধিপত্য।’ কারা তাঁর এই সামাজিক সংগঠনে থাকবেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে সেই সব প্রতিনিধির নামও চেয়েছেন ডিএমকে প্রধান।
সাম্প্রদায়িক আধিপত্যবাদের হুমকির মুখে দেশ, ৩৭ নেতাকে চিঠি স্তালিনের
দেশ বাঁচাতে ৩৭ জন জাতীয়স্তরের নেতাকে চিঠি দিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্তালিন।
দেশ বিপদের মুখে। তাই দেশ বাঁচাতে ৩৭ জন জাতীয়স্তরের নেতাকে চিঠি দিলেন ডিএমকে প্রধান এম কে স্তালিন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘দেশ ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িক আধিপত্যবাদের হুমকির মুখে।’ সাধারণতন্ত্র দিবসের দিনই তৈরি করেছেন, ‘অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন ফর সোশ্যাল জাস্টিস’। চিঠিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের তাঁর এই নতুন সংগঠনের ছাতার তলায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্তালিন। এজন্য আঞ্চলিকতাবাদ বা দলীয় রণকৌশলের মত ক্ষুদ্র সীমা অতিক্রমেরও পরামর্শ তিনি দিয়েছেন।
স্তালিনের মতে, ‘সাম্যতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সামাজিক ন্যায়ে যাঁরা বিশ্বাস করেন, কেবলমাত্র তাঁরা জোটবদ্ধ হলেই রুখে দিতে পারবেন ধর্মান্ধতা এবং সাম্প্রদায়িক আধিপত্য।’ কারা তাঁর এই সামাজিক সংগঠনে থাকবেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে সেই সব প্রতিনিধির নামও চেয়েছেন ডিএমকে প্রধান। সামাজিক সংগঠন হলেও কার্যত বিরোধী রাজনৈতিক দলের জোটের কায়দায় তাঁর এই সংগঠন অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি মেনে চলবে। এমনটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন স্তালিন।
তাঁর চিঠি যেমন বিরোধী প্রথমসারির নেতাদের প্রায় প্রত্যেকেরই কাছে গিয়েছে। তেমনই এআইএডিএমকে, পিএমকে, ভিসিকের মতো বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের নেতাদেরও পাঠিয়েছেন ডিএমকে প্রধান। সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধি তাঁর এই সংগঠনে থাকুন। এই সংগঠন সামাজিক সাম্যের দাবি জাতীয়স্তরে তুলে ধরুক। এমনটাই চান স্তালিন।
‘সবকিছু সকলের জন্য’- এই নীতিতে আস্থা রেখে সকলের জন্য সমান অর্থ, রাজনীতি, শিক্ষা এবং সুযোগের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করবে ‘অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন ফর সোশ্যাল জাস্টিস’। চিঠিতে এমনটাই জানিয়েছেন ডিএমকে প্রধান।
চিঠিতে স্ট্যালিন লিখেছেন যে, “দমনকারী শক্তি” সামাজিক ন্যায়বিচারের ফ্রন্টের অগ্রগতিকে চ্যালেঞ্জ করছে। তিনি আরও বলেন, নিপীড়িতদের স্বার্থ রক্ষায় সকল প্রগতিশীল শক্তির হাত মেলানো অত্যাবশ্যক। স্ট্যালিন বলেছেন, “সামাজিক ন্যায়বিচার একটি আদর্শ হিসাবে সহজ – ‘সবার জন্য সবকিছু'”। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকেই সমান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ও সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। স্ট্যালিন জানিয়েছেন যে তামিলনাড়ুর “প্রতিটি বালির দানা” সামাজিক ন্যায়বিচার বিপ্লবের যুক্তিবাদী ই ভি রামসামির কথা বলে। যিনি দ্রাবিড় আন্দোলনের জনক পেরিয়ার হিসাবে সম্মানিত। তিনি আরও বলেছেন, “এই অদম্য দর্শনই তামিল সমাজের ভিত্তি তৈরি করেছে এবং গত আট দশকে রাজনীতিকে রূপ দিয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিচারের উপর আমাদের জোর দেওয়ার কারণেই আমরা বৃহত্তর পরিমাণে বৈষম্য দূর করতে এবং সমস্ত ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।” তিনি লিখেছেন, শুধুমত্র সংরক্ষণের ব্যবস্থা এই পরিস্থিতি ঠিক করতে পারবে না। তিনি জাতপাত এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্য দূর করতে “অতিরিক্ত পদক্ষেপ” নেওয়ার ডাক দিয়েছেন এই চিঠিতে।
স্ট্যালিন ১৯৯০ এর দশকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য কোটার জন্য মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একইরকম ঐক্য এবং প্রত্যয় চেয়েছিলেন। গতকাল স্ট্যালিন ব্যবসা করার সহজতার জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট এবং “এক জাতি, এক রেজিস্ট্রেশন” এর সমালোচনা করার পরেই আজ এই চিঠি লেখেন। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলির অধিকার কেড়ে নেওয়ার এবং রাজ্য়ের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ করেছেন। স্ট্যালিনের দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজগাম (DMK) সরকার গত বছর ক্ষমতায় আসার পর থেকে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং রাজ্যগুলির স্বায়ত্তশাসনের বিরোধিতা করে আসছে।
২৬ শে জানুয়ারি, তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচারের জন্য অল-ইন্ডিয়া ফেডারেশন ফর সোশ্যাল জাস্টিস নামে একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। রাজ্য জুড়ে অভিন্নভাবে গৃহীত হওয়ার জন্য একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি নিয়ে আসেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের ফেডারেশনে প্রতিনিধি মনোনীত করতে বলেছেন।
We hate spam as much as you do