শিক্ষাসচিব বলেন, “এটা একটা সিদ্ধান্ত। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন এই সিদ্ধান্ত যথোপযুক্ত স্থান থেকে এসেছে। ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা হয়, তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন। কীভাবে তাঁদের নিয়োগ করা যায়।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “অবৈধ উপায়ে চাকরি প্রাপকদের জন্য এজি ল ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। তারপর ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নেয়।”
‘অবৈধ চাকরি বাঁচাতে মন্ত্রীসভা বৈঠকেই সিদ্ধান্ত ’, শিক্ষাসচিবের মত বিচারপতির চাপে
Nov 25, 2022
বেনামি আবেদন মামলায় এবার শিক্ষাসচিব হাইকোর্টে মন্ত্রিসভার নাম নিয়েছেন। বেনামি আবেদন মামলায় শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে এজলাসে তলব করা হয়েছিল। শুক্রবার হাইকোর্টে মণীশ জৈন সরাসরি জানিয়েছেন, এই শূন্যপদ তৈরি করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার। মন্ত্রিসভার বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এজলাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জবাবদিহিতে বিস্ফোরক দাবি করেন শিক্ষাসচিব। বেআইনি নিয়োগ মামলায় এর আগেও আইনজীবী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বারবার বিস্ফোরক হয়েছেন। এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “রাজ্য কেন বেআইনিভাবে নিযুক্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে? গণতন্ত্র কি আদৌ সঠিক লোকের হাতে রয়েছে? সন্দেহ।” বিচারপতির প্রশ্ন, “বেআইনি নিযুক্তদের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ কেন?”
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে মণীশ জৈন এদিন দাবি করেন, অবৈধ উপায়ে চাকরি প্রাপকদের চাকরি যাবে না, প্রয়োজনে নতুন করে শূন্যপদ তৈরি করে তাঁদের চাকরি বহাল রাখা হবে, এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলা চলাকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশন আইনে এটা নেই, তাও কেন সুপার নিউমারিক পোষ্ট তৈরি হল?”
শিক্ষাসচিব বলেন, “এটা একটা সিদ্ধান্ত। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন এই সিদ্ধান্ত যথোপযুক্ত স্থান থেকে এসেছে। ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা হয়, তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন। কীভাবে তাঁদের নিয়োগ করা যায়।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “অবৈধ উপায়ে চাকরি প্রাপকদের জন্য এজি ল ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। তারপর ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নেয়।”
বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “শুধু বেআইনি নিয়োগ বাঁচাতে এটা কি ঠিক করা হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?” শিক্ষাসচিব উত্তরে জানান. ‘না’। বিচারপতি ফের প্রশ্ন করেন, “আপনার কি মনে হয় না, ক্যাবিনেট তার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে? ক্যাবিনেট সদস্যরা সই করলেন, কেউ সতর্ক করলেন না?” উত্তরে শিক্ষাসচিব বলেন, “আমি সেখানে ছিলাম না।”
বিচারপতি বলেন, ” মন্ত্রিসভা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার নোট দেখান। অবৈধের চাকরি বাঁচানোর জন্য মন্ত্রিসভা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা দেখান।” শিক্ষাসচিবের উদ্দেশে বিচারপতির কড়া উক্তি, “ল ডিপার্টমেন্ট এর উপর চাপাবেন না। এটা যদি রাজ্যের সিদ্ধান্ত হয় আমি শব্দ উচ্চারণ করতে ভাবছি। বেআইনি নিয়োগ কি রাজ্যের সিদ্ধান্ত হতে পারে। অতিরিক্ত ২৬২ কোটি টাকা খরচ কেন রাজ্য বেআইনি নিয়োগের জন্য করবে?”
এরপরই বিচারপতির উল্লেখ্যযোগ্য পর্যবেক্ষণ, “ক্যাবিনেটতে বলতে হবে অযোগ্যদের পাশে নেই। এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে এমন পদক্ষেপ করব, যা গোটা দেশে হয়নি। এটার অর্থ আমাদের গণতন্ত্র সঠিক লোকের হাতে নেই।”
সওয়াল জবাব চলাকালীনই বিচারপতি বলেন, “আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দিতে পারি। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। আমি কিছু প্রশ্ন করতে পারি। ক্যাবিনেট সদস্যদের শোকজ করতে পারি।” তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য মন্তব্য, “আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা বুঝতে পারি। তাঁকে অনেক কিছু সামাল দিতে হয়। কিন্তু কিছু দালাল মুখপাত্র, তাদের স্বার্থ বুঝি না। ” এরপরই বিচারপতির আরও বিস্ফোরক মন্তব্য, ” আমি নির্বাচন কমিশনকে বলব ভাবছি তৃনমূল দলের প্রতীকটাই প্রত্যাহার করতে, দল হিসেবে মান্যতা তুলে নিতে।”
We hate spam as much as you do