সোমবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ওই আলোচনাসভার। আয়োজক ছিল আরএসএসেরই মহিলা শাখা সম্বর্ধিনী ন্যাস। ‘গর্ভ সংস্কার’ শীর্ষক ওই আলোচনা শিবিরে ন্যাসের জাতীয় সংগঠক সচিব মাধুরী মারাঠে ওই গর্ভ সংস্কারের প্রস্তাব দেন। মাধুরী বলেন, ‘‘গর্ভেই শিশুদের গীতা এবং রামায়ণ থেকে পাঠ করে শোনাতে হবে। মায়েদের যোগাসন অভ্যাস করতে হবে। এই অভ্যাস এবং শ্লোক পাঠ চলবে শিশুর জন্মের পর দু’বছর বয়স পর্যন্ত। এতে শিশুর সংস্কৃতিবোধ এবং নীতিবোধ বাড়বে।
গর্ভাবস্থায় শিশুদের 'রামায়ন'-এর পাঠ দিতে বলল আরএসএস মহিলা ন্যাস
১৯ মার্চ ২০২৩
ভ্রুণ থেকেই শিশুকে ভারতীয় সংস্কৃতির শিক্ষা দিতে চায় আরএসএস তথা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ। এই মর্মে দেশের চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের ডেকে পরামর্শও দিল তারা। বলল, মায়ের গর্ভে থাকাকালীনই ভ্রুণকে গীতা পাঠ করে শোনানো হোক। গর্ভবতী মায়েদের কাছে পাঠ করা হোক রামায়ণের শ্লোক এবং স্তোত্র। তা হলে গর্ভে থাকাকালীনই শিশুদের নীতিবোধ তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। শুরু হবে তাদের সংস্কৃতিবান হিসাবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়াও। আরএসএস প্রতিনিধিরা যখন এই প্রস্তাব দিচ্ছেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন নামী চিকিৎসা সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞেরা। এমনকি, দিল্লি এমসের গাইনোকলজিস্টও।
সোমবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ওই আলোচনাসভার। আয়োজক ছিল আরএসএসেরই মহিলা শাখা সম্বর্ধিনী ন্যাস। ‘গর্ভ সংস্কার’ শীর্ষক ওই আলোচনা শিবিরে ন্যাসের জাতীয় সংগঠক সচিব মাধুরী মারাঠে ওই গর্ভ সংস্কারের প্রস্তাব দেন। মাধুরী বলেন, ‘‘গর্ভেই শিশুদের গীতা এবং রামায়ণ থেকে পাঠ করে শোনাতে হবে। মায়েদের যোগাসন অভ্যাস করতে হবে। এই অভ্যাস এবং শ্লোক পাঠ চলবে শিশুর জন্মের পর দু’বছর বয়স পর্যন্ত। এতে শিশুর সংস্কৃতিবোধ এবং নীতিবোধ বাড়বে।
ওই অনুষ্ঠানে গাইনোকলজিস্ট ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা। ন্যাস ওই অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছে খুব শীঘ্রই এই প্রস্তাব নিয়ে দেশের এক হাজার সন্তানসম্ভবা মায়ের কাছে যাবেন তাওরা। পরীক্ষামূলক ভাবে শুরুও করবেন গর্ভাবস্থায় শিক্ষা দেওয়ার প্রক্রিয়াও।
এই আলোচনা নির্দেশিকার মত। বিশিষ্ট যুক্তিবাদী চিন্তকদের মত। "ডাক্তারদের প্রতি 'আর এস এস'-এর নবতম নির্দেশ তথা হুকুম, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের 'মনুসংহিতা'-র পাঠ পড়ান এবং ভারতীয় বকলমে হিন্দু মৌলবাদী 'সংস্কার'-এ (কুসংস্কার)পরিবারকে শিক্ষিত করে তুলুন।"
বলা হচ্ছে -- সমগ্র পরিবার বিশেষ করে জন্মদাত্রী মায়ের মগজ ধোলাই করতে পারলেই মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মদান শুধু সময়ের অপেক্ষা। আধুনিক সমাজকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দিকে পিছিয়ে নিয়ে যাবার 'নাগপুর' ফ্যসিস্ট মুখ্যালয়ের এ এক সূদুর প্রসারী ঘৃণ্য পরিকল্পনা।
প্রশ্ন -
তবে কি আমরা এইভাবেই মানসিকভাবে ভবিষ্যতের 'অভিমন্যু'-দের গর্ভাবস্থাতেই মেরে ফেলার ফ্যাসিস্ট চক্রান্ত সফল হতে দেব ?
শৈশব থেকেই সমাজে মৌলবাদী তথা তালিবানি চিন্তায় অভ্যস্ত, মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ শিশু গড়ার কারখানা বা পরিকাঠামো গড়ে তুলতে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহায়তা করব ?
উত্তর -
না না এবং না।
আমরা পিছিয়ে যেতে পারি না। মানব ইতিহাসের কালচক্র পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় এই সমাজ 'হাজার পাহাড় লক্ষ নদী' অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে।
বিবর্তনের মধ্য দিয়ে তিল তিল করে আজকের এই বিজ্ঞান মনস্ক সমাজ গড়ে তুলতে মানুষ সদা সর্বদা সচেষ্ট হয়েছে।
মানব সভ্যতার আদি লগ্ন থেকে বর্তমান সময় পযর্ন্ত সমস্বরে একটি শব্দই শুধু বারংবার উচ্চারিত হয়েছে - 'ইউরেকা-ইউরেকা-ইউরেকা'।
'আগুন এবং চাকা' থেকে শুরু করে বতর্মান মহাকাশ গবেষণার এই যে ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি তা কিন্তুু কখনো থেমে থাকেনি।
মুক্তমনা বিজ্ঞান মনস্ক সমাজের অগ্রণী শ্রেণীকে ধর্মীয় পীঠস্থান দ্বারা জোর করে 'হেমলক' পান করিয়ে অথবা আগুনে জীবন্ত দগ্ধ করেও বিজ্ঞানের অগ্রগতি রোধ করা যায়নি।
তাই আশা রাখা যায় , কুচক্রীদের চক্রব্যুহ ভেদ করে ভবিষ্যতের 'অভিমন্যু'-রা সাময়িক আাঁধার কাটিয়ে এই সমাজকে জ্ঞানের আলোয় একদিন ভরিয়ে তুলবে।।
We hate spam as much as you do