বিজয় দিবসকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলার খবর এসেছে। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সরকারি অনুষ্ঠানের অব্যবস্থাপনার অভিযোগে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করেন এবং তাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন। ঢাকার শহিদ স্মৃতিসৌধে আওয়ামী লীগ কর্মীরা জামায়াতের হামলার শিকার হন। বিজয় দিবস উপলক্ষে এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
৫৩তম বিজয় দিবসে বাংলাদেশে বামপন্থী ও আওয়ামী কর্মীরা আক্রান্ত
December 17, 2024
মুক্তিযুদ্ধের ৫৩তম বিজয় দিবসে বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনীতি তপ্ত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন বিতর্কে। অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস এই দিনে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে কোনো কথা না বলে নিশানা করেছেন প্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগকে। ইউনূস দাবি করেন, ‘‘৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ একটি নতুন বিজয়ের সাক্ষী হয়েছে।’’ তবে মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনার অবদানের বিষয়ে তিনি একেবারেই নীরব থাকেন। উল্টে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিজয় দিবসের সরকারি কর্মসূচিতে জামায়াত নেতাদের অংশগ্রহণ নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দেশের বৃহত্তম বামপন্থী সংগঠন জাসদ
(বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতন্ত্রী দল) একে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে মুছে ফেলার প্রচেষ্টা বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে পরাজিত শক্তিগুলি এখন পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধারের চক্রান্ত করছে। জাসদের মতে, ২০২৪ সালে জামায়াতের অংশগ্রহণ ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ’কে এক নতুন হুমকির মুখে দাঁড় করিয়েছে।
বিজয় দিবসকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলার খবর এসেছে। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সরকারি অনুষ্ঠানের অব্যবস্থাপনার অভিযোগে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করেন এবং তাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন। ঢাকার শহিদ স্মৃতিসৌধে আওয়ামী লীগ কর্মীরা জামায়াতের হামলার শিকার হন। বিজয় দিবস উপলক্ষে এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি-ও নিজের রাজনৈতিক দাবি তুলতে পিছপা হয়নি। দলের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান তারেক রহমান সমাজমাধ্যমে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে লেখেন, ‘‘বৈষম্যহীন ও বিভাজনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জনগণের ক্ষমতায়নই জাতীয় ঐক্যের একমাত্র উপায়।’’ বিজয় দিবসের মূল বার্তাকে এদিন রাজনৈতিক ইস্যুতে টেনে এনে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দিবসে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এমন বিতর্ক ও সংঘর্ষ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির উপস্থিতি এবং মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে আক্রমণের রাজনীতি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানিয়ে দেশের ঐক্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।
We hate spam as much as you do