ক্ষুদিরাম বলেছিলেন, "আমি ভাল বোমা বানাতে পারি, মৃত্যুর আগে সারা ভারতবাসীকে সেটা শিখিয়ে দিয়ে যেতে চাই"।
শিল্পী – তউসিফ আহমেদ ও পার্থ চ্যাটাজী
শহীদ ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান দিবসের অমলিন ইতিহাস ।
"ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা, ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ, আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।"
বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতা করেই বাংলায় তীব্র ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের সুচনা হয়। তার ঠিক তিন বছরের মধ্যে ক্ষুদিরাম বসুর শহীদ হওয়ায় স্বাধীনতা আন্দোলনে জোয়ার আসে।
ক্ষুদিরামের ফাঁসির খবর শুনে বছর এগারোর নেতাজী সুভাষ সারাদিন না খেয়ে ছিলেন।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আজ ১১১তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ভোর ৫ টায় ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন ১৮ বছরের অগ্নিপুত্র ক্ষুদিরাম বসু। কারাগারের বাইরে তখন সহস্র কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে 'বন্দে মাতরম' ধ্বনি।
বাঙালি সন্তান ক্ষুদিরামকে ফাঁসির মঞ্চে ঝোলানোর পূর্বে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা কি?
এই প্রশ্নে ক্ষুদিরাম যে উত্তর দিয়েছিলেন, শুনে বুক কেঁপে উঠেছিল কারা কর্তৃপক্ষের।
ধুমকেতু ক্ষুদিরাম বলেছিলেন, "আমি ভাল বোমা বানাতে পারি, মৃত্যুর আগে সারা ভারতবাসীকে সেটা শিখিয়ে দিয়ে যেতে চাই"।
মেদিনীপুরেই ঘটেছিল তাঁর বিপ্লব জীবনের অভিষেক।
১৯০২ এবং ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রী অরবিন্দ এবং সিস্টার-নিবেদিতা মেদিনীপুর ভ্রমণ করেন। তাঁরা স্বাধীনতার জন্যে জনসমক্ষে ধারাবাহিক বক্তব্য রাখেন এবং বিপ্লবী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে গোপন অধিবেশন করেন, তখন কিশোর ছাত্র ক্ষুদিরাম এই সমস্ত বিপ্লবী আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
১৯০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মেদিনীপুরের নারাঠা কেল্লায় শিল্প প্রদর্শনী হয়। সেখানে তত্কালীন যুগের বিখ্যাত রাজদ্রোহমূলক পত্রিকা সোনার বাংলা বিলির দায়ে পুলিশ তাঁকে পাকড়াও করতে যায়। কিন্তু ক্ষুদিরাম পুলিশকে মেরে পালিয়ে যান। পরে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
আলিপুর প্রেসিডেন্সি বিচারালয়ের চিফ জজ কিংসফোর্ড অসহ্য হয়ে উঠেছিল।ওকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিপ্লবীদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্যে কিংসফোর্ডকে মজফফরপুর বদলি করা হয়। বিপ্লবী ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল চাকী স্বয়ং কিংসফোর্ডের বাড়ির পাশে হোটেলে থেকে নিরীক্ষণ করতে থাকলেন কিংসের গতিবিধি।
১৯০৬ সালের ৩০ এপ্রিল ঘটে যায় সেই ঘটনা। রাত ৮ টা নাগাদ ব্রিজ খেলা শেষ করে কিংসের খেলার সঙ্গী আইনজীবী কেনেডির স্ত্রী এবং তাঁদের কন্যা ঠিক কিংসের মতোই হুবহু একটি গাড়ি নিয়ে রওয়ানা দিলেন।
গাড়িটি কিংসের বাসভবনের ফটক পার হতে না হতেই শহরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিল প্রচণ্ড বোমার আওয়াজ। ব্যর্থ হল কিংসফোর্ডকে হত্যার সমস্ত চেষ্টা। যার গাড়ি ওড়ানোর চেষ্টা, তাঁর গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল কিছু দূরে অক্ষত অবস্থায়। কেনেডির স্ত্রী ও মেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বোমা নিক্ষেপ করেই দুই বিপ্লবী দৌড় লাগালেন। পরদিন সকালে গ্রেপ্তার হলেন ক্ষুদিরাম। কর্মী প্রফুল্ল চাকীকেও আটক করে পুলিশ। বিপ্লবী চাকী নিজের পিস্তলের গুলিতেই নিজে শহীদ হয়ে গেলেন।
ক্ষুদিরামের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
, সারা ভারতের জনগণের উদ্দীপনার দিন ১১ আগস্ট।
দেশের সর্বত্র খুব শ্রদ্ধা ও আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে, স্বাধীনতা দিবসের ঠিক চারদিন আগে এই দিনটি পালিত হয়।
We hate spam as much as you do