এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, 'আমরা সেই ঘটনার ভিডিয়ো দেখেছি। সেখানে জয়শংকরের নিরাপত্তা বলয় লঙ্ঘন করা হয়েছিল। বিচ্ছিনতাবাদীদের ছোট্ট একটি গোষ্ঠী এবং কট্টরপন্থীদের এই উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। আমরা আশা করছি সেই দেশের সরকার তাদের কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করবে।'
লন্ডনে জয়শংকরের গাড়িতে খলিস্তানি হামলা পুলিশের সামনেই ছেঁড়া হল তেরঙ্গা, নিন্দায় ভারত
Mar 06, 2025
লন্ডনে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের উপর হামলার চেষ্টা খলিস্তানিদের! অভিযোগ, পুলিশের সামনেই ভারতের পতাকা ছিঁড়ে দেয় এক হামলাকারী। কানাডার পাশাপাশি ব্রিটেনেও যে খলিস্তানি চরমপন্থীদের দাপাদাপি ব্যাপক হারে বেড়েছে তা ফের একবার প্রমাণিত হল। এছাড়া বিদেশের মাটিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও বড় প্রশ্ন উঠল। তবে এই ঘটনায় কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গি পান্নুনের ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, 'আমরা সেই ঘটনার ভিডিয়ো দেখেছি। সেখানে জয়শংকরের নিরাপত্তা বলয় লঙ্ঘন করা হয়েছিল। বিচ্ছিনতাবাদীদের ছোট্ট একটি গোষ্ঠী এবং কট্টরপন্থীদের এই উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। আমরা আশা করছি সেই দেশের সরকার তাদের কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করবে।'
মঙ্গলবার ব্রিটেনে পা রাখেন জয়শংকর। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, গতকাল বুধবার একটি আলোচনায় যোগ দিয়ে চ্যাথাম হাউস থেকে বেরচ্ছিলেন জয়শংকর। তখন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল এক দল হলুদ পতাকাধারী। খলিস্তানিদের হয় স্লোগান দিতে থাকে তারা। অভিযোগ, সে সময় এক 'হামলাকারী' ছুটে গিয়ে একেবারে জয়শংকরের কনভয়ের সামনে চলে যায়। পুলিশের সামনেই ভারতের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে। তখন অন্য বিক্ষোভকারীরাও তেরঙ্গাও ছিঁড়ে ফেলে। প্রথমে পুলিশও গোটা বিষয় দেখে হকচকিয়ে যায়। তারপর নিরাপত্তা আধিকারিকরা ওই 'হামলাকারী'কে ধরে ফেলে। বিক্ষোভকারীদেরও সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে কার্যত তাণ্ডব চালায় খলিস্তানিরা। দপ্তরের সামনে জাতীয় পতাকা টাঙানো ছিল, সেটি খুলে ফেলে দিয়ে হলুদ খলিস্তানি পতাকা লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না দূতাবাসের সামনে, সেই নিয়ে ব্রিটিশ প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করে ভারত। মধ্যরাতেই তলব করা হয় ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে। এরপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। সেখানে বলা হয়, খলিস্তানিদের হিটলিস্টে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু তাই নয়, তালিকায় রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরও। সে সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ঋষি সুনাক। জানা গিয়েছিল, ‘খলিস্তানি সন্ত্রাস’ নিয়ন্ত্রণে তহবিল গড়ছে ব্রিটেন। প্রশ্ন ওঠে, ভারতের চাপেই কী এহেন পদক্ষেপ করেছিল ডাউনিং স্ট্রিট? এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে খলিস্তানি উগ্রবাদ ব্রিটেনের এই সময়কার অন্যতম ‘বড় বিপদ' হিসাবে চিহ্নিত করে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়।
তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা জয়শংকরের উপরে হামলার চেষ্টার পিছনে পান্নুনের হাত থাকতে পারে। বলে রাখা ভালো, ২০২৩ সালের জুন মাসে কানাডায় খুন হয় ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্সে’র প্রধান হরদীপ সিং নিজ্জর। ‘শিখস ফর জাস্টিস’-এর কানাডার শাখা হচ্ছে ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’। ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত ছিল নিজ্জর। কিন্তু ভারত ছাড়ার পরে পান্নুন তাকে কানাডায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি নিযুক্ত করে। কয়েকবছর আগেই ‘রেফারেন্ডাম-২০২০ প্রচারাভিযান’-এর দায়িত্বও পায় নিজ্জর। তাঁকে প্রায়শই ভ্যানকোভারের ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যেত। পান্নুন মনে করে, নিজ্জরের হত্যার নেপথ্যে ভারতের হাত রয়েছে। তাই বদলা নিতে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র রচনা করছে সে।
We hate spam as much as you do