গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় ২৮৯ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, তারা এ হামলার ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। ইসরাইলের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, হামাসের সিনিয়র নেতা মোহাম্মদ দেইফ এ হামলার টার্গেট ছিলেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সারাদিন নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করছিলেন বলেও রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে।
গাজার ‘সেফ জোনে’ ইসরাইলি নৃশংস হামলায় নিহত ৭১
১৪ জুলাই ২০২৪
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পশ্চিম এলাকায় আল মাওয়াসিতে ইসরাইলি বিমান হামলায় ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গতকালের এ হামলায় আরো অনেকে আহত হয়েছেন। যে জায়গাটিতে হামলা চালানো হয়েছে, এ স্থানটিকে ইসরাইল আগে থেকেই ‘সেফ জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় ২৮৯ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, তারা এ হামলার ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। ইসরাইলের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, হামাসের সিনিয়র নেতা মোহাম্মদ দেইফ এ হামলার টার্গেট ছিলেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সারাদিন নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করছিলেন বলেও রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানিয়েছেন, যেখানে বিমান হামলা হয়েছে সে জায়গাটি দেখে মনে হচ্ছে সেখানে সেখানে ‘ভূমিকম্প’ আঘাত হেনেছে। ওই এলাকার একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ধোয়াচ্ছন্ন ধ্বংসাবশেষ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় হতাহতদের স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অনেকেই আবার ধংসস্তূপ সরিয়ে সেখান থেকে অনেককে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। যেখানে হামলা চালানো হয়েছে তার পাশেই থাকা কুয়েত ফিল্ড হাসপাতালের কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, সেখানে আহত অনেকেই মেঝেতে পড়ে আছেন। আহতদের চিকিৎসা করানো নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল।
হামাসের একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এ হামলার ভয়াবহতা দেখে মনে হচ্ছে ইসরাইল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যেতে আগ্রহী নয়। হামাসের সামরিক শাখা আল কাশেম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দেইফ এখন ইসরাইলি হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু বলে ইসরাইলি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাস যে হামলা করেছিল, তার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে বলেই মনে করা হয় তাকে। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছিল। একই সময় জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ২৫১ জনকে। এরপর ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজায় যে হামলা চালিয়েছে তাতে ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত সপ্তাহে গাজার খান ইউনিসে ইসরাইলি বিমান হামলায় ২৯ জন নিহত হয়েছে। সেখানকার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই হামলায় আরো অনেক মানুষ আহত হয়।
গাজার উত্তরে অভিযানের মধ্যেই গত বুধবার গাজা শহরের বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যেতে বলেছিল ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। উড়োজাহাজ থেকে লিফলেট ফেলে গাজার বাসিন্দাদের কাছে এই অনুরোধ জানায় ইসরাইলি বাহিনী। সেখানে গাজা শহরকে বিপজ্জনক যুদ্ধ এলাকা হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
দেইর আল-বালাহ এবং আল-জাওয়াইদা এই দুটি রাস্তা দিয়ে তাদের নিরাপদে আশ্রয়ের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। ইসরাইলের এ ঘোষণার পরই এ নিয়ে উদ্বেগ জানায় জাতিসংঘ। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গাজাবাসীদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল।
এদিকে গত দুই সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী গাজার কয়েকটি এলাকায় আবারো প্রবেশ করেছে। ইসরাইলি যোদ্ধাদের ধারণা, হামাসের যোদ্ধারা আবারও সংগঠিত হচ্ছে গাজার বিভিন্ন জায়গায়। তবে হামাস বলছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই ইসরাইলি বাহিনী যে তৎপরতা চালাচ্ছে তা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির আলোচনাকে আরো দীর্ঘায়িত করছে। যুদ্ধবিরতির ওই আলোচনায় মিসর, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি কাতারের প্রধানমন্ত্রীও অংশ নিচ্ছেন।
We hate spam as much as you do