Tranding

03:52 PM - 01 Dec 2025

Home / World / বলিভিয়ায় বাম সরকার উচ্ছেদের সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ, সেনাপ্রধান গ্রেফতার

বলিভিয়ায় বাম সরকার উচ্ছেদের সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ, সেনাপ্রধান গ্রেফতার

সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালস আরসের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেছেন, তিনি তার সমর্থকদের গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে বলছেন। সেনাকে কিছুতেই গণতন্ত্র ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না এবং মানুষকে ভয় দেখাতে দেওয়া হবে না।

বলিভিয়ায় বাম সরকার উচ্ছেদের সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ, সেনাপ্রধান গ্রেফতার

বলিভিয়ায় বাম সরকার উচ্ছেদের সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ, সেনাপ্রধান গ্রেফতার


 28 June, 2024

আরও একবার প্রতিবিপ্লবী অভ‍্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে গেল বলিভিয়ায়। নির্বাচিত বামপন্থী সরকারকে রক্ষা করলেন বলিভিয়ার জনতা।
চে গুয়েভারার বলিভিয়া ফের অশান্ত। বলিভিয়ায় সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ। প্রেসিডেন্টের প্যালেস ঘিরে ফেলেও সেনা সরে যায়। সেনা প্রধান গ্রেপ্তার। লা পাজে সোস্যালিস্ট প্রেসিডেন্ট লুচো আর্সের বাসভবন সেনা ঘিরে ফেলে। প্রেসিডেন্ট বলিভিয়ার নাগরিকদের বলেন, তারা যেন গণতন্ত্র রক্ষা করতে সক্রিয় হন। বিশ্ব নেতারা অভ্যুত্থানের নিন্দা করেন। সেনার এই অভ্যুত্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বুধবার বেলা চারটে নাগাদ তারা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢোকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেনা প্রেসিডেন্টের বাসভবন-সহ সরকারি এলাকা থেকে সরে যায়। প্রেসিডেন্টের নির্দেশ ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করার পর তারা সরে যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যে হাজার হাজার বামপন্থী জনতা রাজধানীর প্রধান স্কোয়্যারগুলির দখল নেন। প্রেসিডেন্ট লুচো আর্সে বলিভিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ক্যু প্রতিরোধের জন্য। 

বলিভিয়ার কর্তৃপক্ষ বিদায়ী সেনাপ্রধান জুয়ান জোস জুনিগাকে গ্রেপ্তার করেছে।
সেনা জওয়ানরা তার প্রাসাদে আসার পর আরসে সামাজিক মাধ্যমে বলেন, বলিভিয়ার সেনার কয়েকটি ইউনিট বেআইনিভাবে জড়ো হয়েছে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে। যখন এই অভ্যুত্থান চলছে, তখনই তিনি নতুন সেনা কম্যান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন। তারা তখন প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও লা পাজের কেন্দ্রে থাকা অন্য জায়গা থেকে সেনাকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। সেনা যখন ফিরে যাচ্ছে, তখন আরসের হাজার হাজার সমর্থক বলিভিয়ার পতাকা নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।


আরসে যখন নতুন সেনা কম্যান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন, তখন বিদ্রোহী সেনাপ্রধান স্বাভাবিকভাবেই বরখাস্ত হয়ে যান। স্থৈানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের ভিতরে আরসের সঙ্গে জুনিগার কথা হচ্ছে। আরসে তাকে ও সেনাকে বলছেন, আমি আপনাদের ক্যাপ্টেন, আমি নির্দেশ দিচ্ছি, আপনারা ফিরে যান। আমি কোনো অবাধ্যতা বরদাস্ত করব না।জুনিগা টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, তার আশা ছিল সরকারে পরিবর্তন হবে। তিনি সাবেক অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালস আরসের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেছেন, তিনি তার সমর্থকদের গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে বলছেন। সেনাকে কিছুতেই গণতন্ত্র ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না এবং মানুষকে ভয় দেখাতে দেওয়া হবে না।
স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বলিভিয়া দুইশোটির মতো সেনা অভ্যুত্থান ও বিদ্রোহ দেখেছে। ২০১৯ সালে মোরালসকে যখন ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়, তখনো তার পিছনে সেনার ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তিনি নিয়ম ভেঙে চতুর্থবার প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেনা জানিয়ে দেয়, তারা তাকে তার অফিসে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। এরপর মোরালস পদত্যাগ করেন এবং তার সমর্থকরা অভিযোগ করেন, এটাও সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা।

বলিভিয়ার ক্ষমতাসীন বামপন্থী দল 'মুভমেন্ট ফর সোস্যালিজম' এখন দুই টুকরো। একাংশের নেতৃত্বে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস, অন্য অংশের নেতৃত্বে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুচো। আগামী বছর নির্বাচন। তার আগে তিক্ত সংঘাত চলছে দুই পক্ষের মধ্যে। সেই সুযোগে নির্বাচিত বামপন্থী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চাইছিল সেনাবাহিনীর একাংশ।

জেনারেল জুনিগার অভ‍্যুত্থান প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন মোরালেসও৷ সেনাবাহিনীকে রুখতে দেশের সর্বত্র ব্যারিকেড তৈরি করতে বলেছিলেন তিনি৷ মোরালেস অভিযোগ করেছেন, এই চক্রান্তের পিছনে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক হল,
প্রতিবিপ্লবী অভ‍্যুত্থান প্রতিরোধে যুযুধান দুই বাম নেতাই গণজমায়েতের ডাক দিয়েছিলেন। বন্দুকের চেয়েও বেশি ভরসা করেছিলেন জনতার উপরেই।ঢ

Your Opinion

We hate spam as much as you do