এদিকে সময় যত গড়াচ্ছে ততই বিক্ষোভের আঁচ বাড়ছে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রীর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের দাবিতে এককাট্টা হয়েছেন পড়ুয়ারা। সকাল উত্তাল আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ চত্বর। এদিন খবর জানাজানি হতেই বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বও পৌঁছে যান হাসপাতাল চত্বরে
আরজি করের ছাত্রী 'খুন' এর প্রতিবাদে মীনাক্ষীদের অবরোধ,ধস্তাধস্তি পুলিশের সঙ্গে
9th August 2024
আরজি কর হাসপাতালে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে ক্রমশ রহস্য দানা বাঁধচ্ছে। জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। এবার ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে ছাত্রীর দেহ নিয়ে বেরোতেই গাড়ি আটকে দিলেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। তাঁদের দাবি, বাড়ির লোকের সঙ্গে ২ মিনিট কথা বলতে দিতে হবে। আর সেই দাবিতেই পুলিশের সঙ্গে শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি।
শুক্রবার বেলা পাঁচটা নাগাদ ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি করের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রীর দেহ। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হয় ময়নাতদন্ত। এর জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর বাড়ির লোক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে ওই কমিটিতে।
রাত ৮টা নাগাদ ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে ছাত্রীর দেহ বেরোতেই গাড়ি ঘিরে ধরেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ বাম নেতা-কর্মীরা। আরজি কর হাসপাতালের সামনে রাস্তার একটি লেন আটকে দেন তাঁরা। রাস্তা থেকে তাঁদের সরাতে পুলিশের সঙ্গে তুমুল বচসা শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাঁধে মীনাক্ষীদের। রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয় আরজি কর হাসপাতালে। এরপর বেশ অনেকক্ষণ বাদে খোলে রাস্তা। ছাত্রীর দেহ নিয়ে এগিয়ে যায় গাড়ি।
এদিকে সময় যত গড়াচ্ছে ততই বিক্ষোভের আঁচ বাড়ছে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রীর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের দাবিতে এককাট্টা হয়েছেন পড়ুয়ারা। সকাল উত্তাল আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ চত্বর। এদিন খবর জানাজানি হতেই বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বও পৌঁছে যান হাসপাতাল চত্বরে। তাঁদের দাবি, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করুক পুলিশ। অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক তাঁদের বিরুদ্ধে।
বিকেলের পর শহরের অন্য মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররাও ভিড় জমাতে থাকেন হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় হাসপাতালে। আনা হয়েছে ব়্যাফও। কেন সকাল ১১টায় দেহ উদ্ধারের পরেও বিকেল পর্যন্ত দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে না তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পড়ুয়ারা।
এদিকে তরুণী চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ। তবে মৃতার মায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। ‘অর্ধনগ্ন’ অবস্থায় জুনিয়র ডাক্তারের দেহ পড়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত্যুর ঘটনার দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান ছাত্রীর বাবা।
শুক্রবার সকালে আরজি করের ইমার্জেন্সি বিভাগের চার তলায় সেমিনার হল থেকে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ডিউটিতে ছিলেন তিনি। দুই চিকিৎসকের সঙ্গে খাওয়ার পরে রাত ২টো নাগাদ সেমিনার হলে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। তারপর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এরপর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হাসপাতালের কর্মীরা ছাত্রীর দেহ দেখতে পান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়ার দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও অর্ধনগ্ন অবস্থায় তাঁকে পাওয়া গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। মৃতের চিকিৎসক বন্ধুদের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। আবার ধর্ষণ করে খুনেরও অভিযোগ তুলেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। শুক্রবার সকালের এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত সরকারি হাসপাতালে।
We hate spam as much as you do