বুধবার অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে রাস্তায় নামল তারা। যা দেখে মিছিল শুরুর আগে মহাজাতি সদনের সামনের সভা থেকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বললেন, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, কলকাতা আবার কলকাতায় ফিরেছে।’’
প্যালেস্টাইনকে সংহতি জানাতে বাম মিছিলে উত্তাল কলকাতা
০৮ নভেম্বর ২০২৩
অমানবিক ঘটনা চলছে প্যালেস্টাইনে কার্যত ইসরাইল প্যালেস্টাইনকে দখল করতে চাইছে। বেছে বেছে শিশু মহিলা অসুস্থদের হত্যা করা হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে স্কুল হাসপাতাল। সমস্ত খাদ্য পানীয় সরবরাহ বন্ধ। সবাই সমস্ত গাজার মানুষকে মিশরে চলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। গাজা এখন শ্মশান । দশ হাজার মৃত্যু ঘটেছে। অপরদিকে হামাসের আক্রমণে ইসরাইলেরও ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরাইলকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে মদত দিচ্ছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের যুদ্ধ বিরোধী প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তা সত্ত্বেও প্যালেস্টাইনের উপর আক্রমণ চলছে।
প্যালেস্তাইনের প্রতি ‘সংহতি’ জানিয়ে বুধবার কলকাতায় মিছিল করল বাম দলগুলি। বামফ্রন্টের বাইরে থাকা একাধিক বামদলও শামিল হয়েছিল সেই মিছিলে। মিছিলের ভিড় ছিল নজর কাড়ার মতো। মহাত্মা গান্ধী রোড দিয়ে শিয়ালদহ উড়ালপুলের দিকে যাওয়ার সময়ে কলেজ স্ট্রিট মোড়টুকু পেরোতেই মিছিলের সময় লাগল আধঘন্টা। মিছিলের মুখ যখন কলেজ স্ট্রিট মোড়ে, তখন ঘড়িতে দুপুর ২টো ৩৮ মিনিট। মিছিলের শেষপ্রান্ত যখন মহাজাতি সদন তখন দুপুর ৩টে ১২ মিনিট।
মহজাতি সদন থেকে শুরু হয়ে মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে শিয়ালদহ উড়াল পুল, মৌলালি মোড় দিয়ে গিয়ে মৌলালির অদূরে রামলীলা পার্কে শেষ হয় মিছিল। ফ্রন্টের বাইরে থাকা দলগুলির মধ্যে সিপিআইএমএল লিবারেশন এবং এসইউসির জমায়েতও ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনেক দিন পর কলকাতায় কোনও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মিছিল করল বাম দলগুলি। আগে প্রতি বছর ১ সেপ্টেম্বর বামদলগুলি ‘যুদ্ধবিরোধী শান্তিমিছিল’ করত কলকাতায়। ১৯৩৯ সালে ওই দিনই পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধের সূচনা হয়েছিল। তারও আগে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে হো চি মিনের দেশের জন্য কলকাতার বাম আন্দোলন মাইলফলক হয়ে রয়েছে। ইদানীং কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধেই কেন্দ্রীয় কর্সসূচি করে বামেরা। বুধবার অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে রাস্তায় নামল তারা। যা দেখে মিছিল শুরুর আগে মহাজাতি সদনের সামনের সভা থেকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বললেন, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, কলকাতা আবার কলকাতায় ফিরেছে।’’
প্যালেস্তাইনের প্রতি সংহতি জানানোর পাশাপাশি ইজ়রায়েলের প্রতি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘দরদ’ নিয়েও সরব হন বাম নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, ভারতের বিদেশনীতির অতীত বিসর্জন দিয়েছে দিল্লি। যা মোটেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাল বার্তা দিচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, বাংলায় লোকসভা ভোটে তৃণমূল ও বিজেপি-বিরোধী সব দলকে এককাট্টা করতে আলোচনা শুরু করার দিকে এগোচ্ছে সিপিআইএম। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট চাইছে সেই আলোচনায় লিবারেশন, এসইউসির মতো বাম দলগুলিকেও শামিল করতে। চলতি সপ্তাহের শেষে অথবা আগামী সপ্তাহের গোড়া থেকে সব বাম দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু করবে সিপিআইএম। তার আগে সব বামদল একসঙ্গে হাঁটল প্যালেস্তাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে একই মিছিলে।
We hate spam as much as you do