মামলাকারী রেশন ডিলারদের দাবি, রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প কেন্দ্রীয় রেশন বণ্টন আইনের পরিপন্থী। প্রকল্পটি একাধারে খরচ সাপেক্ষ। সেই সঙ্গে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে পরিমাণ অর্থ, যে কর্মচারী সঙ্কুলান প্রয়োজন, সেটাও অধিকাংশ রেশন ডিলারদের কাছে নেই
দুয়ারে রেশন’-কেন্দ্রীয় রেশন বণ্টন আইনের পরিপন্থী, ডিলাররা হাইকোর্টে
রাজ্য সরকারে 'দুয়ারে রেশন'-এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ডিলাররা আদালতে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই নিজের স্বপ্নের প্রকল্প ‘দুয়ারে রেশন’ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই প্রকল্পকেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন খোদ রেশন ডিলারদের (Ration Dealer) একাংশ। দুয়ারে রেশন দেওয়ার বিরুদ্ধেই সরব হয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কি তা বোঝা যাচ্ছে না।
মামলাকারী রেশন ডিলারদের দাবি, রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প কেন্দ্রীয় রেশন বণ্টন আইনের পরিপন্থী। প্রকল্পটি একাধারে খরচ সাপেক্ষ। সেই সঙ্গে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে পরিমাণ অর্থ, যে কর্মচারী সঙ্কুলান প্রয়োজন, সেটাও অধিকাংশ রেশন ডিলারদের কাছে নেই। এই প্রকল্পের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করাও হয়নি বলে দাবি করেছেন ডিলাররা।
মামলাকারী রেশন ডিলাররা দাবি করেছেন, বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া আইন বিরুদ্ধ। সেই পরিকাঠামো রেশন ডিলারদের নেই বলে দাবি মামলাকারীদের। ডিলারদের দাবি, আইন অনুযায়ী রেশন প্রাপক দোকানে এসে রেশন নেবেন, এটাই নিয়ম।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়ার জন্য ডিলারদেরই গাড়ির খরচ, প্রচারের খরচ এবং সংরক্ষণের খরচ বহন করতে হবে। দায়ের হওয়া মামলায় ডিলাররা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই বিপুল খরচ তাঁরা বহন করতে পারবেন না। পাশাপাশি ডিলারদের এত লোকবল নেই বলেও তাঁরা দাবি করেছেন। এ ক্ষেত্রে নিজেদের সমর্থনে যুক্তি সাজিয়ে মামলাকারীরা দিল্লির উদাহরণ টেনেছেন। যেখানে এই একই ধরনের প্রকল্প আনার চেষ্টা হয়েছিল, কেন্দ্র অনুমোদন দেয়নি।
অন্যদিকে, রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালতকে পালটা জানানো হয়েছে, রেশন প্রাপকের কথা মাথায় রেখে সরকার আইন সংস্কার করতে পারেন। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে রাজ্য আরও জানায়, শুধু সেপ্টেম্বর মাসের জন্য এটা একটা পরীক্ষামূলক প্রকল্প। প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা দেখে বাকি সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।
এখানেই থেমে না থেকে রাজ্য সরকার আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতকে জানায়, রাজ্যের এই প্রকল্পের জেরে ডিলারদের অধিকার ক্ষুন্ন হয় না। রাজ্যের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য ডিলাররা। শুধু তাই নয়, পরিবহন এবং অন্যান্য খরচ বহন করতেও রাজ্য সাহায্য করছে দাবি করেছেন সরকারি আইনজীবী। আগামিকাল ফের এই মামলাটির শুনানি রয়েছে হাইকোর্টে।
নিঃসন্দেহে রেশন ডিলারদের দাবীর যৌক্তিকতা আছে। আবার রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কি বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারবেন তাও বিচার্য।
ছবি - সংগৃহিত
We hate spam as much as you do