অজানা জ্বরের (Mystery Fever) প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। ৮ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর খবর এসেছিল আগেই। এখনও পর্যন্ত এই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তিন শিশুর।
উত্তরবঙ্গে শিশুরা আক্রান্ত অজানা জ্বরে, তিনজনের মৃত্যু
উত্তরবঙ্গে শিশুরা ভয়ংকর জ্বরে আক্রমনের খবর এসেই চলেছে। ভেঙে পড়ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা।
গত কয়েকদিন ধরেই জলপাইগুড়িতে একের পর এক শিশুর শরীরে ভাইরাল ফিভারের লক্ষন দেখা দেয়। এবার সেই জ্বর কেড়ে নিল ছয় বছরের শিশুর প্রাণ। মৃতের নাম কাবেরী রায়। তবে চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন জ্বর নিয়ে যে শিশুরা হাসপাতালে আসছে তাদের করোনা হয়নি। কিন্তু কেন তারা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে সেটাই জানার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরে মেখলিগঞ্জ থেকে জ্বরে আক্রান্ত শিশুটিকে নিয়ে আসা হয়েছিল। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে তার চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।তার বুকে সর্দি জমে গিয়েছিল। শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল তার। নিমোনিয়ার লক্ষ্ণণও ছিল। পরে তার মৃত্যু হয়। অন্যান্যদের খিঁচুনি, সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়ারিয়া হচ্ছে। ১২০জনেরও বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালের শিশু বিভাগের বেড বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের রক্তপরীক্ষা করে জাপানি এনকেফালাইটিসের জীবাণু পাওয়া যায়নি, তেমনই চিকেনগুনিয়া, স্ক্রাব টাইফাস বা এনএস-ওয়ানের (NS-1) সংক্রমণও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ আধিকারিক।
তিন শিশুর মৃত্যুর পরও জানা গেল না কোন জ্বর! আক্রান্ত পাঁচ শতাধিক
গত কয়েকদিনে অজানা জ্বরের প্রকোপে উদ্বেগ বেড়েছে জলপাইগুড়িতে।
অজানা জ্বরের (Mystery Fever) প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। ৮ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর খবর এসেছিল আগেই। এখনও পর্যন্ত এই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তিন শিশুর। গুরুতর অসুস্থ শিশুর সংখ্যা সব মিলিয়ে ৫০-এর পঞ্চাশের কাছাকাছি। সরকারি নথি অনুযায়ী ৫০০-র বেশি শিশু অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। আর এই ঘটনা কার্যত বেআব্রু করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে। বিশেষত শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামোর হতশ্রী চেহারাটা ক্রমশ সামনে আসছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ সামলাতে এবং শিশুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য ভবন ঘোষণা করেছিল যে গোটা রাজ্যে প্রস্তুতি চলছে। বাড়ানো হচ্ছে বেড। আইসিইউ, পিকু, নিকু সহ পেডিয়াট্রিক এক্সপার্টদের নিয়ে তৈরি হয়েছে টিম। তৃতীয় ঢেউ কবে আসবে জানা নেই। তবে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং কোচবিহার সংলগ্ন এলাকায় শিশুদের এই আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাতেই বেআব্রু হয়ে পড়েছে সরকারি সেই ব্যবস্থা। হাসপাতালে গাদাগাদি করে রয়েছে শিশু এবং তাদের অভিভাবকেরা। ভর্তির জায়গা নেই। এমনই অবস্থা একাধিক জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল কিংবা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর গত ১২ থেকে ১৪ দিন ধরে এই অজানা জ্বরের প্রকোপ বেড়ে চলেছে জেলা জুড়ে। উত্তরবঙ্গের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, সঠিকভাবে সেই তথ্য জানানো হয়নি স্বাস্থ্য ভবনকে। তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। জ্বর, পেটে যন্ত্রণা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বহু শিশু। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে এই অজানা জ্বর। অথচ ১০-১২ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ জানা গেল না। কেন জ্বরের কারণ জানতে এত বেশি সময় লাগছে? সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ।
মূলত শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের বিভিন্ন অঞ্চলে এই জ্বরের প্রকোপে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল বা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই জ্বরে আক্রান্ত শিশুরা ভিড় করছে। কোথাও প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও বা ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ, জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল, বানারহাট, ধুপগুড়ি , মালবাজার, মেখলিগঞ্জ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ছোট-বড় হাসপাতালে এই মুহূর্তে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের ভিড়।
এই জ্বর যে জাপানি এনসেফালাইটিস নয়, তা নিশ্চিত করেছেন উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওএসডি অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুশান্ত রায়।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন আট জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে বিশেষ কমিটি
তৈরি করেছে যারা উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির অজানা জ্বরসহ গোটা রাজ্যের কোন জেলায় কি হচ্ছে শিশুদের সেই বিষয়ে তারা দেখবেন। জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
We hate spam as much as you do