আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’। এই পত্রিকা সরাসরি গত শনিবার এই জার্নালের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে বলেছে, নরেন্দ্র মোদির সরকারই দেশে কোভিড বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। ‘দ্য ল্যানসেট’ বলেছে, ‘এক এক সময় মনে হয়েছে, মোদি সরকার মহামারির মোকাবিলার চেয়ে টুইটারের সমালোচনা মুছতে বেশি ব্যস্ত।’
ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ' মোদিকে দুষল ল্যানসেট
ধর্মীয় উৎসব ও রাজনৈতিক সভা সুপার স্প্রেডার - ল্যানসেট
গত শনিবার india’s COVID-19 emergency নামক প্রবন্ধ ভারতের ভয়ংকর কোভিড বিপর্যয়ের জন্য এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সর্বোচ্চ
সরাসরি দায়ী করে অভিযুক্ত করল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’। এই পত্রিকা সরাসরি গত শনিবার এই জার্নালের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে বলেছে, নরেন্দ্র মোদির সরকারই দেশে কোভিড বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। ‘দ্য ল্যানসেট’ বলেছে, ‘এক এক সময় মনে হয়েছে, মোদি সরকার মহামারির মোকাবিলার চেয়ে টুইটারের সমালোচনা মুছতে বেশি ব্যস্ত।’
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউএর মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনায় পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম ইদানীং সরব। প্রধানমন্ত্রী মোদি সমালোচনাবিদ্ধ হওয়ায় সরকার ক্ষোভও প্রকাশ করেছে। বিদেশি প্রচারমাধ্যমের সমালোচনা অন্যায্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সরকার পাল্টা জবাব দিয়েছে। কিন্তু ‘দ্য ল্যানসেট–’এর কড়া সমালোচনার বিরুদ্ধে সরকার এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। ‘দ্য ল্যানসেট’ লিখেছে, ‘বহুবার সতর্ক করা সত্ত্বেও সরকার ধর্মীয় উৎসব (কুম্ভ মেলা) পালন ও রাজনৈতিক সভার (পাঁচ রাজ্যের ভোটে প্রচার) মতো অতি সংক্রামক অনুষ্ঠান হতে দিয়েছে, যা সুপার স্প্রেডারের কাজ করেছে।’ তারা বলেছে, ‘মোদি সমালোচকদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করেছেন। খোলামনে আলোচনাও করতে চাননি। পরামর্শ নেননি। এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।’
জানুয়ারির শেষাশেষি প্রধানমন্ত্রী মোদি দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নিয়ে ভারতের কোভিড জয়ের কাহিনি দীর্ঘ বক্তৃতা করে বলেছিলেন । মার্চ মাসের শুরুতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হর্ষবর্ধন ঘোষণা করেছিলেন, কোভিডের খেলা শেষ। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণা এবং ‘দ্য ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন’–এর অনুমান উল্লেখ করে ‘দ্য ল্যানসেট’ সম্পাদকীয়তে লিখেছে, ১ আগস্টের মধ্যে দেশে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ লাখ ছুঁতে পারে। এই আশঙ্কা সত্য হলে নিজের তৈরি সংকটের জন্য মোদি সরকারই দায়ী থাকবে।
এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি
সমালোচিত হয়েছেন। যেমন গত ২৭শে এপ্রিল IMA এর সর্বভারতীয় সহ সভাপতি ডাঃ নভজ্যোৎ দোহিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই COVID -19 দ্বিতীয় ঢেউ এর জন্য সরাসরি দায়ী করেছেন। বলেছেন মোদি হচ্ছেন Super Spreader .
The Tribune কে দেওয়া একটা সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন যখন সমস্ত চিকিত্সা ব্যবস্থা প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে COVID বিষয়ে মানূষকে সচেতন রাখতে তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি সমস্ত COVID নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিশাল জনসভা করতে দ্বিধা করছেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন গত শনিবার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারতে সংক্রমণের যে রকমফের দেখা যাচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে এটা অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনার একটা ধরন। কোভিডের অতি সংক্রামক এই ধরনটি 'বি.১.৬১৭' নামে পরিচিত, যা গত অক্টোবরে প্রথম ধরা পড়ে।
ভারতে এখন ৪ লাখের বেশি মানুষ নতুন করে প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছেন। প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। রাজ্যে রাজ্যে অক্সিজেন ও হাসপাতালের বেডের চাহিদা বেড়ে চলেছে। অক্সিজেনের অভাবে সারা দেশে হাহাকার। এই অবস্থায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আস্থা না রেখে গত শনিবার অক্সিজেনের বিলিবণ্টন ও বরাদ্দ ঠিক করতে ১২ বিশেষজ্ঞের এক টাস্কফোর্স গঠন করেছেন। অক্সিজেন ছাড়াও কোভিডের চিকিৎসায় জরুরি ওষুধের জোগান কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, ওই বিশেষজ্ঞেরা তা ঠিক করে দেবেন। এই টাস্কফোর্স অন্যান্য বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলবেন।
We hate spam as much as you do