একের পর এক আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়েছে হাসপাতাল থেকে পুরানো একাধিক বাড়ি। না। আধুনিক শপিং মলে কিন্তু ভুলেও লাগে নি আগুন।
ব্যক্তিগত মতামত -- "আগুন কেন? "
(গত রাতে লেকটাউনে মিনিজয়ায় আগুন প্রসঙ্গে )
লেকটাউনের বহু স্মৃতি বিজড়িত মিনিজয়া দাউদাউ ক'রে জ্বলছে। একটা গোটা ইতিহাস কেবল ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় অসহায় আমরা। কিন্তু কেন? কেন? কেন?
মাফ করবেন আমাকে। উত্তর খুজতে গিয়ে রাজনীতির কথা চলে আসবেই। আমি নাচার। মনে পড়ে বাম আমলের শেষপর্বে উল্টোডাঙ্গার বাসন্তী কলোনির ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের কথা? মনে পড়ে সেদিন কারা এমনকি দমকলের গতিরোধ করে আগুন নেভাতে বাধা দিয়েছিল? তবু একসময় গোটা কলোনিকে ছাইয়ের স্তূপে পরিণত করে নিভেছিল সে আগুন। না, সেই ভস্মস্তূপে মাথা তুলতে পারে নি সেদিন কোনো হাইরাইজ্ বা সুপার মল। প্রায় ময় দানবের তৎপরতায় সিপিআইএম বিধায়ক রূপা বাগচির নেতৃত্বে ওই ছাই উড়িয়ে প্রতিস্পর্ধায় গড়ে উঠেছিল স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য একগুচ্ছ পাকা বাড়ির গোটা একটা কলোনি। যদিও সংবাদ মাধ্যম সেদিন আর্ত চিৎকারে বাংলা প্রকম্পিত করে প্রশ্ন তুলেছিল এত আগুন কেন?
২০১১ তে পালাবদলের পর দমকল দপ্তর নাকি পেয়েছেন এক কাবিল মন্ত্রী। ২০১১র পালাবদলের পর নাকি হাইড্রোলিক ল্যাডার এবং আরো নানান আধুনিক সরঞ্জামে সুসংগঠিত হয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। কিন্তু কি আশ্চর্য্য ঠিক এই সময়কাল থেকেই বেড়েছে অাগুন লাগার ঘটনা। একের পর এক আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়েছে হাসপাতাল থেকে পুরানো একাধিক বাড়ি। না। আধুনিক শপিং মলে কিন্তু ভুলেও লাগে নি আগুন।
আগুনের লেলিহান শিখায় ঠিক আজকের মিনিজয়ার মত খাক হয়ে যাওয়া বাড়িগুলোর পরিণতি খতিয়ে দেখার হয়তো সময় হয় নি আমাদের। সময় হয় নি খুঁজে দেখার সেইসব ভাঙাচোরা বাড়িগুলোর জায়গায় মাথা তুলেছে কিনা কোনো গগনচুম্বী অট্টালিকা অথবা মাল্টিপ্লেক্স সহ আধুনিকতম মল।
পুড়ে যাওয়া ঐতিহ্যপূর্ণ মিনিজয়ার ভাঙাচোরা কংক্রিটের স্তূপ কোনো যাদুমন্ত্র বলে সরে গিয়ে একদিন সেখানে কোনো ঝাঁ চকচকে শপিং মল গড়ে উঠবে কিনা তা কি কেউ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারেন? সত্যিই কি বলতে পারেন কেউ?
এসব প্রশ্নে এখন মূল ধারার সংবাদ মাধ্যম জুড়ে শুধুই হিরন্ময় নীরবতা।
বাসব বসাক
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)
We hate spam as much as you do