যেখানে বিজ্ঞানের আরাধনা হয়, সেই ভোপালের ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অফ সায়েন্সে, এডুকেশন রিসার্চের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শিবরাজ বলেন, হিন্দু মহাকাব্যে রয়েছে 'পুষ্পক বিমান'। এর থেকেই বোঝা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে প্রাচীন ভারত কতখানি এগিয়ে ছিল। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাইট ভাইদের বিমান আবিষ্কার করার অনেক আগে থেকেই আমাদের কাছে পুষ্পক বিমান ছিল।"
বিজেপির অনুরাগের প্রথম নভঃশ্চর হনুমানের পর শিবরাজের মতে পুষ্পকরথই প্রথম বিমান
Aug 26, 2025
ক'দিন আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর বলেন, প্রথম মহাকাশচারী রুশ নভশ্চর ইউরি গ্যাগারিন নয়, বরং রামভক্ত হনুমানজি। এবার আরেক গেরুয়া নেতা এবং কেন্দ্রের কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান দাবি করলেন, রাইট ভ্রাতৃদয়ের অনেক আগে ভারত আবিষ্কৃত হয়েছে বিমান। কবে, কোথায়, কে আবিষ্কার করেন সেই বিমান?
যেখানে বিজ্ঞানের আরাধনা হয়, সেই ভোপালের ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অফ সায়েন্সে, এডুকেশন রিসার্চের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শিবরাজ বলেন, হিন্দু মহাকাব্যে রয়েছে 'পুষ্পক বিমান'। এর থেকেই বোঝা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে প্রাচীন ভারত কতখানি এগিয়ে ছিল। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাইট ভাইদের বিমান আবিষ্কার করার অনেক আগে থেকেই আমাদের কাছে পুষ্পক বিমান ছিল।" এখানেই না থেমে আরও বলেন, "আমাদের কাছে যে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তা হাজার হাজার বছর ধরেই আমাদের কাছে ছিল। মহাভারতে এই সবটাই পড়েছি আমরা। আমাদের দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কয়েক হাজার বছর আগেই বিকশিত হয়েছিল।"
সভ্যতার ইতিহাস বলছে, ১৯০৩ সালে আমেরিকার নর্থ করোলিনায় প্রথমবার সফলভাবে বিমান ওড়ান দুই মার্কিন ভাই ওরিভিল এবং উইলবার রাইট। এই ঘটনাকে আধুনিক যন্ত্র পৃথিবীর মাইল ফলক বলে মনে করা হয়। যদিও একাধিক গেরুয়ানেতারা তেমনটা মনে করেন না। ব্রহ্মাস্ত্রকে পরমাণু বোমা, পুষ্পক রথকে বিমান, হনুমানকে মহাকাশচারীর মতো নিজস্ব মত রয়েছে তাঁদের। যদিও সেই সব মতকে মান্যতা দেয় না বিজ্ঞান।
হিমাচল প্রদেশের উনা জেলায় ন্যাশনাল স্পেস ডে উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur)। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি প্রশ্ন করেন—“প্রথম মানুষ কে মহাকাশে গিয়েছিল?” উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা একসঙ্গে উত্তর দেয়, “নীল আর্মস্ট্রং!” কিন্তু অনুরাগ ঠাকুর পাল্টা বলেন, “আমার মনে হয়, তিনি ছিলেন হনুমানজি( Hanuman)।” এই ভিডিও পরে তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন।
এখানেই শুরু হয় বিতর্ক। একদিকে ছাত্রছাত্রীদের কথা ভুল। নীল আর্মস্ট্রংকে প্রথম মহাকাশচারী বলেছিল তারা। অথচ প্রকৃতপক্ষে ১৯৬১ সালে সোভিয়েত মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগরিনই প্রথম পৃথিবীর কক্ষপথে ঘোরেন। আর্মস্ট্রং অবশ্য ১৯৬৯ সালে প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদে পা রাখেন। অন্যদিকে একজন সাংসদ পুরাণকথাকে ইতিহাসের সঙ্গে মিলিয়ে দাবি করেছেন, হনুমান ছিলেন প্রথম মহাকাশযাত্রী। ফলে এখানে দুটি বড় ভুল সামনে এসেছে—শিক্ষার্থীদের সাধারণ জ্ঞানহীনতা এবং সাংসদের ইতিহাসের জায়গায় পৌরাণিক কাহিনি উপস্থাপন।
We hate spam as much as you do