মেয়রের একথার জবাবে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বাম জমানায় যে বেআইনি নির্মাণে প্রশাসন অনুমতি দিত না তা মেয়র নিজেই স্বীকার করছেন। গার্ডেনরিচে যে ঘটনা ঘটেছে তার নেপথ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও পুলিশের একাংশের যোগসাজস অবধারিত ভাবেই রয়েছে”।
ভাঙল ৩ ফুট গলির মধ্যে ৬ তলা ফ্ল্যাট মেয়রের কেন্দ্র গার্ডেনরিচে
18th March 2024
রাজনৈতিক ভাবে দলের মধ্যেই তিনি এখন কিছুটা চাপে রয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। লোকসভা ভোটে তাঁর মেয়ে প্রিয়দর্শিনী হাকিমকে প্রার্থী করার ব্যাপারে যে দৌত্য শুরু হয়েছিল, তাও বিশেষ কাজে দেয়নি। সেই তিনি তথা কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম গার্ডেনরিচ কাণ্ডে বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গেলেন।
গার্ডেনরিচ ববি হাকিমের নির্বাচন কেন্দ্র। সেই এলাকারই ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। ৩ ফুট গলির মধ্যে কীভাবে ৬ তলা বাড়ি উঠছিল সেটাই মূল প্রশ্ন। শুধু এই বাড়িটিই নয়, গত কয়েক বছরে গার্ডেনরিচ এলাকায় এরকম আরও বহুতল তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে, এই বাড়ি তৈরির অনুমতি কে দিল? কে প্ল্যান অনুমোদন করল? আর অনুমোদিত প্ল্যানের বাইরে গিয়ে নির্মাণ হলে কেন পুরসভা আগেই ব্যবস্থা নিল না?
অনুমোদিত প্ল্যানের বাইরে গিয়ে নির্মাণ করা এখন শহর কলকাতা ও মফস্বল এলাকাগুলিতে আকছার ঘটছে। অভিযোগ হল, পুরসভাকে নামমাত্র জরিমানা দিয়ে সেই সব নির্মাণ হচ্ছে। কেউ ফ্লোর বাড়িয়ে নিচ্ছে তো কেউ ঝুল বারান্দা বানাচ্ছে। বাড়ি তৈরির জন্য চারদিকে যে ন্যূনতম ছাড় দিতে হয় তাও দিচ্ছে না। পুরসভাকে জরিমানা দেওয়া ছাড়াও এ ক্ষেত্রে বড় টাকার খেলা রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গার্ডেনরিচে যেখানে বাড়িটি ভেঙে পড়েছে সেখানে রবিবার রাত থেকে রয়েছেন মেয়র। বেআইনি নির্মাণের ব্যাপারে গোটা দায় তিনি এদিন বাম জমানার উপরে ঠেলে দিতে চেয়েছেন। তাঁর কথায়, “এই এলাকাগুলোতে বাম জমানা থেকে সব বেআইনি নির্মাণ চলছে। তার কারণ হল, সেই সময়ে প্রশাসনের থেকে নির্মাণের জন্য কোনও অনুমতি পাওয়া যেত না। তা জোগাড় করতে গিয়ে হেনস্তা হতে হত। বিএলআরও অফিসে হত্যে দিয়ে পায়ের জুতে ক্ষয়ে যেত। আমরা বোর্ড গঠনের পর এই সব কাজ অনেক সরল হয়েছে। তার পরেও কেউ কেউ কেন বেআইনি নির্মাণ করছেন তা বলতে পারব না”।
মেয়রের একথার জবাবে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বাম জমানায় যে বেআইনি নির্মাণে প্রশাসন অনুমতি দিত না তা মেয়র নিজেই স্বীকার করছেন। গার্ডেনরিচে যে ঘটনা ঘটেছে তার নেপথ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও পুলিশের একাংশের যোগসাজস অবধারিত ভাবেই রয়েছে”। সুজনবাবুর কথায়, এর দায় মেয়রকেই নিতে হবে।
গার্ডেনরিচের ঘটনা নিয়ে এদিন সরাসরি মেয়রের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। স্থানীয় কাউন্সিলর শামস ইকবালকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু। ববি হাকিমের সঙ্গে শামস ইকবালের ছবি পোস্ট করে শুভেন্দু লিখেছেন, এই কাউন্সিলরই হলেন কিংপিন। প্রমোটারের সঙ্গে তাঁকেও গ্রেফতার করতে হবে।
We hate spam as much as you do