সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ এই অক্ষমতার কারণ হিসাবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে বিশ্ব নেতাদের অপর্যাপ্ত পদক্ষেপকে দায়ী করেছেন, আর তাঁদের শতকরা ৬০ ভাগ বলেছেন যে, জীবাশ্ম জ্বালানী কোম্পানিগুলির কর্পোরেট স্বার্থ উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণের কাজের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
‘দ্য গার্ডিয়ান’ সমীক্ষা ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় উষ্ণতা পর্যন্ত ২.৫°c বৃদ্ধি পেতে পারে যা বিপজ্জনক ,
June 23, 2024
বিশ্বজুড়ে শীর্ষ-স্তরের জলবায়ু বিজ্ঞানীদের প্রায় ৮০ শতাংশের আশঙ্কা যে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় উষ্ণতা কমপক্ষে ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে, যেখানে মাত্র ৬ শতাংশ বিজ্ঞানী ভরসা রাখছেন যে এই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির গড়কে প্রাক-শিল্পস্তরের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বৃদ্ধি পর্যন্ত রাখা সম্ভব হবে । এটি সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সমীক্ষা যা ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা প্রকাশ করেছে।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ এই অক্ষমতার কারণ হিসাবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে বিশ্ব নেতাদের অপর্যাপ্ত পদক্ষেপকে দায়ী করেছেন, আর তাঁদের শতকরা ৬০ ভাগ বলেছেন যে, জীবাশ্ম জ্বালানী কোম্পানিগুলির কর্পোরেট স্বার্থ উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণের কাজের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জনৈক বিজ্ঞানী দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমি গ্লোবাল সাউথের মানুষের জন্য যথেষ্ট যন্ত্রণা অনুভব করছি ও তাদের জন্য যন্ত্রণাসহ একটি আধা- ডিস্টোপিয়ান ভবিষ্যত (এটি এমন এক অবস্থা যেখানে অধিকাংশ মানুষ অসুখী ও অবস্থা সম্পর্কে ভীত) আশঙ্কা করছি।” তাঁর মতে,
“এবিষয়ে আজ পর্যন্ত বিশ্বের প্রতিক্রিয়া হতাশজনক —আমরা বোকাদের যুগে বাস করি। যে বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু গবেষণায় তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের মধ্যেকার ব্যক্তিগত ক্ষোভ আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে”।
সমীক্ষাটি দ্য গার্ডিয়ান-এর ড্যামিয়ান ক্যারিংটন দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (IPCC) রিপোর্টে একজন তথ্য ও গবেষণাপত্র লেখক হিসাবে কাজ করেছেন এমন বিশেষজ্ঞদের কাছে পৌঁছেছেন ক্যারিংটন । ৮৪৩ জন বিজ্ঞানীর মধ্যে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে এমন ৩৮৩ জন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দ্য গার্ডিয়ান-এর এই সমীক্ষায়।
তারপর সমীক্ষক তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, কতটা উচ্চ তাপমাত্রা ২১০০ নাগাদ বাড়বে বলে মনে করছেন এই গবেষকরা। শতকরা ৭৭ জন কমপক্ষে ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং প্রায় অর্ধেক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন ।
ক্যারিংটন সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “যারা জলবায়ু গবেষণার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত যন্ত্রণার যে মাত্রা দেখেছি তা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।” অনেকেই আশাহীন, ভগ্নহৃদয়, বিরক্ত, ভীত, অভিভূতের মতো শব্দ ব্যবহার করেছেন বলে সমীক্ষক সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন।
১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্যমাত্রা ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য হিসাবে গৃহীত হয়েছিল, যেখানে বিশ্ব নেতারা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির “ভালভাবে অনেক নীচে” উষ্ণতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যাই হোক, বর্তমানে যে নীতিগুলি রয়েছে তা বিশ্বকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং প্যারিস চুক্তির অধীনে ২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের জন্য বড়জোর আশ্বস্ত করতে পারে।
সমীক্ষা চলাকালীন সময়েই সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের রেকর্ড লিপিবদ্ধ হ’লো। ইতিমধ্যেই কানাডায় রেকর্ড ভাঙ্গা দাবানলের মরসুমের পাশাপাশি চরম, ব্যাপক তাপপ্রবাহ এবং মারাত্মক বন্যা দেখেছে বিশ্ব। ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসের প্রতিটা মাসই রেকর্ড গড়েছে সেই মাসের উষ্ণতার বিচারে। এই বছরটি ইতিমধ্যে প্রবাল প্রাচীরের জন্য চতুর্থবার বিশ্বব্যাপী ব্লিচিং ইভেন্ট দেখেছে। এই বছরের (2024) মে মাসে NOAA (The National Oceanic and Atmospheric Administration) নিশ্চিত করেছে যে বিশ্বের চতুর্থ বিশ্বব্যাপী প্রবাল ব্লিচিং ইভেন্ট চলছে। (যখন প্রবালগুলি তাপমাত্রা, আলো বা পুষ্টিগত অবস্থার নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে বিপন্ন হয়, তখন তারা দেহকলায় বসবাসকারী মিথোজীবী শৈবালকে বের করে দেয়, যার ফলে কোরালগুলি সম্পূর্ণ সাদা হয়ে যায়: অনুবাদক)।
তারা বলতে পারে তারা গুরুত্ব দেয় না, কিন্তু তারা বলতে পারে না যে তারা কিছু জানে না।
তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেটা পেকল দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমি মনে করি আমরা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বড় ধরনের সামাজিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি।” তাঁর জবানে —“[কর্তৃপক্ষ] একটা চরম ঘটনার পর আর একটা চরম ঘটনার দ্বারা বিহ্বল হবে, খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে। আমি ভবিষ্যতের জন্য আরো বড় হতাশা অনুভব করতে চাইছি না”।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে সরকার এবং সংস্থাগুলি যারা জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো থেকে লাভবান হয় তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আটকাচ্ছে। অনেকে বিশ্বজোড়া আর্থিক বৈষম্য এবং ধনীদেশগুলি তাদের নিজস্ব নির্গমন হ্রাস এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিকে মানিয়ে নিতে সহায়তার জন্য পদক্ষেপ নিতে অস্বীকৃতিকেও দায়ী করেছেন।
“বিশেষ করে অ্যাংলোস্ফিয়ারে – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া – এমনকি রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী লাভের ক্যালকুলাস আমাদেরকে এমন একটি বিশ্বে নিয়ে যাচ্ছে যেখানে দুর্বলরা
আরো ক্ষতিগ্রস্থ হবে, ভালো থাকার দল নিরাপদসীমার উপরে থাকার আশা করবে,” লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের স্টিফেন হামফ্রেস বলেছেন।
ভয়াবহ সম্ভাবনা জানা সত্ত্বেও, অনেক বিজ্ঞানী গবেষণা এবং আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন কারণ এই কাজে তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘মেক্সিকো ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি’তে জলবায়ু মডেলিংয়ে কাজ করা রুথ সেরেজো-মোটা, দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমরা এটা করতে থাকি কারণ আমাদের এটা করতেই হবে। তাই [শক্তিশালীরা] বলতে পারে না যে তারা জানত না। আমরা জানি আমরা কী বিষয়ে কথা বলছি। তারা বলতে পারে যে তারা উদ্বিগ্ন নয়, কিন্তু তারা বলতে পারে না যে তারা এসব জানে না”।
জলবায়ু সক্রিয়তা এবং তরুণ প্রজন্মের অনুসন্ধানে ও সচেতনতায় আশা খুঁজে পেয়েছেন অনেকে এবং উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রতিটি অতিরিক্ত দশমাংশ বৃদ্ধি রোধ করতে পারলে ১৪ কোটি মানুষকে চরম তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করা যায় এটা জানাও স্বস্তিকর তাদের কাছে।
ফ্রান্সের ‘ইনস্টিটিউট ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন’র হেনরি ওয়াইসম্যান বলেন, “পরিস্থিতিগুলিকে আরও দ্রুত পরিবর্তন করতে না পারার জন্য আমি নিয়মিতভাবে হতাশা ও অপরাধবোধের মুহুর্তের মুখোমুখি হই এবং আমি বাবা হওয়ার পর থেকে এই অনুভূতিগুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। কিন্তু, এই মুহুর্তে, দুটি জিনিস আমাকে সতর্ক করে: 2005 সালে আমি এই বিষয়ে কাজ শুরু করার পর থেকে কাজের কতটা অগ্রগতি হয়েছে তা মনে রাখা এবং একটি ডিগ্রীর প্রতি দশমাংশ বৃদ্ধিও যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এই ভাবনা —এর অর্থ লড়াই চালিয়ে যাওয়া এখনও কার্যকর”।
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার কক্স যোগ করেছেন: “জলবায়ু পরিবর্তন হঠাৎ করে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বিপজ্জনক হয়ে উঠবে না – এটা ইতিমধ্যেই হয়ে রয়েছে। আমরা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলেই খেলা শেষ এমনটা নয় কারণ, তখনও ভাল করার কিছু সুযোগ থাকবে। আমি হতাশ নই, আমি হাল ছেড়ে দিচ্ছি না। আমি বিরক্ত এবং একটি ভাল বিশ্বের জন্য লড়াই করার জন্য আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হচ্ছি”।
অনেক বিজ্ঞানী যাঁরা এখনও ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার আশা দেখছেন, তাঁরা যা চলছে তা দ্রুত গতিতে গুটিয়ে ফেলা এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো জলবায়ু-বান্ধব প্রযুক্তির দাম কমানোর জন্য দরবার করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও সদ্য (8/5/2024) পরিচ্ছন্ন শক্তি বিষয়ে কর্মরত এম্বার (ember-climate.org) রিপোর্ট করেছে যে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক বিদ্যুতের ৩০% পুনর্নবীকরণযোগ্য উৎস থেকে এসেছে এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে ২০২৩ সালটি সেই আলম্ব বিন্দু, যার পরে বিদ্যুৎ খাতের গ্রীণহাউজ গ্যাস নির্গমন কমতে শুরু করবে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন যে জীবাশ্ম জ্বালানি ত্যাগ করার অনেকগুলি পার্শ্ব সুবিধা রয়েছে, যেমন পরিষ্কার বাতাস এবং উন্নত জনস্বাস্থ্য। যদিও আরও আশাবাদী বিজ্ঞানীরাও জলবায়ু সংকটের অপ্রত্যাশিত প্রকৃতি সম্পর্কে সতর্ক থাকাটাও জরুরি বিবেচনা করেন।
জাতিসংঘের কোপেনহেগেন জলবায়ু কেন্দ্রের হেনরি নিউফেল্ট দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমি নিশ্চিত যে আমাদের কাছে সর্বাধিক ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এই রাস্তায় হাঁটার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সমাধান রয়েছে এবং আমরা আগামী ২০ বছরের মধ্যে সেগুলি বাস্তবায়ন করব।” তিনি আরো বলেন, “কিন্তু আমি আশঙ্কা করি যে আমাদের উদ্যোগগুলি খুব দেরিতে আসতে পারে এবং আমরা এক বা একাধিক টিপিং পয়েন্ট অতিক্রম করে যেতে পারি”।
বেশ কিছু বিজ্ঞানী জলবায়ু সূচককে নড়াচড়া করানোর জন্য মানুষ যা করতে পারে তার জন্য সুপারিশ দিয়েছেন। হামফ্রেস ‘নাগরিক অবাধ্যতার’ পরামর্শ দিয়েছেন। আর একজন ফরাসি বিজ্ঞানী বলেছেন যে মানুষের “একটি সুন্দর বিশ্বের জন্য লড়াই করা উচিত।”
কলম্বিয়ার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল এগ্রিকালচার-এর লুই ভারচট, দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “সমস্ত মানবতার একত্রিত হওয়া এবং সহযোগিতা করা দরকার —এটি ভিন্নতাকে একপাশে রেখে একসঙ্গে কাজ করার একটি বিশাল সুযোগ। দুর্ভাগ্যবশত জলবায়ু পরিবর্তন একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে… আমি ভাবছি যে সংকট কতটা গভীর হ’লে তবে আমরা সবাই একই দিকে যাত্রা শুরু করতে চাইবো ।
দ্য গার্ডিয়ানের সমীক্ষা প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে যে অন্যান্য জলবায়ু বিজ্ঞানীরাও তাদের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে প্ররোচিত হচ্ছেন।
টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী ক্যাথারিন হেহো সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “অনেক বিজ্ঞানী যেমন উল্লেখ করেছেন, ভবিষ্যতের তাপমাত্রা পরিবর্তনের অনিশ্চয়তা কোনও ভৌত বিজ্ঞানের প্রশ্ন নয়; এটি মানুষের বেছে নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রশ্ন। আমরা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই; এবং আমাদের সেগুলি সম্পর্কে ইতিবাচক বোধ করার কারণ খুব কম নেই, যেহেতু আমরা কয়েক দশক ধরে ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেই আসছি”।
কার্ডিফ স্কুল অফ সোশ্যাল সায়েন্সের একজন স্নাতক গবেষক অ্যারন থিয়েরি উল্লেখ করেছেন যে, দ্য গার্ডিয়ানের সমীক্ষার ফলাফল বৈজ্ঞানিক মতামতের অন্যান্য সমীক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেমন COP-26 এর সময়ে নেচার-এ প্রকাশিত একটি (A Nature survey reveals that many authors of the latest IPCC climate- science report are anxious about the future and expect to see catastrophic changes in their lifetimes- Nature, Nov.2021–অনুবাদক) যেখানে IPCC বিজ্ঞানীদের ৬০% মনে করেন ২১০০ সালের মধ্যে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি উষ্ণায়নের আশঙ্কা রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটারের গ্লোবাল সিস্টেমস ইনস্টিটিউটের জেমস ডাইক যুক্তি দিয়েছিলেন যে, পরাজয় ভাবনার কাছে আত্মসমর্পণ না করে বা তাতে উত্সাহিত বোধ না করে বিজ্ঞানীদের নেতিবাচক চিন্তাভাবনা গুলো ভাগ করার অনেক জায়গা রয়েছে।
“যুক্তি হিসাবে আমি শুনি যে আমাদের অবশ্যই এই বার্তাগুলিকে গড়াই-পেটাই করতে হবে কারণ আমরা চাই না লোকেরা হতাশ হোক এবং হাল ছেড়ে দিন। আমি কিন্তু হতাশ নই, হালও ছাড়ি না। আমি ক্ষুব্ধ এবং একটি উন্নত বিশ্বের জন্য লড়াই করার জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ”: ডাইক একথা সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন।
NASA জলবায়ু বিজ্ঞানী পিটার কালমাস “দয়া করে শোনা শুরু করার” অনুরোধসহ (I’ve long said we’re at risk of losing essentially everything due to global heating – all of modern life, much of life on Earth, billions of human lives, our super habitable planet. More and more climate scientists are coming to see this. Please start listening) প্রবন্ধটি শেয়ার করেছেন।
“নির্বাচিত এবং কর্পোরেট ‘নেতারা’ মূলত সবকিছুর অপরিবর্তনীয় ক্ষতির মূল্যেও তাদের ব্যক্তিগত ক্ষমতা এবং সম্পদকে অগ্রাধিকার দিতে থাকে, এমনকি এই অপরিবর্তনীয় ক্ষতিটি আরও বেশি করে আলোচ্য হয়ে ওঠা সত্ত্বেও। আমি এটিকে আক্ষরিক অর্থে উন্মাদনার একটি রূপ হিসাবে দেখছি।” কালমুস লিখেছেন, “পুঁজিবাদ আমাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপকে ক্ষমতার উচ্চাসনে উন্নীত করে।” যাই হোক, তাঁর ধারণায় অনিয়ন্ত্রিত জলবায়ু পরিবর্তনে ভবিষ্যত “আধা-ডিস্টোপিয়ান” হবে।
কালমুস বলেন, “আমরা অগ্রগতি, ন্যায়পরায়ণতা, সমবেদনা এবং ভালবাসার দিকে ধীরে ধীরে বাঁক নেওয়ার সম্ভবনাগুলো হারানোর ঝুঁকিতে আছি”। কালমুস আরো বলেছেন –“সমস্ত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রামকে জলবায়ু সংগ্রামের সাথে সেসবের গভীর পারস্পরিক ছেদবিন্দুকে অবশ্যই চিনতে হবে”।
মূল লেখা : অলিভিয়া রোজেন; কমন ড্রিমস (একটি মার্কিন অলাভজনক নিউজ পোর্টাল), ৮মে, ২০২৪।
We hate spam as much as you do