আম-লিচু বাগানের উপর গিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার যাওয়ার বিরুদ্ধে সরব কৃষকরা। মামলা গড়িয়েছে আদালতেও। শনিবার মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার বেনিয়া গ্রাম দাদনতোলা এলাকা দিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার নিয়ে যেতে গেলে বাধা দেন গ্রামবাসীরা। শুরু করেন বিক্ষোভ
ফরাক্কায় কৃষকদের ওপর পুলিশের নির্মম ‘মার’ জমির উপর দিয়ে আদানিদের হাইটেশন তারের বিরোধীতায় সরব ফারাক্কাবাসী
2nd july 2022
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বরাত পেয়েছে আদানি গ্রুপ। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গ্রুপের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে হাইটেনশন তার প্রতিবেশী দেশে যাচ্ছে।
আম-লিচু বাগানের উপর গিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার যাওয়ার বিরুদ্ধে সরব কৃষকরা। মামলা গড়িয়েছে আদালতেও। শনিবার মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার বেনিয়া গ্রাম দাদনতোলা এলাকা দিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার নিয়ে যেতে গেলে বাধা দেন গ্রামবাসীরা। শুরু করেন বিক্ষোভ। এরপরই ঘটনাস্থলে আশে পুলিশ। বিক্ষোভরত গ্রামবাসীদের সরাতে গেলে শুরু হয় বচসা। এরপরই পরিস্থিতি রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হঠাৎই পুলিশ মারধর শুরু করে। পুলিশের মারে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর মাথা ফেটে যায়। ফরাক্কা থানার আইসি লাঠি চার্জের নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।
কেন বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের? এক জখম কৃষক বলেছেন, ‘জমির উপর দিয়ে হাইটেনশন তার গেলে ফসলের ক্ষতি হবে। এখানকার বেশিরভাগ পরিবারই আম-লিচু চাষের উপর নির্ভরশীল। তাই আমরা আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে আমাদের জমির উপর দিয়ে হাইটেনশন তার নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করছি।’
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য কংগ্রেসের আসিফ ইকবালও আন্দোলনকারী কৃষকদের পক্ষে রয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘এলাকার অন্যত্র অনেক খালি জমি রয়েছে।সেদিক থেকে আদানিদেরহাইটেনশন তার গেলে করোরই আপত্তি নেই। কিন্তু ওরা এই জামিগুলির উপর দিয়েই তার নিয়ে যাবে। এদিনের বিক্ষোভের কথা বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যেতেই দেখি পুলিশ, আইসি, বিডিও, আদানি গ্রুপের প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত। র্যাফও হাজির। আমি যাওয়া মাত্র ফরাক্কা থানার আইসি লাঠিচার্জ করতে বললেন। যার কয়েক সেকেন্ডেই অনেকের মাথা ফেটে যায়।’
এই ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে ‘জয় কিষাণ আন্দোলন’। সংগঠনের তরফে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘এটা দুঃখের বিষয় যে শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং স্থানীয় পুলিশ নির্লজ্জভাবে কর্পোরেটদের পক্ষ নিয়ে আন্দোলনকারীদের হুমকি, এমনকি প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে। মারধর ও মিথ্যা ফৌজদারি মামলা দায়ের করার মত পদক্ষেপ নিয়ে আন্দোলন ভাঙতে চাইছে তারা। আজ ফরাক্কা থানার পুলিশ সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে বিনা প্ররোচনায় প্রতিবাদীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ওপর অমানুষিক, বর্বর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। পুলিশের লাঠির আঘাতে ও ছোঁড়া পাথরে বহু প্রতিবাদী রক্তাক্ত হয়েছে। গুরুতর জখম অন্তত ১২ জন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।’
জয় কিষাণ আন্দোলনের সর্বভারতীয় সভাপতি অভীক সাহার অভিযোগ, ‘পুলিশের এই বর্বরোচিত কাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলন করে, রাজ্যের কৃষকদের বিপুল সমর্থনে ক্ষমতায় এসে বসে রাজ্যের শাসকদল আজ কৃষকদেরই রক্ত ঝরাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ কৃষক প্রতিবাদের ওপর লাঠি চালাচ্ছে, পাথর ছুড়ছে। রাজ্যে অনিচ্ছুক কৃষক বা ব্যক্তিদের থেকে জমি নেওয়া হবে না, আলোচনা করে সম্মতি থাকলে তবেই জমি নেওয়া হবে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই সব প্রতিশ্রুতি আজ কোথায় গেল? আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য এবং প্রমাণ আছে স্থানীয় শাসক দলের নেতা কর্মীরা এবং থানার আই সি সরাসরি আদানি গোষ্ঠীর দালালি করছেন।’
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বরাত পেয়েছে আদানি গ্রুপ। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গ্রুপের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে হাইটেনশন তার প্রতিবেশী দেশে যাচ্ছে। যাকে কেন্দ্র করেই আপত্তি ফরাক্কার বেনিয়া গ্রাম দাদনতোলা এলাকার বাসিন্দাদের।
We hate spam as much as you do