Tranding

02:20 PM - 01 Dec 2025

Home / Article / ভারতবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। পোর্টাল নিউজক্লিকে প্রকাশিত অধ্যাপক আর. রামকুমারের লেখা থেকে

ভারতবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। পোর্টাল নিউজক্লিকে প্রকাশিত অধ্যাপক আর. রামকুমারের লেখা থেকে

ভ্যাকসিন একটি বিশ্বজনীন সর্বজনীন পণ্য (global public good),  যা সকল দেশের সমস্ত মানুষের কাছে সঠিক নিরাপত্তাসহ সহজে পৌঁছে দেওয়া উচিত, এবং তা করার একমাত্র উপায় সকলকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া।

ভারতবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। পোর্টাল নিউজক্লিকে প্রকাশিত অধ্যাপক আর. রামকুমারের লেখা থেকে


ভারতবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। পোর্টাল নিউজক্লিকে প্রকাশিত অধ্যাপক আর. রামকুমারের লেখা থেকে

ইংরেজি পোর্টাল নিউজক্লিকে প্রকাশিত অধ্যাপক আর. রামকুমারের লেখাটি ভীষণ গুরুত্ত্বপূর্ণ। দেশের এই অভূতপূর্ব মানবিক সংকটের সময়ে  দাবি উঠেছে  অন্যান্য সকল "জনকল্যানধর্মী রাষ্ট্রের" মতো সকল ভারতবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এই দাবির স্বপক্ষে রামকুমার ৭টি কারণ তুলে ধরেছেন:-

১) ভ্যাকসিন একটি বিশ্বজনীন সর্বজনীন পণ্য (global public good),  যা সকল দেশের সমস্ত মানুষের কাছে সঠিক নিরাপত্তাসহ সহজে পৌঁছে দেওয়া উচিত, এবং তা করার একমাত্র উপায় সকলকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া।

২) সুপ্রিমকোর্টের Right to Life সংক্রান্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিনামূল্য ভ্যাকসিনের অধিকার সকল মানুষের জীবনযাপনের মৌলিক অধিকারের অন্তর্গত। তাই সকলকে ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পৌঁছে দেওয়া রাষ্ট্রের আশু কর্তব্য।

৩) প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই ভ্যাকসিন-সংক্রান্ত গবেষণার টাকা এসেছে রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে, যার টাকা আসে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ শুল্ক বা ট্যাক্স থেকে।

৪) ভারতের মতো দেশে ভ্যাকসিনের প্রতি একটি অনীহা কাজ করে জনসাধারণের মধ্যে। এছাড়াও, ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একটি বিশেষ সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। ২০১২-১৩ সালে ভারতের প্রতিটি ৪-জনের গ্রামীণ পরিবারের গড় মাসিক আয় ছিল ৬৪২৬ টাকা। সেই একটি পরিবারের সবাইকে ৪০০ টাকার দু ডোজ ভ্যাকসিন নিতে হলে ৩২০০ টাকা ব্যয় করতে হবে, যা তাদের মাসিক পারিবারিক আয়ের ৫০%। মহার্ঘ ভ্যাকসিন ক্রয় করার অক্ষমতা প্রচুর মানুষকে ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বঞ্চিত করবে।

৫) মহার্ঘ ভ্যাকসিন কিনতে হলে রাজ্যগুলির কোষাগারে বিপুল চাপ পড়বে। কোভিডের সময়ের ঋণের বোঝার ওপরে আরো ৫৩২৮০ কোটির বোঝা চাপলে রাজ্যগুলির ঘাটতি প্রবলভাবে বাড়বে, যা রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর।

৬) বিনামূল্যে সর্বজনীন ভ্যাকসিন প্রদানের প্রকল্প  ভারতে খুব সহজে বাস্তবায়িত করা সম্ভব। একই ভ্যাকসিনের বিভিন্ন দাম নির্ধারিত হলে বেসরকারি প্রস্তুতকারী কোম্পানি ও হাসপাতালগুলি মুনাফার লোভে সকল অনৈতিক উপায় অবলম্বন করতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারি গণবন্টন ব্যবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কম হবে এবং অহেতুক আমলাতান্ত্রিক সমস্যার মধ্যেও মানুষকে পড়তে হবেনা।

৭) ভ্যাকসিনের বাজার খণ্ডিত না হওয়াই ভালো। ৪০০ টাকা দিয়ে রাজ্য ভ্যাকসিন কিনলে, আর ৬০০ টাকা দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলি ভ্যাকসিন কিনলে টিকার বাজারে বিভিন্ন স্তর তৈরি হয়ে যাবে, যা সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে নড়বড়ে করবে। এছাড়াও, এই ভ্যাকসিন বাজারে স্তর তৈরি হওয়ার দরুন বেসরকারি হাসপাতালগুলির সুবিধার্থে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে বঞ্চনার আশঙ্কাও থেকে যায়।

তাই, বিনামূল্যে সকলকে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মানুষ-মারা নীতির তীব্র বিরোধিতা করুন।

Your Opinion

We hate spam as much as you do