বাংলাদেশে আটকে পড়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ভারতীয়। তাঁদের অনেকেই ছাত্রছাত্রী। শুক্রবার তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩০০ জন দেশে ফিরেছেন। তাঁরা ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের স্থলপথে দেশে ফিরেছেন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও তাঁরা উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এইদলে নেপাল ও ভূটানের কয়েকজন ছিলেন। সবার পরিচয় পত্র দেখে আগরতলার আখাউরা এবং মেঘালয়ের দাওকি দিয়ে দেসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ জুড়ে কার্ফু! নিহত ১০০ পার, বহু ভারতীয় দেশে ফিরলেন
July 20, 2024
অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। সেখানকার পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে খারাপ হচ্ছে। শুক্রবার গভীর রাতে সেখানকার সরকার দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করেছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যুতে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা ১০০ পার হয়ে গিয়েছে। পনেরো বছর ক্ষমতায় থাকার পরে এই প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এই সংরক্ষণ ইস্যু।
প্রধানমন্ত্রী হাসিনার প্রেস সচিব নইমূল ইসলাম খান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সরকার দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করেছে। পাশাপাশি অসামরিক কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে সামরিক বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে ঢাকা-সহ বিভিন্ন জায়গায় জনসমাগম নিষিদ্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার ঢাকার পুলিশ প্রধান হবিবুর রহমান বলেছেন, ওইদিন থেকে ঢাকায় সব ধরনের সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা নিষিদ্ধ করতে এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয় ছিলপ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইন্টারনেট বন্ধ রাখার পরেও শুক্রবার ঢাকা জুড়ে পুলিস ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুক্রবারেও অব্যাহত ছিল। পুলিশ মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করেছে। তারপরেও প্রতিবাদকারীরা বলেছেন, তাঁদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। প্রতিবাদকারীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকার দায়ী, সেই কারণে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা।
এদিনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের নরসিংদিতে জেলে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বন্দিদের মুক্ত করে দেয়। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সেখানে কয়েকশো কয়েদি ছিল।
এদিকে শুক্রবার রাজধানী ঢাকায় অন্তত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই সপ্তাহে অর্ধেকের বেশি মৃত্যুর কারণ হল পুলিসের গুলি। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন ছাত্র বিক্ষোভকারীদের ওপরে পুলিশের হামলা মর্মান্তিক। এনিয়ে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির দাবিও তিনি করেছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটচান পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, সেখানকার প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল অর্থাৎ বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা কবীর রিজভি আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি চাকরির সঙ্গে সিভিল সার্ভিসেও অর্ধেকের বেশি পদ বিভিন্ন কারণে সংরক্ষিত। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৭১-এ মুক্তি যুদ্ধে অংশ নেওয়াদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষণ।
এই সপ্তাহের শুরুতে সংরক্ষণ নিয়ে আন্দোলন হিংসার রূপ নিতে সরকার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার কথা ঘোষণা করে। দেশের ৬৪ টি জেলার অর্ধেকের বেশি ইতিমধ্যেই সংঘর্ষ কবলিত বলে জানা গিয়েছে। একাধিক সরকারি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমের অফিসে হামলা হয়েছে।
এই অবস্থায় বাংলাদেশে আটকে পড়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ভারতীয়। তাঁদের অনেকেই ছাত্রছাত্রী। শুক্রবার তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩০০ জন দেশে ফিরেছেন। তাঁরা ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের স্থলপথে দেশে ফিরেছেন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও তাঁরা উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এইদলে নেপাল ও ভূটানের কয়েকজন ছিলেন। সবার পরিচয় পত্র দেখে আগরতলার আখাউরা এবং মেঘালয়ের দাওকি দিয়ে দেসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
হিংসার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গণ পরিবহন-সহ প্রায় সবকিছ বন্ধ থাকায় ভারতীয় দূতাবাস থেকে সড়কপথে আগরতলা যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে দেশে ফেরা ফেরা অনেকেই।
We hate spam as much as you do