হার্ভার্ডের এক মুখপাত্র বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় নোয়েমের চিঠি সম্পর্কে অবগত। চিঠিতে অনুদান বাতিল এবং বিদেশি ছাত্র ভিসার বিষয়ে তদন্তের কথা বলা হয়েছে। মুখপাত্র আরও বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় আগের সপ্তাহের বিবৃতিতে অনড়। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, হার্ভার্ড ‘তাদের স্বাধীনতা বা সাংবিধানিক অধিকার ত্যাগ করবে না’, তবে আইন মেনে চলবে।
ট্রাম্পের আক্রোশে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি বললেন বামপন্থী আখড়া শিক্ষার জন্য অনুপযুক্ত
১৭ এপ্রিল ২০২৫
সরকারি নির্দেশনা না মেনে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মেধার উৎস খ্যাতিমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ২২০ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য বন্ধ করেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। বিশ্বজুড়ে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই আরও একধাপ এগিয়ে হার্ভার্ডকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন বাতিল করা হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটাই হার্ভার্ডের ওপর সর্বশেষ কঠোর পদক্ষেপ।
আমেরিকার স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ (ডিএইচএস) এর সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়াম বুধবার জানান, হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে দুইটি ফেডারেল অনুদান বাতিল করা হয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ২৭ লাখ ডলার।
এক বিবৃতিতে নোয়াম জানান, হার্ভার্ডে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের ‘অবৈধ ও সহিংস কার্যক্রম’ সংক্রান্ত তথ্য ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দিতে হবে। যদি হার্ভার্ড তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতার প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণরূপে মেনে চলছে কি না, তা প্রমাণ করতে না পারে, তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ হারাবে।
এই পদক্ষেপ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প সরকারের সর্বশেষ কঠোরতা। এর আগে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বুধবার হার্ভার্ডের ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের দুটি অনুদান বাতিল করেছেন। নোয়েম বলেছেন, তিনি হার্ভার্ডকে চিঠি লিখেছেন।
হার্ভার্ডের এক মুখপাত্র বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় নোয়েমের চিঠি সম্পর্কে অবগত। চিঠিতে অনুদান বাতিল এবং বিদেশি ছাত্র ভিসার বিষয়ে তদন্তের কথা বলা হয়েছে। মুখপাত্র আরও বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় আগের সপ্তাহের বিবৃতিতে অনড়। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, হার্ভার্ড ‘তাদের স্বাধীনতা বা সাংবিধানিক অধিকার ত্যাগ করবে না’, তবে আইন মেনে চলবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ সামরিক হামলার পর ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফেডারেল তহবিল ছেঁটে ফেলার হুমকি দিয়েছে। হামাসের মারাত্মক হামলার পর এ ঘটনা ঘটে। এবার আরও কঠোর হতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান আরও কঠোর করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রশাসন পরিচালনার পদ্ধতিতে পরিবর্তন না আনলে হার্ভার্ডের কর মওকুফের সুবিধা বাতিল করা হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টি যে করছাড় সুবিধা পেয়ে আসছে তাও বন্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে বলেন, এটা বামপন্থীদের আখড়া, জায়গাটা হাস্যকর। শিক্ষার জন্য উপযুক্ত জায়গা নয়।
ট্রাম্প বলেন, ‘সবাই জানে হার্ভার্ড পথ হারিয়েছে।’ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর বামপন্থীদের প্রভাব নিয়ে সোচ্চার হন রিপাবলিকানপন্থি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘হার্ভার্ড সবসময় উগ্র বামপন্থী, বোকা এবং পাখির মস্তিষ্ক লোকেদের নিয়োগ করেছে। যারা ছাত্রদের এবং তথাকথিত ভবিষ্যতের নেতাদের কেবল ব্যর্থতার শিক্ষা দিয়েছে। সেই বামপন্থী মাদকাসক্তরা আবার হার্ভার্ডে শিক্ষকতা করছেন। সেই কারণেই হার্ভার্ডকে আর শিক্ষার জন্য ভালো জায়গা বলা যায় না। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোর মধ্যেও পড়ে না।
এখানেই না থেমে ট্রাম্প বলেন, ‘হার্ভার্ডে ঘৃণা এবং বোকামি শেখানো হয়। কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্যের যোগ্য নয়’।
We hate spam as much as you do